৪৭তম বিসিএস প্রস্তুতি যেভাবে শুরু করবেন

আপনি কি জানেন বাংলাদেশের কোন পরীক্ষায় সব থেকে বেশি পরীক্ষার্থী অনুত্তীর্ণ হয় বা ফেল করে? না, এটা কিন্তু এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষা নয়। তাহলে? এই পরীক্ষাটি হচ্ছে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। হ্যাঁ সম্মানিত পাঠক, সঠিক বিসিএস প্রস্তুতি না থাকায় প্রিলি পরীক্ষাতে অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৯০% থেকে ৯৫% কিন্তু বিসিএস লিখিত পরীক্ষার জন্য উত্তীর্ণ হতে পারেন না।

এগিয়ে আসছে আরেকটি বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। একটি সঠিক বিসিএস প্রস্তুতি গাইডলাইনের অভাবে এবারও অসংখ্য পরীক্ষার্থী তাদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন না। আপনি যদি ওই স্বপ্নভঙ্গদের দলে না থেকে উত্তীর্ণদের দলে আপনার নামটি দেখতে চান তাহলে বিসিএস প্রস্তুতির এই পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইনটি আপনার জন্যই। কারন আমরা আপনাকে বলে দেবো বিসিএস প্রস্তুতি কোথা থেকে শুরু করবেন, কিভাবে শুরু করবেন তার সবই।

বিসিএস প্রস্তুতি যেভাবে শুরু করবেন

বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় মোট অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্য থেকে মাত্র ৫% থেকে ১০% প্রার্থীকে পাস করানো হয়। তাই এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে নিতে হবে একটি গোছানো ও যথাযথ প্রস্তুতি। আসুন জেনে নেই কীভাবে এই প্রস্তুতি নেয়া যায় সে বিষয়ে।

১। সর্বপ্রথম পিএসসি বিসিএস পরীক্ষার প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার সিলেবাসটি ভালো ভাবে আত্মস্থ করুন।

২। বিসিএস জব সল্যুশন / প্রশ্ন ব্যাংক থেকে বিগত সালের বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নগুলো দেখুন।

৩। যেসব বিষয়ভিত্তিক টপিকে আপনার দুর্বলতা আছে এবং যেসব বিষয়ভিত্তিক টপিকে আপনার বিশেষ দক্ষতা আছে সেগুলো চিহ্নিত করুন।

৪। কোন টপিকগুলো পড়তে হবে তা জানার পাশাপাশি কোন টপিকগুলো বাদ দিতে হবে এই সম্পর্কে জানুন।

৪। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টপিক গুলো আত্মস্থ করার জন্য একটি লিখিত রুটিন প্রস্তুত করুন।

৫। বিসিএস প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় বুকলিস্ট তৈরি করুন।

৬। ইংরেজি ও গণিত অংশে বিষদ প্রস্তুতি নিন।

৭। পড়ার পাশাপাশি নিজের প্রস্তুতিকে যাচাই করার জন্য বেশি বেশি মডেল টেস্ট পরীক্ষা দিন।

৮। কার্যকরী কৌশলী উপায় অবলম্বন করুন, শর্টকাট পরিহার করুন।

৯। একটি স্মার্ট রিভিশন সার্কেল অনুসরণ করুন, পুর্বে পঠিত বিষয়গুলোকে এই সার্কেলের মাধ্যমে বার বার রিভিশন দিন।

১০। একই লক্ষ্যে অবিচল পরিশ্রমী ও সমমনা পরীক্ষারর্থীদের সাথে স্টাডি গ্রুপ গঠন করে প্রসস্পরের সহযোগিতায় সমন্বিত ভাবে প্রস্তুতি নিন।

অনার্স থেকে বিসিএস প্রস্তুতি

আপনার ক্যারিয়ারের একমাত্র লক্ষ্য যদি বিসিএস ক্যাডার প্রাপ্তি হয়ে থাকে তাহলে প্রস্তুতি শুরু করতে হবে ছাত্র জীবন থেকেই। বাংলাদেশের গতানুগতিক শিক্ষা ব্যাবস্থায় সেশন জট ও নানাবিধ জটিলতার কারনে অধিকাংশ স্বায়ত্তশাসিত ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনার্স বা সমমান পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ করতে একজন শিক্ষার্থীর স্বাভাবিকের চেয়েও অনেক বেশি সময় লাগে। যার ফলে দেখা যায় যে শিক্ষা জীবনের স্নাতক বা সমপর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীর হাতে সবচেয়ে বেশি সময় থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধিকাংশ বিষয়ের ক্ষেত্রে স্নাতক পর্যায়ে প্রথম শ্রেণীর ফলাফল (CGPA – 3.00) ধরে রাখার জন্য খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয় না। তাই অনার্সে অধ্যয়নরত একজন শিক্ষার্থীর বিসিএস প্রস্তুতি নেওয়ার উপযুক্ত সময় বলে বিবেচনা করা হয়। এই সময়টায় একজন শিক্ষার্থী যদি একটু একটু করে তাঁর বিসিএস ক্যাডার প্রাপ্তিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যায় তাহলে এটা তাঁর জন্য সবচেয়ে বেশি সহজ হয়ে যায়।

কারন শিক্ষাজীবন শেষ করে যদি কেউ বিসিএস এর প্রস্তুতি শুরু করে তাঁদের জীবনে নানাবিধ প্রতিকূলতা দেখা যায়। সমাজ ও পরিবার থেকে দ্রুত কর্মজীবনে প্রবেশের তাগিদ, আর্থিক স্বাধীনতার অভাব, মানসিক বিপর্যয় ও হীনমন্যতা সহ নানাবিধ প্রতিকূলতার জন্য শিক্ষাজীবন শেষ করা একজন প্রার্থীর বিসিএস প্রস্তুতি অনেক বাধাগ্রস্থ হয়। অপর দিকে অনার্সে অধ্যয়নরত একজন শিক্ষার্থীর পারিপার্শ্বিক পরিস্থিত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাঁর অনুকূলে থাকে, বিধায় অনার্স জীবন থেকে বিসিএস প্রস্ততি শুরু করা প্রার্থীরা এই ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে।

এছাড়াও মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক এর পড়াশোনার সময়কাল এর সাথে বেশি সময়ের পার্থক্য না থাকায় অনার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা বিসিএস প্রস্তুতি শুরু করার সময় মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে পড়া বিষয়গুলো বেশি মনে থাকার কারনে বিসিএস প্রস্তুতিতে একটু সুবিধা পেয়ে থাকেন।

বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনের যোগ্যতা

আপনি চার বছরের অনার্স পাস হলেই জেনারেল ক্যাডারে আবেদন করতে পারবেন। তবে আপনি যদি তিন বছরের পাস কোর্সে পড়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই মাস্টার্স পাস হতে হবে। এছাড়া আপনার অনার্স বা পাস কোর্সের পর মাস্টার্স পরীক্ষা সদ্যই শেষ হয়ে থাকে তাহলে আপনি অ্যাপিয়ার্ড সার্টিফিকেট দিয়েও বিসিএস পরীক্ষার আবেদন করতে পারেন।

টেকনিক্যাল ক্যাডারে আবেদন করতে হলে আপনার নির্দিষ্ট বিষয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতেই হবে। যেমন, এমবিবিএস ডিগ্রি না থাকলে আপনি ডাক্তার হিসাবে সরকারি চাকুরি করতে পারবেন না। এছাড়া অন্যান্য যোগ্যতা বিপিএসসির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে নির্ধারিত হয়ে থাকে।

বিসিএস-এ আবেদন প্রক্রিয়া

বিসিএস পরীক্ষায় আবেদন প্রক্রিয়া পুরোপুরিভাবে অনলাইনভিত্তিক। তাই এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণে আগ্রহী হলে আপনাকে অবশ্যই (bpsc.teletalk.com.bd) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এই সাইটে গিয়ে প্রথমে ৪৭তম বিসিএসের অনলাইন আবেদন অংশে ক্লিক করলে ৩টি অপশন দেখতে পাবেন। এই অপশন ৩টি হচ্ছে,

      • সাধারণ ক্যাডার।

      • উভয় ক্যাডার (সাধারণ ও কারিগরি ক্যাডার)। এবং

      • কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার।

    যদি আপনার স্নাতক পর্যায়ে পঠিত বিষয়ে কোন কারিগরি পদ দেখতে না পান, তাহলে সাধারণ ক্যাডার অপশনটি বেছে নিন। আর যদি আপনার পঠিত বিষয়ে কারিগরি পদ থাকে, তাহলে আপনার আগ্রহের ভিত্তিতে উভয় ক্যাডার অথবা শুধু কারিগরি ক্যাডার অপশনের বাটনে ক্লিক করুন। এবার আপনি বিপিএসসি ফরম-১ দেখতে পাবেন। এই বিপিএসসি ফরম-১ অংশে নিচের ৩টি অংশ দেখতে পাবেন।

    ১। ব্যক্তিগত তথ্য।

    ২। শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য। এবং

    ৩। ক্যাডার চয়েজ-সংক্রান্ত তথ্য।

    এবার আপনাকে একে একে এই ৩টি অংশই পূরণ করতে হবে। সব তথ্য পূরণ করা হয়ে গেলে ভালো ভাবে দেখে নিয়ে সব তথ্য সঠিক দেয়া হয়েছে মর্মে প্রত্যয়ন দিয়ে আপনাকে পরবর্তী বাটন ক্লিক করতে হবে। পরবর্তী বাটনে পাবেন,

    বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট

    এই অংশে আপনাকে ক্যাডার তালিকা থেকে নিজের পছন্দ অনুযায়ী তালিকা ঠিক করতে হবে। ক্যাডার তালিকায় থাকা সব ক্যাডার পদই নবম গ্রেডের। কিন্তু প্রতিটি ক্যাডারের কাজের পরিধি আলাদা। আবেদনের সময় আপনার যে যে ক্যাডার পছন্দ সেসমূহ একে একে তালিকায় উল্লেখ করবেন। পরবর্তী সময়ে এই ক্যাডার লিস্ট পরিবর্তনের কোন সুযোগ থাকবে না। তাই আপনাকে অবশ্যই আপনার ব্যক্তিত্ব, পড়াশোনা, পরিবারের পছন্দ এবং ভালো লাগাকে প্রাধান্য দিয়ে ক্যাডার লিস্ট চয়েস করতে হবে।

    যেভাবে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাবেন জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন।

    ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানো হয়ে গেলে আপনাকে পরের পেজে যেতে হবে। সেখানে আপনি সম্পূর্ণ আবেদনপত্রটি রিভিউ করার সুযোগ পাবেন। এই পর্যায়ে পুরো আবেদন ফরমটি ধৈর্য ধরে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়বেন এবং কোনো ভুল হয়ে থাকলে তা সংশোধন করে নেবেন। কারণ আবেদনে কোন ভুল হলে এই ধাপের পর সেটি আর সংশোধন করার সুযোগ পাবেন না। আবেদনপত্র রিভিউ করা হয়ে গেলে আপনাকে যথাযথভাবে ভ্যালিডেশন কোড, নিজের ছবি এবং স্বাক্ষর আপলোড করতে হবে। সব ঘর সঠিকভাবে পূরণ করার পর সাবমিট বাটনে ক্লিক করে আবেদনপত্রটি সাবমিট করবেন। নির্ভুলভাবে আবেদনপত্র সাবমিট হয়ে গেলে আপনার ইউজার আইডি, ছবি এবং স্বাক্ষর সম্বলিত একটি অ্যাপ্লিকেন্টস কপি পাবেন। এই অ্যাপ্লিকেন্টস কপিটি আপনাকে প্রিন্ট অথবা ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করতে হবে। অ্যাপ্লিকেন্টস কপিতে যে ইউজার আইডি দেয়া থাকবে সেটি ব্যবহার করে শুধুমাত্র কোন টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল নম্বর থেকে খুদে বার্তার মাধ্যমে পরীক্ষার ফি বাবদ ৭০০ টাকা (ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী এবং তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীদের জন্য ১০০ টাকা) আপনাকে জমা দিতে হবে। এরপর প্রাপ্ত প্রবেশপত্রটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নেবেন।

    বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতি

    বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতি

    বিসিএস পরীক্ষা সাধারণত ৩ টি ধাপে হয়ে থাকে। প্রথমটি প্রিলিমিনারি, দ্বিতীয়টি লিখিত এবং তৃতীয় এবং সর্বশেষ ধাপটি হচ্ছে মৌখিক বা ভাইভা পরীক্ষা। এই ৩ টি ধাপের পরীক্ষাগুলোতে প্রার্থীদের যেভাবে যাচাই বাছাই করা হয়ে থাকে তা সহজ ভাষায় আপনাদের কাছে তুলে ধরা হল –

    • প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় যাচাই করা হয় আপনি জানেন কিনা।
    • লিখিত পরীক্ষায় যাচাই করা হয় আপনি যা জানেন তা বুঝেন কিনা।
    • মৌখিক বা ভাইবা পরীক্ষায় যাচাই করা হয় আপনি যা জানেন ও বুঝেন তা অন্যকে বুঝাতে পারেন কিনা।

    ১ম ধাপ (প্রিলিমিনারি পরীক্ষা)

    এই ধাপে প্রাথমিক বা প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০০ নম্বরের এই পরীক্ষাতে মোট ১০টি বিষয় থেকে নৈর্বক্তিক (MCQ) আকারে প্রশ্ন থাকে। এই প্রশ্নসমূহের উত্তর দেবার জন্য একজন পরীক্ষার্থী মোট ২ ঘন্টা সময় পান। প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য পরীক্ষার্থী ১ নম্বর পান। এর পাশাপাশি প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.৫ (অর্ধেক) নম্বর করে কাটাও হয়ে থাকে। এই পরীক্ষার মাধ্যমে শুধুমাত্র লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রার্থী বাছাই করা হয়। জেনে রাখা ভালো যে, প্রিলিমিনারি পরীক্ষার নম্বর মূল পরীক্ষার নম্বরের সাথে যোগ করা হয় না, এবং মোট অংশ্রগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে মেধা তালিকার শীর্ষে থাকা মাত্র ৫% থেকে ১০% পরীক্ষার্থীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য উত্তীর্ণ করা হয়ে থাকে।

    ২য় ধাপ (লিখিত পরীক্ষা)

    এই ধাপে প্রিলিমিনারি পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের লিখিত (Written) পরীক্ষা নেয়া হয়। মোট ৯০০ নম্বরের এই পরীক্ষাটি পরীক্ষার্থীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের সাথে মৌখিক (Interview) পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর যোগ করেই চূড়ান্ত নিয়োগের বিষয়টি নির্ধারিত হয়ে থাকে। লিখিত পরীক্ষায় গড় পাস নম্বর ৫০%। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদেরকেই মৌখিক পরীক্ষাতে (Interview) ডাকা হয়।

    ৩য় ধাপ (ভাইভা/মৌখিক পরীক্ষা)

    এই ধাপে অনুষ্ঠিত হয় মৌখিক পরীক্ষা (Interview), যা ভাইভা নামেই বেশি পরিচিত। মোট ২০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়ে থাকে। এখানেও পাশ নম্বর ৫০%। মৌখিক পরীক্ষার জন্য ভাইভা বোর্ড গঠিত হয় একজন চেয়ারম্যান এবং একজন বোর্ড সদস্য দ্বারা। এই পরীক্ষার নির্দিষ্ট কোন সিলেবাস থাকে না। সাধারণত একাডমিক পড়াশুনা, দেশ, সমাজ, রাজনীতি, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি এবং প্রার্থীর ক্যাডার চয়েস লিস্ট নিয়ে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে।

    লিখিত পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষার মোট নম্বর অর্থাৎ ৯০০ + ২০০ = ১১০০ নম্বরের মধ্য থেকে মেধা তালিকা তৈরি করে বিপিএসসি বিসিএস ক্যাডার হিসাবে নিয়োগ দেয়ার সুপারিশ করে। বিপিএসসির সুপারিশ অনুযায়ী জন প্রশাসন মন্ত্রণালয় BCS ক্যাডারদের চূড়ান্ত নিয়োগ দিয়ে থাকে। তবে তার আগে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রত্যেক প্রার্থীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং এনএসআই (জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা) দ্বারা ভেরিফিকেশন করা হয়। এই ধাপসমূহে উত্তীর্ণ হতে পারলেই কেবল উত্তীর্ণ প্রার্থীরা গেজেটভুক্ত ক্যাডার হতে পারেন।

    লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষা দুটির ক্ষেত্রে একটি বিষয় খুবই জরুরি ভাবে মনে রাখা দরকার। আর সেটি হচ্ছে, এই পরীক্ষা দুটিতে যতো বেশি নম্বর পাওয়া যায় ততোই নিজের পছন্দানুসারে ক্যাডার পাবার সম্ভাবনা বাড়ে। এ কারণে এই পরীক্ষাসমূহে অংশগ্রহণের আগে বিসিএস সিলেবাস এবং মানবন্টন খুবই ভালো ভাবে জেনে নিয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

    ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি সিলেবাস

    বিসিএস প্রিলিমিনারি তথা বিসিএস পরীক্ষার সিলেবাস প্রনয়ণ করে থাকে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা বিপিএসসি (যেটি বহুলভাবে পিএসসি নামে পরিচিত)। এই সিলেবাসে বাংলা (ভাষা ও সাহিত্য), ইংরেজি (ব্যাকরণ ও সাহিত্য), গণিত, মানসিক দক্ষতা, সাধারণ বিজ্ঞান, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি, সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলি, সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন- এই মোট ১০টি বিষয় আছে।

    এই ১০টি বিষয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষায় যেভাবে মানবন্টন করা হয় সেটি নিম্নরূপ,

    ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার মানবন্টন

    বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার মানবন্টন

    বলা বাহুল্য যে, ৪৭ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি সিলেবাসও এই একই থাকবে।

    বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস

    সাধারণ ক্যাডার এবং প্রফেশনাল ক্যাডারের জন্য লিখিত পরীক্ষার সিলেবাসে বেশ অনেকটা মিল থাকলেও কিছু অমিল আছে। আসুন তাহলে দেখা যায় কী সেই মিল ও অমিলসমূহ।

    সাধারণ ক্যাডারের জন্য বিসিএস রিটেন পরীক্ষার সিলেবাস অনুসারে মানবন্টন

    বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৪ অনুসারে মোট ৯টি বাধ্যতামূলক বিষয়ের উপর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়সমূহ হচ্ছে,

    ১। সাধারণ বাংলা (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র)- মোট ২টি বিষয়ের জন্য ২০০ নম্বর।

    ২। সাধারণ ইংরেজি (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র)- মোট ২টি বিষয়ের জন্য ২০০ নম্বর।

    ৩। বাংলাদেশ বিষয়াবলি (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র)- মোট ২টি বিষয়ের জন্য ২০০ নম্বর।

    ৪। আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি- ১টি বিষয়ের জন্য ১০০ নম্বর।

    ৫। গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা- ১টি বিষয়ের জন্য ১০০ নম্বর।

    ৬। সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি- ১টি বিষয়ের জন্য ১০০ নম্বর।

    টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল ক্যাডারের জন্য বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস ও মানবন্টন

    ১। সাধারণ বাংলা- ১টি বিষয়ের জন্য ১০০ নম্বর।

    ২। সাধারণ ইংরেজি (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র)- মোট ২টি বিষয়ের জন্য ২০০ নম্বর।

    ৩। বাংলাদেশ বিষয়াবলি (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র)- মোট ২টি বিষয়ের জন্য ২০০ নম্বর।

    ৪। আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি- ১টি বিষয়ের জন্য ১০০ নম্বর।

    ৫। গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা- ১টি বিষয়ের জন্য ১০০ নম্বর।

    ৬। দুটি পোস্ট সম্পর্কিত বিষয়- মোট ২টি বিষয়ের জন্য ২০০ নম্বর।

    বিসিএস লিখিত পরীক্ষার মানবন্টন অনুসারে সাধারণ ক্যাডারে সাধারণ বাংলা (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র)- মোট ২টি বিষয়ের জন্য ২০০ নম্বর বরাদ্দ থাকলেও প্রফেশনাল ক্যাডারে সাধারণ বাংলা- ১টি বিষয়ের জন্য ১০০ নম্বর বরাদ্দ আছে। এছাড়া সাধারণ ক্যাডারে সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়টি থাকলেও প্রফেশনাল ক্যাডারে সেটি নেই। একই ভাবে প্রফেশনাল ক্যাডারে দুটি পোস্ট সম্পর্কিত বিষয়টি থাকলেও সাধারণ ক্যাডারে এটি নেই। এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, কোন পরীক্ষার্থী যদি জেনারেল এবং প্রফেশনাল দুটি ক্যাডারেই আবেদন করেন তাহলে তাকে নয়টি আবশ্যিক বিষয় এবং দুইটি পদ সম্পর্কিত বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে।

    ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতির জন্য করনীয়

    আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতির জন্য কিছু করণীয়।

    বিসিএস বাংলা ভাষা ও সাহিত্য প্রস্তুতি

    বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে প্রিলিতে মোট ৩৫টি প্রশ্ন থাকে। দুটি বিষয়ে ভাগ করে এই নম্বর বরাদ্দ করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ভাষা অংশ এবং অন্যটি সাহিত্য অংশ। ভাষা অংশের জন্য ১৫ নম্বর বরাদ্দ আছে ১৫টি প্রশ্নের বিপরীতে। অন্যদিকে সাহিত্য অংশে প্রাচীন ও মধ্যযুগের সাহিত্য বিষয়ে ৫ নম্বর এবং আধুনিক যুগের (১৮০০ সন থেকে বর্তমান পর্যন্ত) সাহিত্য বিষয়ে ১৫ নম্বর বরাদ্দ থাকে।

    বিসিএস বাংলা ভাষা (ব্যাকরণ) অংশের প্রস্তুতি

    এই অংশে ভালো করতে হলে আপনাকে যে টপিকসমূহ খুবই মনোযোগের সাথে পড়তে হবে সেই টপিকসমূহ হচ্ছে, ধ্বনি, শব্দ, বাক্য, বানান এবং বাক্য শুদ্ধি, সমার্থক শব্দ, বিপরীত শব্দ, প্রত্যয়, পরিভাষা, সমাস, বাগধারা, এককথায় প্রকাশ ইত্যাদি।

    বিগত বিসিএসসমূহে বাংলা ভাষার কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

    বিগত বিসিএসসমূহে বাংলা ভাষার কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

    বিসিএস বাংলা ভাষা (সাহিত্য) অংশের প্রস্তুতি

    বাংলা সাহিত্য অংশে ভালো করতে হলে আপনাকে গুরুত্ব সহকারে বাংলা সাহিত্যের যুগভিত্তিক পড়াশোনা করতে হবে।

    প্রাচীন ও মধ্যযুগঃ

    এই যুুগের মধ্যে আছে মূলত চর্যাপদ। তাই একথা বলে দেয়া যায় যে, বিসিএস প্রিলিতে এই বিষয়ে প্রশ্ন আসবেই। মধ্যযুগের ক্ষেত্রেও টপিক খুব বেশি নেই। প্রাচীন যুগের চর্যাপদের পাশাপশি মধ্যযুগের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন, মনসা মঙ্গল কাব্য, খনার বচন, মৈথিলি কাব্য, ইউসুফ-জোলেখা ইত্যাদি টপিকসমূহ ভালো মতো পড়লে খুব সহজেই এই অংশের জন্য বরাদ্দ থাকা ০৫ নম্বর সহজেই পেতে পারেন।

    আধুনিক যুগঃ

    প্রাচীন ও মধ্যযুগের তুলনায় আধুনিক যুগের ব্যপ্তি বেশ অনেকটাই বড়। সাধারণত বাংলা সাহিত্যের শিক্ষার্থীরা এই অংশে তুলনামূলকভাবে বেশি ভালো করে থাকে। তবে আপনি বাংলা সাহিত্যের ছাত্র না হলেও কয়েকজন বিশেষ সাহিত্যিকর সাহিত্য ভালো ভাবে পড়লে এই অংশে অন্তত ৮০% থেকে ৮৫% নম্বর পেতে পারেন। এই সাহিত্যিকগণ হচ্ছেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জসীম উদদীন, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মীর মশাররফ হোসেন, দীনবন্ধু মিত্র, বেগম রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসেন, কায়কোবাদ, ফররুখ আহমদ, জীবনানন্দ দাশ, বিষ্ণু দে, অমিয় চক্রবর্তী, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত এবং বুদ্ধদেব বসু।

    উল্লেখ্য, জীবনানন্দ দাশ, বিষ্ণু দে, অমিয় চক্রবর্তী, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত এবং বুদ্ধদেব বসুকে একত্রে বাংলা সাহিত্যের পঞ্চপাণ্ডব বলা হয়ে থাকে।

    বিগত বিসিএসসমূহে বাংলা সাহিত্যের কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

    বিগত বিসিএসসমূহে বাংলা সাহিত্যের কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

    বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে ভালো করার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত টিপস

      ১। বিগত বছরের প্রশ্নসমূহ সমাধান বা জব সল্যুশন অবশ্যই করতে হবে। এতে করে প্রশ্নপত্রের প্যাটার্ন সম্পর্কে ধারণা গড়ে উঠবে।

      ২। ধ্বনি, শব্দ, বাক্য, বানান ও বাক্য শুদ্ধি, প্রত্যয়, পরিভাষা, বিপরীত শব্দ, সমার্থক শব্দ, সমাস, এক কথায় প্রকাশের মতো টপিকের পাশাপাশি সিলেবাসে না থাকলেও কিছু কমন টপিক পড়া জরুরি। যেমন, বাগধারা।

      ৩। আধুনিক যুগের উপর বেশি জোর দিতে হবে। কারণ এই অংশে প্রাচীন যুগের অংশ থেকে বেশি নম্বর বরাদ্দ থাকে।

      ৪। ৯ম-১০ম শ্রেণীর NCTB প্রকাশিত বাংলা ব্যাকরণ বোর্ড বই অবশ্যই পড়তে হবে। নতুন ভার্সনের বইসমূহ থেকে পুরাতন ভার্সনের বইয়ে তথ্য বেশি আছে বিধায় পুরনো ভার্সন পড়লে সুবিধা হবে। তবে সাম্প্রতিক তথ্যের ক্ষেত্রে কোন বিভ্রান্তি থাকলে নতুন ভার্সন অনুসরণ করে উত্তর দিতে হবে।

      ৫। বাংলা সাহিত্য প্রাচীন অংশের জন্য হুমায়ূন আজাদ সাহেবের লেখা লাল নীল দীপাবলি বইটা পড়লে ভালো হবে। এই বইটা থেকে প্রতি বছরই কয়েকটি প্রশ্ন এসে থাকে।

      ৬। বাংলা সাহিত্য আধুনিক অংশের জন্য বাংলাপিডিয়ার পাশাপাশি Live MCQ প্রদত্ত পিডিএফসমূহ থেকেও পড়াশোনা করলে উপকৃত হবেন।

      ৭। যাই পড়বেন সেটাকে শুধুমাত্র প্রিলির জন্য না পড়ে লিখিত এবং ভাইবার কথা মাথায় রেখে পড়বার চেষ্টা করবেন। অর্থ্যাৎ যেকোনো টপিক ডিপ লারনিং বা গভীরভাবে জানার ও শেখার চেষ্টা করতে হবে।

      বাংলা সাহিত্যের বিকাশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে এমন বাংলা পত্রিকা ও সম্পাদক এবং মুক্তিযুদ্ধভাষা আন্দোলনের উপর ভিত্তি করে লেখা সাহিত্যকর্ম থেকে বিসিএস প্রিলিতে প্রায় নিয়মিতই প্রশ্ন এসে থাকে। তাই এসব বিষয়ে ফোকাস করা জরুরি।

      বিসিএস ইংরেজি ব্যাকরণ ও সাহিত্য প্রস্তুতি

      বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের মতো ইংরেজী ব্যাকরণ ও সাহিত্য বিষয়েও মোট ৩৫ নম্বর বরাদ্দ থাকে। এর মধ্যে ইংরেজি ভাষা বিষয়ে ২০ নম্বর এবং ইংরেজি সাহিত্য বিষয়ে ১৫ নম্বর থাকে।

      আসুন তাহলে দেখে নেয়া যাক ইংরেজি ব্যাকরণ ও সাহিত্য বিষয়ে ভালো করতে হলে কোন কোন টপিকসমূহ গুরুত্ব সহকারে পড়তে হবে।

      বিসিএস ইংরেজি ব্যাকরণ প্রস্তুতি

      ইংরেজি ব্যাকরণ অংশের কমন টপিকসমূহ হচ্ছে, Parts of speech, The Verb, Idioms & Phrases, Clauses, Corrections, Sentences & Transformations, Words এবং Composition।

      বিগত বিসিএসসমূহে ইংরেজি ভাষার (ব্যাকরণ) কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      বিগত বিসিএসসমূহে ইংরেজি ভাষার (ব্যাকরণ) কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      বিসিএস ইংরেজি সাহিত্য প্রস্তুতি

      ইংরেজি সাহিত্য অংশে Names of writers of literary pieces from Elizabethan period to the 21st Century এবং Quotations from drama/poetry of different ages বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। তাই কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিকের সাহিত্য নিয়ে গভীরভাবে পড়ালেখা করলে চূড়ান্ত পরীক্ষায় বেশ অনেকগুলো প্রশ্ন কমন পাওয়া যেতে পারে। এই সাহিত্যিকগণ হচ্ছেন, William Shakespeare, William Wordsworth, John Milton, John Keats, S. T. Coleridge, W. S. Maugham, Charles Dickens, Robert Browning, Ernest Hemingway, Jonathan Swift, P. B. Shelley, Edmund Spencer, O’ Henry, Bertrand Russell, Jane Austen, H. G. Wells, G. B. Shaw, Alfred Tennyson, William Blake, W. B. Yeats, T. S. Eliot, E. M. Foster এবং Sir Walter Scott।

      বিগত বিসিএসসমূহে ইংরেজি সাহিত্যের কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      বিগত বিসিএসসমূহে ইংরেজি সাহিত্যের কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে ভালো করার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত টিপস

      ১। ইংরেজি ভোকাবুলারির চর্চা করতে হবে প্রতিদিনই। অল্প অল্প করে প্রতিদিনই কিছু না কিছু শিখলে নতুন নতুন শব্দের ভাণ্ডার বাড়বে।

      ২। ভোকাবুলারি পড়বার সময় শুধু শব্দটি না শিখে সেটিকে কীভাবে কোন বাক্যে ব্যবহার করা যায় সেই চেষ্টাও করতে হবে। এতে করে শব্দটি মনে রাখা সহজ হবে।

      ৩। Noun, Adjective, Verb, preposition, Number, Voice, Spelling, Phrase, Synonym-antonym টপিকসমূহ থেকে প্রায় প্রতি প্রিলিতেই অন্তত ১ থেকে ৩টি প্রশ্ন এসে থাকে। তাই এসব টপিক মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

      ৪। ইংরেজি ভাষার ক্ষেত্রে খুব সাধারণ কিছু ভুল আমরা করে থাকি। এই ভুলসমূহ যেন না হয় সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে।

      ৫। বানান ভুল একদমই করা যাবে না।

      ৬। বিগত বছরের প্রশ্নসমূহ সমাধান বা জব সল্যুশন করা খুবই জরুরি। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র বিসিএস জব্য সল্যুশন না করে ব্যাংক সহ অন্যান চাকরির প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাধান করতে পারলে বেশি উপকৃত হবেন।

      ৭। ইংরেজি সাহিত্যের বিভিন্ন যুগ বা টাইমলাইন, সাহিত্যিক টার্মস, গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ও উক্তি ভালো করে পড়তে হবে।

      ৮। প্রতিদিন অন্তত একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠা, শেষ পৃষ্ঠা, আন্তর্জাতিক সংবাদের পৃষ্ঠা এবং সম্পাদকীয় কলামসমূহ পড়তে হবে।

      ৯। সাহিত্য অংশে ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষার্থীরা বেশি ভালো করে থাকেন। আপনি যদি ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষার্থী না হয়ে থাকেন তাহলে সাহিত্য অংশের থেকে গ্রামার অংশে বেশি জোর দিতে পারেন।

      বিসিএস বাংলাদেশ বিষয়াবলি প্রস্তুতি

      বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে সাধারণ জ্ঞানের বাংলাদেশ বিষয়াবলি অংশে মোট ৩০টি প্রশ্ন করা হয় এবং এর জন্য ৩০ নম্বর বরাদ্দ থাকে। এর মধ্যে বাংলাদেশের জাতীয় বিষয়বলির জন্য থাকে ০৬ নম্বর এবং বাংলাদেশের কৃষিজ সম্পদ, বাংলাদেশের অর্থনীতি, বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্য, বাংলাদেশের সংবিধান, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা, বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থা বিষয়ের প্রতিটি টপিকের জন্য ০৩ নম্বর করে বরাদ্দ আছে। এছাড়া সাম্প্রতিক কিছু বিষয় যেমন, বাংলাদেশের জাতীয় অর্জন, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনাসমূহ, জাতীয় পুরস্কার, খেলাধুলা, চলচ্চিত্র ও গণমাধ্যম সংক্রান্ত বিষয়সমূহ মিলিয়ে মোট ০৩টি প্রশ্নের বিপরীতে ০৩ নম্বর বরাদ্দ থাকে।

      বিগত বিসিএসসমূহে বাংলাদেশ বিষয়াবলির কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      বিসিএস প্রস্তুতি বাংলাদেশ বিষয়াবলি

      বাংলাদেশ বিষয়াবলি বিষয়ে ভালো করার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত টিপস

      ১। বাংলাদেশ বিষয়াবলির প্রতিটা সেগমেন্ট বা টপিক ভালো করে পড়তে হবে।

      ২। জব সল্যুশন বা বিগত বছরের প্রশ্নসমূহ সমাধান করা খুবই জরুরি। বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে মোট ৩০টা প্রশ্নের মধ্য থেকে অধিকাংশ সময় অন্তত ২০-২২টা প্রশ্ন বিগত বছরের টপিকসমূহ থেকে করা হয়।

      ৩। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান ও অর্থনীতি বিষয়সিমূহ থেকে প্রতি বছরই প্রশ্ন এসে থাকে। তাই এই বিষয়সমূহে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।

      ৪। বাংলাদেশের কৃষি ও অর্থনীতি বিষয়ে সাধারণত সম-সাময়িক বিষয়ে প্রশ্ন আসে। তাই সাম্প্রতিক তথ্যের উপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

      ৫। প্রতি বিসিএসেই উপজাতি সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন এসে থাকে। তাই উপজাতিসমূহের বসবাস, উৎসব, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য টপিকসমূহ মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

      ৬। বাংলাদেশের সংবিধান বিষয়টি শুধু প্রিলিমিনারিই নয় বরং লিখিত ও ভাইবার জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাজারের কমন রেফারেন্স বই থেকে এই বিষয়ে পড়াশোনা না করাই ভালো। এই বিষয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যে সংবিধান আছে সেখান থেকেই ডিটেলে পড়তে পারলো ভালো হয়। বিশেষত কোন অনুচ্ছেদে কোন বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে সেটাতে মনোযোগ দিতে হবে।

      ৭। বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থা অংশ থেকে আইন, শাসন ও বিচার বিভাগ সম্পর্কে ভালো ভাবে জানতে হবে।

      ৮। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা, তাদের প্রতিষ্ঠাতা ও স্থপতি সংক্রান্ত টপিকটিও মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। কারণ প্রতি প্রিলিতেই এই সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন এসে থাকে।

      ৯। সাম্প্রতিক তথ্যের বিষয়ে আপডেট থাকতে হবে।

      ১০। বিভ্রান্তিকর প্রশ্নের উত্তর বুঝে শুনে করতে হবে।

      ১১। বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে যাই পড়া হোক না কেন সেটা অত্যন্ত গভীরভাবে পড়তে হবে। তাহলে প্রিলির পাশাপাশি বিসিএস লিখিত ও বিসিএস ভাইবাতেও উপকার পাওয়া যাবে।

      ১২। পড়াশোনার জন্য বাংলাদেশের একটি ভালো মানের ম্যাপ ব্যবহার করতে হবে।

      বিসিএস আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি প্রস্তুতি

      আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে যে সকল টপিকের উপর প্রশ্ন করা হয় সেগুলি হচ্ছে, বৈশ্বিক ইতিহাস, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা, ভূ-রাজনীতি বিষয়ে ০৪টি প্রশ্ন, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও আন্তরাষ্ট্রীয় ক্ষমতা সম্পর্ক বিষয়ে ০৪টি প্রশ্ন, বিশ্বের সাম্প্রতিক ও চলমান ঘটনাপ্রবাহ থেকে ০৪টি প্রশ্ন, আন্তর্জাতিক পরিবেশগত ইস্যু ও কূটনীতি বিষয়ে ০৪টি প্রশ্ন এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনসমূহ ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানাদি বিষয়ে ০৪টি প্রশ্ন।

      বিগত বিসিএসসমূহে আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      বিগত বিসিএসসমূহে আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি বিষয়ে ভালো করার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত টিপস

      ১। সাম্প্রতিক বিষয়সমূহের আপডেট তথ্য খুব ভালো করে জানতে হবে।

      ২। বিভিন্ন চলমান ও আলোচিত যুদ্ধ, চুক্তি, সনদ ও সম্মেলন বিষয়ে সকল তথ্য জেনে রাখতে হবে।

      ৩। বিভিন্ন আলোচিত আন্তর্জাতিক সংগঠন, তাদের প্রতিষ্ঠার সাল, সদস্য সংখ্যা, সদর দপ্তর, বর্তমান প্রধান, অঙ্গ সংগঠন ইত্যাদি বিষয়ে মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

      ৪। পত্র-পত্রিকার আন্তর্জাতিক পাতা মনোযোগ দিয়ে নিয়মিত পড়তে হবে।

      ৫। যে সকল তথ্য প্রায়ই পরিবর্তিত হয় সে সকল তথ্যের সর্বশেষ আপডেট জানতে হবে।

      ৬। বিভ্রান্তিকর প্রশ্নের উত্তর ভালো ভাবে জেনে এবং বুঝে করতে হবে।

      ৭। বিভিন্ন দেশের ভৌগলিক সীমারেখা, সমুদ্রসীমা ও সীমান্ত বিষয়ে সম্যক ধারণা রাখতে হবে।

      ৮। বিভিন্ন সংগঠনের তথ্য জানবার জন্য তাদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এবং Live MCQ প্রদত্ত পিডিএফের উপর নির্ভর করা যেতে পারে।

      ৯। ভালো মানের একটি গ্লোবাল ম্যাপ ধরে বিভিন্ন দেশের অবস্থান, সীমা, প্রণালি, খাল ইত্যাদি বিষয়ে পড়াশোনা করলে উপকার পাবেন।

      বিসিএস গাণিতিক যুক্তি প্রস্তুতি

      এই বিভাগের জন্য বিসিএস প্রিলিতে মোট বরাদ্দ থাকে ১৫ নম্বর। এই বিষয়ে বিগত বছরসমূহের প্রশ্ন বিশ্লেষণ নিচে দেয়া হলো।

      বিগত বিসিএসসমূহে গাণিতিক যুক্তির কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      বিগত বিসিএসসমূহে গাণিতিক যুক্তির কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      গাণিতিক যুক্তি বিষয়ে ভালো করার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত টিপস নিচে দেয়া হলো

      ১। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে অনেক শিক্ষার্থীই গণিত বিষয়টিকে একটু ভয়ের চোখে দেখে থাকেন। বিসিএস প্রিলিতে ভালো করতে হলে ভয় পেলে চলবে না। প্রতিদিন এই বিষয়ে প্র্যাকটিস করতে হবে।

      ২। জব সল্যুশন বা বিগত বছরের প্রশ্নসমূহ সমাধান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

      ৩। সেট, বিন্যাশ ও সমাবেশ, পরিসংখ্যান ও সম্ভাব্যতা বিষয়টি খুবই মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

      ৪। চূড়ান্ত পরীক্ষায় গাণিতিক যুক্তি বিষয়ের প্রশ্নসমূহ সমাধান করবার সময় টাইম ম্যানেজমেন্টের বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে। প্রস্তুতির সময় থেকেই এই বিষয়ে কৌশল ঠিক করে নিতে হবে।

      বিসিএস মানসিক দক্ষতা প্রস্তুতি

      বিসিএস প্রিলিতে মানসিক দক্ষতা বিষয়ে ১৫টি প্রশ্নের জন্য ১৫ নম্বর বরাদ্দ থাকে। ভাষাগত যৌক্তিক বিচার, সমস্যা সমাধান, বানান ও ভাষা, যান্ত্রিক দক্ষতা, স্থানাঙ্ক সম্পর্ক এবং সংখ্যাগত ক্ষমতা- এই ৬টি টপিকে ভাগ করা হয়েছে এই বিষয়টিকে। আসুন এক নজরে দেখে নেয়া যাক বিগত কয়েকটি প্রিলিতে এই বিভাগের কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছে।

      বিগত বিসিএসসমূহে মানসিক দক্ষতার কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      বিগত বিসিএসসমূহে মানসিক দক্ষতার কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      উপরের টেবিলটি বিশ্লেষণ করলে দেখবেন, প্রায় প্রতি প্রিলিতেই কোডিং ও ডিকোডিং, সমস্যা সমাধান, সাদৃশ্য/অ্যানালজি, সিরিজের সংখ্যা নির্ণয়, দিক ও চিত্র নির্ণয়, আয়নায় প্রতিবিম্ব এবং দিন ও সম্পর্ক নির্ণয় টপিকসমূহ থেকে প্রশ্ন এসে থাকে। তাই পড়াশোনার সময় এসব বিষয়ে সর্তকতার সাথে পড়তে হবে।

      মানসিক দক্ষতা বিষয়ে ভালো করার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত টিপস

      ১। বাজারে পাওয়া যায় এমন ভালো কোন বই পড়তে হবে।

      ২। এই বিষয়ে ভালো করবার জন্য প্রচুর প্র্যাকটিসের কোন বিকল্প নেই।

      ৩। মানসিক দক্ষতা বিষয়ে ভালো করতে হলে জব সল্যুশন বা বিগত বছরের প্রশ্নসমূহ সমাধান করা জরুরি।

      ৪। মানসিক দক্ষতা অনেকাংশেই পরীক্ষার্থীর কমনসেন্সের উপর নির্ভরশীল। তাই এই বিষয়ে ভালো করতে হলে কমনসেন্সের উন্নতি ঘটাতে হবে।

      ৫। গাণিতিক যুক্তিতে ভালো হলে মানসিক দক্ষতা বিষয়েও ভালো করা সম্ভব। তাই গাণিতিক যুক্তির অংশে ভালো ভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।

      ৬। বাংলা এবং ইংরেজি শব্দের বানান, সমার্থক শব্দ, বিপরীত শব্দ এই ধরণের প্রশ্ন মানসিক দক্ষতায় করা হয়ে থাকে বিধায় বাংলা এবং ইংরেজি উভয় বিষয়ের ভাষা অংশের জন্য ভালো প্রস্তুতি নিলে উপকার পাওয়া যাবে।

      ৭। চূড়ান্ত পরীক্ষায় চিত্র দেখে ত্রিভূজ, চতুর্ভূজ ইত্যাদি গণনা জাতীয় প্রশ্নের ক্ষেত্রে সমাধান করতে বেশি সময় নিয়ে ফেললে অন্যান্য প্রশ্ন সমাধান করবার সময় কমে যাবে। এই বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দিয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে।

      ৮। চূড়ান্ত পরীক্ষায় মানসিক দক্ষতার প্রশ্ন পড়া ও উত্তর করার সময় আগে মন দিয়ে প্রশ্নটি পড়ে নিতে হবে। কারণ অনেক সময়ই প্রশ্ন একটু ঘুরিয়ে করা হয়। তাই পুরো মনোযোগ না দিলে উত্তর ভুল হয়ে যেতে পারে।

      বিসিএস সাধারণ বিজ্ঞান প্রস্তুতি

      বিসিএস প্রিলিতে সাধারণ বিজ্ঞান বিভাগে ভৌত বিজ্ঞান, জীব বিজ্ঞান ও আধুনিক বিজ্ঞান এই তিনটি ভাগের প্রতিটিতে ০৩টি করে মোট ১৫টি প্রশ্নের বিপরীতে ১৫ নম্বর বরাদ্দ আছে। বিগত কয়েকটি প্রিলিতে এই বিভাগ থেকে নিম্নোক্ত টপিকসমূহের উপর প্রশ্ন এসেছে।

      বিগত বিসিএসসমূহে সাধারণ বিজ্ঞানের কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      বিগত বিসিএসসমূহে সাধারণ বিজ্ঞানের কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ে ভালো করার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত টিপস

      ১। প্রথমেই বিগত বছরসমূহের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করতে হবে এবং সেখান থেকে প্রশ্নপত্রের প্যার্টান বুঝে নিতে হবে।

      ২। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছাড়া অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা সাধারণ বিজ্ঞান বিভাগের ভৌত বিজ্ঞান অংশে এসিড, ক্ষার, লবণ, জারণ-বিজারণ, স্থির ও চলতড়িৎ, ইলেকট্রনিকস, নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস- এই টপিকসমূহে মনোযোগ দিতে হবে। এছাড়া তড়িৎ চৌম্বক, ট্রান্সফর্মার, এক্সরে এবং তেজস্ক্রিয়তা বিষয়ে ভালো করে পড়লে লিখিত পরীক্ষার সময় সুবিধা পাওয়া যাবে।

      ৩। জীব বিজ্ঞান অংশে রক্ত সঞ্চালন, হৃৎপিণ্ড, খাদ্য ও পুষ্টি, ভিটামিন, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, মানবদেহ, রোগের কারণ ও প্রতিকার- এই টপিকসমূহ ভালো ভাবে পড়তে হবে।

      ৪। আধুনিক বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে সবগুলো টপিকই পড়তে হবে।

      ৫। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর বোর্ড বই থেকে সাধারণ বিজ্ঞানের টপিকসমূহ পড়লে ভালো হবে।

      বিসিএস কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি প্রস্তুতি

      বিসিএস প্রিলিতে কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ের কম্পিউটার সেকশন থেকে ১০টি এবং তথ্য প্রযুক্তি সেকশন থেকে ০৫টি প্রশ্ন থাকে। এই বিষয় থেকে বিগত কয়েক বছরে আসা প্রশ্নের রেশিও অনেকটা এরকম,

      বিগত বিসিএসসমূহে কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তির কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      বিগত বিসিএসসমূহে কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তির কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে ভালো করার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত টিপস

      ১। কম্পিউটার পেরিফেরাস, কী বোর্ড, মাউস, ওসিআর, কম্পিউটার অঙ্গ সংগঠন, সিপিইউ, হার্ড ডিস্ক- এই টপিকগুলো প্রিলির পাশাপাশি বিসিএস রিটেন পরীক্ষার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তাই পড়তে হবে মনোযোগ দিয়ে।

      ২। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম থেকে বেশ কয়েকটি করে প্রশ্ন আসার প্রবণতা দেখা গেছে। তাই এই টপিকটিও পড়বার সময় অনেক বেশি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

      ৩। কম্পিউটার প্রোগ্রাম, ভাইরাস, ফায়ারওয়াল এই বিষয়সমূহ খুবই গুরুত্ব সহকারে পড়তে হবে।

      ৪। কম্পিউটার নম্বর ব্যবস্থা অংশ থেকেও প্রায় প্রতি বিসিএস প্রিলিতেই প্রশ্ন আসতে দেখা যায়। এ কারণে এই টপিকটিও বিশেষ মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

      ৫। তথ্য প্রযুক্তি অংশের সব টপিকই গুরুত্বপূর্ণ। এই অংশের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে যে, এই সেকশনের তথ্য কিন্তু খুব ঘনঘন পরিবর্তন হয়। তাই চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেবার আগে সর্ব শেষ আপডেটেড তথ্যটি জানতে হবে।

      বিসিএস ভূগোল পরিবেশ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ের প্রস্তুতি

      বিসিএস প্রিলিতে কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ের কম্পিউটার সেকশন থেকে ১০টি এবং তথ্য প্রযুক্তি সেকশন থেকে ০৫টি প্রশ্ন থাকে। এই বিষয় থেকে বিগত কয়েক বছরে আসা প্রশ্নের রেশিও অনেকটা এরকম,

      বিগত বিসিএসসমূহে কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তির কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      বিগত বিসিএসসমূহে কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তির কোন টপিক থেকে কতো প্রশ্ন এসেছিল

      কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে ভালো করার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত টিপস

      ১। কম্পিউটার পেরিফেরাস, কী বোর্ড, মাউস, ওসিআর, কম্পিউটার অঙ্গ সংগঠন, সিপিইউ, হার্ড ডিস্ক- এই টপিকগুলো প্রিলির পাশাপাশি বিসিএস রিটেন পরীক্ষার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তাই পড়তে হবে মনোযোগ দিয়ে।

      ২। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম থেকে বেশ কয়েকটি করে প্রশ্ন আসার প্রবণতা দেখা গেছে। তাই এই টপিকটিও পড়বার সময় অনেক বেশি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

      ৩। কম্পিউটার প্রোগ্রাম, ভাইরাস, ফায়ারওয়াল এই বিষয়সমূহ খুবই গুরুত্ব সহকারে পড়তে হবে।

      ৪। কম্পিউটার নম্বর ব্যবস্থা অংশ থেকেও প্রায় প্রতি বিসিএস প্রিলিতেই প্রশ্ন আসতে দেখা যায়। এ কারণে এই টপিকটিও বিশেষ মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

      ৫। তথ্য প্রযুক্তি অংশের সব টপিকই গুরুত্বপূর্ণ। এই অংশের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে যে, এই সেকশনের তথ্য কিন্তু খুব ঘনঘন পরিবর্তন হয়। তাই চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেবার আগে সর্ব শেষ আপডেটেড তথ্যটি জানতে হবে।

      বিসিএস ভূগোল পরিবেশ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ের প্রস্তুতি

      বিসিএস প্রিলিতে ভুগোল পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে মোট ১০ নম্বর বরাদ্দ থাকে ১০টি প্রশ্নের বিপরীতে। বিগত বছরের প্রশ্নসমূহ বিশ্লেষণ থেকে দেখা গেছে যে, বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক ভৌগোলিক অবস্থান, বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা টপিকসমূহ থেকেই এই বিষয়ের প্রশ্নগুলো সাধারণত করা হয়ে থাকে।

      ভুগোল পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ভালো করার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত টিপস

      ১। ভুগোল পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ৯ম-১০ম শ্রেণীর বোর্ড বই থেকে পড়তে হবে।

      ২। বাংলাদেশের অবস্থান, সীমানা, সীমান্ত, সমুদ্রসীমা, অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ, বাংলাদেশের উপর দিয়ে যাওয়া বিভিন্ন রেখা সম্পর্কে ভালো ভাবে জানতে হবে।

      ৩। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন অঞ্চলের অবস্থান বিষয়ে সম্যক ধারণা রাখতে হবে।

      ৪। ভালো মানের একটি বাংলাদেশের ম্যাপ ধরে বাংলাদেশ ও এর বিভিন্ন অজ্ঞলের অবস্থান খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে হবে।

      ৫। বাংলাদেশের বিভিন্ন অজ্ঞলে পাওয়া যায় এমন খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ে ভালো ভাবে জানতে হবে।

      বিসিএস নৈতিক মূল্যবোধ ও সুশাসন প্রস্তুতি

      এই বিষয়ে বিসিএস প্রিলিতে মোট ১০টি প্রশ্ন থাকে। নৈতিক মূল্যবোধ ও সুশাসন বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ টপিকসমূহ হচ্ছে, সুশাসনের ধারণা ও সংজ্ঞা, মূল্যবোধের ধারণা, সংজ্ঞা ও উপাদান, বিশ্বব্যাংক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্দিষ্ট করে দেয়া সুশাসনের উপাদানসমূহ। বিসিএস প্রিলির জন্য প্রস্তুতি নেবার সময় অনেক শিক্ষার্থীই এই বিষয়ে খুব একটা জোর দেন না। কিন্তু আপনি যদি সবার মধ্যে প্রস্তুতিতে একটু এগিয়ে থাকতে চান তাহলে কোন বিষয়েই আপনার অবহেলা করবার সুযোগ নেই।

      নৈতিক মূল্যবোধ ও সুশাসন বিষয়ে ভালো করার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত টিপস

      ১। এই বিষয়ে বাজারের যেকোনো বই পড়লে প্রশ্ন কমন পাবেন।

      ২। কোন সংগা কে বা কোন প্রতিষ্ঠান দিয়েছে, নৈতিক মূল্যবোধ ও সুশাসনের ক্ষেত্রে কোন বিষয়টি অপরিহার্য বা অপরিহার্য নয় এ ধরণের বিষয়সমূহ খুব ভালো ভাবে জানতে হবে।

      বিসিএস প্রিলির সকল বিষয়েই প্রস্তুতির ক্ষেত্রে যে কমন বিষয়সমূহ অবশ্যই মানতে হবে

      ১। জব সল্যুশন বা বিগত বছরের প্রশ্ন সমাধান করা।

      ২। পরীক্ষা নিয়ে টেনশন একদমই নয়।

      ৩। প্রতিটি বিষয়ে যতো বেশি সম্ভব মডেল টেস্ট দিতে হবে।

      ৪। অপ্রয়োজনীয় কাজে স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহার করা যাবে না।

      ৫। কে কী পড়ছে সেই বিষয়ে আগ্রহী না হয়ে নিজের মতো করে নিজের প্রস্তুতিতে মনোযোগী হোন।

      ৬। কোন বিষয় পড়তে পড়তে ক্লান্ত বোধ করলে আপনার ভালো লাগে এমন কোন বিষয় পড়ুন। কিন্তু পড়া ছাড়বেন না।

      ৭। বাংলা ও ইংরেজি ব্যাকরণ, গাণিতিক এবং মানিসিক যুক্তি প্রতিদিনই প্র্যাকটিস করুন।

      ৮। সব কিছু পড়ে ফেলতে যাবেন না। জব সল্যুশনের মাধ্যমে প্রশ্নপত্রের প্যাটার্ন ভালো ভাবে বুঝে নিয়ে প্রয়োজনীয় টপিক পড়ায় মনোযোগ দিন।

      ৯। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে দিনে অন্তত দুই বার ১৫-২০ মিনিট করে ঘুমিয়ে নিন।

      বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি

      বিসিএস ক্যাডার হবার ক্ষেত্রে যে বিষয়টি প্রথম থেকেই ভালো ভাবে মনে গেঁথে রাখতে হবে সেটি হচ্ছে, বিসিএস প্রিলিতে পাস করলে শুধুমাত্র বিসিএস লিখিত পরীক্ষার জন্য ডাক পাওয়া যায়। কিন্তু প্রিলিতে প্রাপ্ত নম্বর ক্যাডার হিসাবে চূড়ান্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন প্রভাব রাখে না। তবে বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের সাথে ভাইবায় প্রাপ্ত নম্বর যোগ করেই সুপারিশের জন্য চূড়ান্ত মেধা তালিকা তৈরি করে পিএসসি। এ কারণে কাঙ্ক্ষিত ক্যাডার পাবার বিষয়ে লিখিত পরীক্ষায় পাওয়া নম্বর অনেক বেশি প্রভাব রাখে। তাই লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে খুবই মনোযোগের সাথে।

      বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য করনীয়

      ১। যতোটা বেশি সময় নিয়ে সম্ভব হয় ততোটা বেশি সময় নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করুন। এক্ষেত্রে অনার্সে ভর্তির পরপর থেকেই লক্ষ্য ঠিক করে নিয়ে এগোনোটা ভালো।

      ২। আপনি পারবেন এই ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হোন।

      ৩। পড়াশোনার রুটিন তৈরি করে সেটি যথাযথভাবে ফলো করুন।

      ৪। পড়াশোনায় টার্গেট সেট করুন এবং যেভাবেই হোক সেই টার্গেট এ্যাচিভ করার চেষ্টা করুন।

      ৫। প্রতিদিন অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘন্টা পড়াশোনা করুন।

      ৬। কোন বিষয়ে পড়তে পড়তে ক্লান্ত বোধ করলে যে বিষয়টি পড়তে আপনার ভালো লাগে সেটি পড়ুন। কিন্তু পড়া থামাবেন না।

      ৭। টাইম ম্যানেজমেন্ট কৌশল অর্থ্যাৎ কোন বিষয়ে, কোন প্রশ্নে কী পরিমান সময় ধরে লিখবেন সেটি ঠিক করে সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে পারলে ভালো হবে।

      ৮। সব কিছুই যে আপনাকে পড়তে হবে, জানতে হবে এমন নয়। প্রয়োজনীয় টপিকটিই বেশি বেশি পড়ুন।

      ৯। যে বিষয়টি মনে রাখতে খুব কষ্ট হচ্ছে বলে মনে হবে সেটি মনে রাখবার পেছনে বেশি এ্যাফোর্ট দেবেন না। বরং তার বিকল্পসমূহে মন দিন।

      ১০। কাউকে ফলো করতে যাবেন না। যারা এর আগে সাফল্য পেয়েছে তাদের কথা শুনুন, অনুপ্রেরণা নিন, কিন্তু অনুকরণ করবেন না। নিজের পড়ার রুটিন, সাজেশন নিজেই তৈরি করুন।

      ১১। যে ভাষায় আপনি দ্রুত লিখতে পারেন উত্তর করার জন্য সেটিই বেছে নিন।

      ১২। ভালো ঘুম আপনার প্রস্তুতিতে সহায়ক হবে। তাই কম ঘুমালেও সেটি যেন নিরবিচ্ছিন্ন হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

      ১৩। প্রতিদিনই অনুবাদ, ব্যাকরণ,গণিত এবং মানসিক দক্ষতা বিষয়গুলো চর্চা করুন।

      ১৪। ইংরেজিতে ভালো করবার জন্য সঠিক বানানের প্রতি মনোযোগ দিন। সহজ বাক্য লিখুন, তবে অবশ্যই সেটি শুদ্ধভাবে লিখুন।

      ১৫। ইংরেজিতে প্রতিদিন কোন না কোন টপিকের উপর অন্তত ৫-৭ পৃষ্ঠা লেখার চেষ্টা করুন।

      ১৬। সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে ভালো করবার জন্য জব সল্যুশন তথা আগের বছরসমূহের প্রশ্নের সমাধান করা জরুরি।

      ১৭। প্রশ্ন কঠিন হবে নাকি সহজ হবে এসব নিয়ে টেনশন করবেন না। মনে রাখবেন, যা হবে সেটা আপনার জন্য যেমন হবে ঠিক তেমনিভাবে অন্যদের জন্যও হবে।

      ১৮। তথ্যবহুল লেখা বেশি বেশি পড়বার চেষ্টা করুন। লেখার ক্ষেত্রেও তাই। অকারণে বেশি ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে না লিখে তথ্যসমৃদ্ধ লেখা লিখবার চেষ্টা করুন।

      ১৯। হাতের লেখা সুন্দর না হলেও যেন স্পষ্ট হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

      ২০। বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীতে উত্তরের শেষাংশে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ, কলামিস্ট এবং আপনার মতামত ও বিশ্লেষণ দেবার চেষ্টা করুন।

      ২১। গ্রন্থ সমালোচনা করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ ও অন্যান্য বিষয়ের বহুল পরিচিত এবং গুরুত্বপূর্ণ বইসমূহের বিষয়ে ধারণা গড়ে তুলুন।

      ২২। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে লাগতে পারে এমন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করুন এবং সেসমূহ সেই সংশ্লিষ্ট প্রশ্নের পাশে লিখে রাখুন।

      ২৩। প্রয়োজনীয় চিত্র ও ম্যাপ আঁকা শিখবার জন্য নিয়মিত চর্চা করুন।

      ২৪। পরীক্ষায় কোন প্রশ্ন ছেড়ে আসা যাবে না। সব প্রশ্নেরই উত্তর করতে হবে।

      বিসিএস প্রিলি ও লিখিত প্রস্তুতি একসাথে যেভাবে নিবেন

      বিসিএস প্রিলি পরীক্ষার তুলনায় বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় প্রস্তুতি নেবার জন্য সময় খুব কম পাওয়া যায়। এ কারণে বিসিএস প্রিলি ও লিখিত প্রস্তুতি একসাথে নিতে পারলে ভালো হয়। তবে প্রিলি এবং রিটেনের প্রস্তুতি যেহেতু একটু আলাদা সেহেতু যৌথভাবে এই প্রস্তুতি নিতে হলে আপনাকে যা করতে হবে সেসমূহ হচ্ছে,

      ১। আপনি একজন বিসিএস ক্যাডার হতে চান এই লক্ষ্য সামনে রেখে অনার্সের শুরু থেকেই পড়াশোনা শুরু করুন।

      ২। নিয়মিত পড়ালেখার জন্য একটি রুটিন তৈরি করে নিন।

      ৩। রুটিনে প্রিলির প্রস্তুতি নেবার জন্য যে সময় রাখবেন তার মধ্যে ১৫% থেকে ২০% সময় লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবার জন্য বরাদ্দ রাখবেন।

      ৪। প্রিলির প্রস্তুতি হিসাবে যা পড়বেন সেসমূহ গভীরভাবে পড়তে হবে। কোন টপিক পড়বার সময় তার সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য পড়তে পারলে লারনিং ডিপ হবে।

      ৫। পড়ালেখাকে নিজের আসক্তি করে তুলতে পারলে প্রিলি ও রিটেনের এই যৌথ প্রস্তুতি নেয়া অনেক অনেক সহজ হবে।

      ৬। নিয়মিত বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা পড়ুন। সম্ভব হলে পত্রিকা থেকে প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ কেটে নিন বা ফটোকপি করিয়ে সংগ্রহ করুন। প্রতিদিনই বাংলা পত্রিকার সম্পাদকীয় অংশ বা আন্তর্জাতিক কোন খবর ইংরেজিতে অনুবাদ করুন।

      ৭। বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক ম্যাপ রিডিং করতে শুরু করুন।

      ৮। প্রতিদিনই সংবিধানের কোন না কোন অনুচ্ছেদ পড়া শুরু করুন।

      ৯। বাংলা সাহিত্য বিষয়ের জন্য মুক্তিযুদ্ধ ও অন্যান্য বিষয়ে ৩০-৪০টি পরিচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বই পড়ে ফেলুন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত সবগুলো এবং মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা কিছু বই পড়তে হবে। বিগত বিসিএস প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এই টপিক থেকে বেশ কিছু প্রশ্ন পরীক্ষায় এসেছে।

      ১০। বাংলা ব্যাকরণের জন্য বিগত বিসিএসসমূহের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করুন। তাহলে প্রিলির জন্যও উপকৃত হবেন।

      ১১। বাংলা একাডেমির বানানরীতি চর্চা করুন।

      ১২। আন্তর্জাতিক সাম্প্রতিক সব বিষয়ে যথাযথভাবে জানবার জন্য পত্রিকা পড়বার পাশাপাশি বিসিসি, আল জাজিরা ও সিএনএনের মতো নিউজ চ্যানেলগুলি দেখুন। এতে করে ইংরেজির ক্ষেত্রেও উপকার পাবেন।

      ১৩। বিজ্ঞান বিষয়ের জন্য ৯ম-১০ম শ্রেণির বোর্ড বইয়ের পাশাপাশি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ বিজ্ঞান বইটি পড়ুন।

      ১৪। গণিত বিষয়ের জন্য অন্তত বিগত ৩-৫টি বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করতে হবে।

      ১৫। মানসিক দক্ষতার জন্য বিগত ৫টি বিসিএসের প্রিলি এবং রিটেনের প্রশ্ন সমাধান করতে পারলে আর কিছুর দরকার পড়বে না।

      বিশেষভাবে মনে রাখবেন, বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে ডিপ লার্নিং আপনাকে BCS preliminary and written preparation-এর ক্ষেত্রে অনেক বেশি এগিয়ে দেবে।

      বিসিএস এর জন্য প্রয়োজনীয় বই

      চলুন এবার জেনে নেই বিসিএস প্রস্তুতির জন্য যে বইসমূহ পড়া খুবই দরকার সেই বইসমূহ বা বিসিএস বুক লিস্ট বিষয়ে। এই বই ও ওয়েবসাইটসমূহ যথেষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর Live MCǪ Reference List অনুসারে সাজেস্ট করা হলো।

      বিসিএস প্রিলিমিনারির জন্য প্রয়োজনীয় বইয়ের তালিকা

      বাংলা ব্যাকরণ

        • বাংলা একাডেমি অভিধান

        • বোর্ড বই (ষষ্ঠ শ্রেনী থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী পর্যন্ত)

        • Live MCQ – বাংলাবিদ ব্যাকরণ – লেখকঃ মেহেদী ধ্রুব

        • বা অন্য কোন শিক্ষক বা স্কলারের বই)

        • বাংলাপিডিয়া

      উল্লেখ্য যে Live MCQ বাংলাবিদ ব্যাকরণ বই টি পড়লে আপনাকে যেকোন চাকরির পরীক্ষার জন্য অন্য কোন ব্যাকরণ বই পড়ার প্রয়োজন নেই। বইটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে Live MCQ বাংলাবিদ ব্যাকরণ বই! কি থাকছে বইটিতে? এই লিংকে ক্লিক করুন।

      বাংলা সাহিত্য

      যেকোনো শিক্ষক বা স্কলারের বই (যেমন হুমায়ুন আজাদের লাল নীল দীপাবলি, মাহবুবুল আলমের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, সৌমিত্র শেখরের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা বা অন্য কোন শিক্ষক বা স্কলারের বই)

        • বোর্ড বই

        • বাংলাপিডিয়া

      ইংরেজি ব্যাকরণ

        • Live MCQ English Wizard Grammar by Saleh Ahmed

        • High School English Grammar and Composition by Wren and Martin

        • Advanced Learner’s Grammar and Composition by Chowdhury and Hossain

        • A Passage to the English Language by S.M. Zakir Hossain

        • Applied English Grammar and Composition by P. C. Das

        • Oxford Advanced Learner’s, Oxford, Cambridge, Merriam-Webster, Collins etc. Dictionary

        • English Grammar in Use by Raymond Murphy

        • Cliffs TOEFL

        • Common mistakes in English

      ইংরেজি সাহিত্য

        • An ABC OF English Literature – Dr. M. Mofizar Rahman

        • ইংরেজী সাহিত্যের ইতিহাস- শীতল ঘোষ

        • Encyclopedia Britannica

        • Live MCǪ English Literature PDF

        • যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিকেশন বা রিসার্চ বই (বিভিন্ন ওয়েব সাইটে পাওয়া যেতে পারে)

      বাংলাদেশ বিষয়াবলী

        • বিভিন্ন সরকারি মন্ত্রণালয়, সংস্থার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট

        • স্নাতক পর্যায়ের একাডেমিক বই

        • বাংলাপিডিয়া

        • সাম্প্রতিক তথ্যের জন্য দৈনিক পত্রিকা ও Live MCǪ PDF

      আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী

        • বিভিন্ন অফিশিয়াল ওয়েবসাইট

        • বোর্ড বই বা স্নাতক পর্যায়ের একাডেমিক বই

        • Encyclopedia Britannica, Worldatlas, History.com etc reliable website.

        • সাম্প্রতিক তথ্যের জন্য দৈনিক পত্রিকা ও Live MCǪ PDF

      সাধারণ গণিত

        • NCTB প্রণীত বোর্ড বই (ষষ্ঠ শ্রেনী থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী পর্যন্ত)

        • গণিত অলিম্পিয়াডের প্রশ্নপত্র

        • যেকোনো একটি ভালো গাইড বই

      ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা

        • বোর্ড বই

        • আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ওয়েবসাইট

        • Worldatlas

        • বাংলাপিডিয়া

      সাধারণ জ্ঞান

        • বোর্ড বই

        • রিলায়েবল ওয়েবসাইটসমূহ

      কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি

        • বোর্ড বই

        • রিলায়েবল ওয়েবসাইটসমূহ

      নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন

        • বোর্ড বই

        • রিলায়েবল ওয়েবসাইটসমূহ

        • United Nations, UNDP, World Bank ইত্যাদি সংগঠনসমূহের সু-শাসন বিষয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন ডকুমেন্ট।

      বিসিএস লিখিত প্রস্তুতির জন্য বইয়ের তালিকা

      বাংলা

        • লালনীল দীপাবলি- হুমায়ুন আজাদ।

        • ভাষা ও শিক্ষা- হায়াৎমামুদ।

        • শীকর- মোহসীনা নাজিলা।

        • ৯ম-১০ম শ্রেণির বাংলা-২য় পত্র বোর্ড বই।

      ইংরেজি

        • Master English– জাহাঙ্গীর আলম।

        • A passage to English Language- জাকির হোসাইন।

        • ডেইলি স্টার সহ আরো দুই একটা ইংরেজি পত্রিকার এডিটোরিয়াল সেকশন, আন্তর্জাতিক রাজনীতি, অর্থনীতি, মধ্যপ্রাচ্য ইস্যু, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রজেক্ট, বাংলাদেশ-ভারত-চায়না ইস্যু, ক্লাইমেট চেঞ্জ, এনভায়েরোনমেন্ট, পলিউশন সংক্রান্ত কলাম থেকে পড়ে পড়ে ট্রানসেলেশন করতে হবে নিয়মিত

        • English Paper (Reading and Translation)।

        • Assurance English Guide

        • Practical English Usage by Michael Swan

      গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা

        • ৯ম-১০ম শ্রেণির সাধারণ গনিত বোর্ড বই।

      বাংলাদেশ বিষয়াবলী

        • বাংলাদেশের সংবিধান – আরিফ খান।

        • ৮ম থেকে ১০ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় (বোর্ড বই)

        • ৯ম-১০ম শ্রেণির পৌরনীতি (বোর্ড বই)

        • ৯ম-১০ম শ্রেণির বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা।

        • জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা সব বই

        • পলাশী থেকে একাত্তর- সাহাদত হোসেন খান

        • মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর- গোলাম মুরশিদ

        • নাগরিকদের জানা ভালো- মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান

        • ছোটদের রাজনীতি ছোটদের অর্থনীতি- ড. নীহার কুমার সরকার

        • অর্থনৈতিক সমীক্ষা।

        • যেকোনো একটি বা দুটি ভালো দৈনিক পত্রিকার জাতীয়, সম্পাদকীয় পাতা, অর্থনীতি পাতা।

      আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী

        • আন্তর্জাতিক সংগঠন ও বিষয়াদি- আব্দুল হাই।

        • দ্য কনসেপ্টস- রব্বানী খান রাব্বি

        • দি এনাটমি অফ ওয়ার্ল্ড পলিটিকস- মোঃ মিরাজ মিয়া

        • বিশ্ব রাজনীতির ১০০ বছর- তারেক শামসুর রেহমান

        • যেকোনো একটি বা দুটি ভালো দৈনিক পত্রিকার আন্তর্জাতিক পাতা ও সম্পাদকীয় পাতা।

      সাধারণ বিজ্ঞান

        • ৮ম থেকে ১০ম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান বোর্ড বই।

        • একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বই থেকে কম্পিউটার অংশটি পড়তে হবে।

        • এছাড়া কারিগরি ক্যাডারের পরীক্ষার্থীরা পদসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ২০০ নম্বরের পরীক্ষার বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব সাবজেক্ট বিষয়ে যা পড়েছেন সেগুলো পড়লেই হবে।

      এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো যে, বিভিন্ন বই ও ওয়েবসাইটসমূহের পাশাপাশি বিসিএস প্রিলি ও লিখিত সহ যেকোনো প্রতিযোগিতামূলক চাকরির দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদী প্রস্তুতির জন্য সব থেকে আধুনিক ও স্মার্ট মাধ্যম হচ্ছে Live MCQ এবং Live Written অ্যাপ দুটি।

      বিসিএস প্রস্তুতির জন্য পড়ার রুটিন

      বিসিএস প্রস্তুতির ক্ষেত্রে একেকজন শিক্ষার্থীর রুটিন একেক রকম হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে এই রুটিন তৈরির বিষয়ে যে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি সেগুলি হচ্ছে,

        • প্রতিদিন অন্তত ১০-১২ ঘন্টা পড়াশোনা করতে হবে।

        • প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা করার চেষ্টা করতে হবে।

        • রুটিনে মডেল টেস্ট দেবার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে রাখতে হবে।

        • আপনার হাতে প্রস্তুতির জন্য কতো সময় আছে সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। হাতে ৩ মাস সময় থাকলে রুটিন এক রকম করে তৈরি করতে হবে। আবার ৬ মাস সময় থাকলে অন্যরকম করে সাজাতে হবে।

      আপনি চাকরির প্রস্তুতি তে নতুন হন বা অভিজ্ঞ যেকোন সময় বিসিএস প্রস্তুতি নিতে আমাদের বিসিএস প্রস্তুতি রুটিন গুলো অনুসরণ করুন।

      বিসিএসের জন্য পত্রিকা পড়ার নিয়ম

      কিছু নিয়ম মেনে পত্রিকা পড়লে বিসিএস প্রস্তুতির ক্ষেত্রে উপকৃত হবেন। এই নিয়মগুলো হচ্ছে,

      ১। প্রতিদিন অন্তত ২টি বাংলা এবং ২টি ইংরেজি পত্রিকা পড়বার অভ্যাস গড়ে তোলা।

      ২। বাংলা এবং ইংরেজি উভয় পত্রিকা পড়বার সময় পত্রিকার সম্পাদকীয় কলামসমূহ এবং গুরুত্বপূর্ণ সংবাদের শব্দ বিন্যাস, বাক্যের গঠন ইত্যাদি মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করতে হবে।

      ৩। কী ধরণের প্রশ্ন পরীক্ষায় আসে এবং কী ধরণের প্রশ্ন পরীক্ষায় আসে না সেটা ভালো ভাবে বুঝে নিয়ে পত্রিকায় থাকা ওইসব টপিকে মনোযোগ দেয়া।

      ৪। অফলাইনে পত্রিকা পড়লে প্রয়োজনীয় নোট নেয়া, আর অনলাইনে পড়লে প্রয়োজনীয় অংশসমূহ কপি করে ওয়ার্ড ফাইলে জমা করে পড়াশোনা করা বা এই ওয়ার্ড ফাইলগুলো প্রিন্ট করে নিয়ে পড়াশোনার ক্ষেত্রে কাজে লাগানো।

      ৫। প্রতিদিন কোন না কোন টপিক ইংরেজি থেকে বাংলা এবং বাংলা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করা।

      ৬। যে সব তথ্য প্রতিনিয়ত বদলে যায় সে ধরণের তথ্য সব সময় না পড়ে চূড়ান্ত পরীক্ষার ৪-৫ দিন আগে পড়া। যেমন, চলতি বছরের সালতামামি। এক্ষেত্রে পত্রিকা থেকে না পড়ে Live MCQ এর – Daily News Picker, Weekly Bulletin, সালতামামি বিষয়ক পিডিএফসমূহও পড়া যায়।

      বিসিএস ভাইভা প্রস্তুতি

      বিসিএস ভাইভা প্রস্তুতি

      বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদেরকে একটা মৌখিক পরীক্ষা (Interview) ডাকা হয়, যা ভাইভা নামেই বেশি পরিচিত। এই পরীক্ষাটি মোট ২০০ নম্বরের হয়। ভাইবায় পাস করতে হলে এর মধ্যে ৫০% নম্বর পাওয়া বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে একটা কথা মনে রাখা জরুরি যে, ভাইবায় আপনি যতো ভালো করতে পারবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত ক্যাডারটি পাওয়ার সম্ভাবনা ততোই বৃদ্ধি পাবে।

      এবার তাহলে জেনে নেয়া যাক ভাইবায় ভালো করতে হলে আপনাকে কী কী করতে হবে সে বিষয়ে।

      ১। ভাইবাতে শুধুমাত্র আপনার পড়াশোনা বা জানা ও বোঝার বিষয়গুলিই দেখা হবে না, বরং এর সাথে আপনার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, গেটআপ বা পোশাক-পরিচ্ছদ এবং উপস্থাপনা কৌশলও কিন্তু দেখা হবে। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি এসব বিষয়েও যথাযথ দৃষ্টি দিতে হবে।

      ২। আপনার নিজের সম্পর্কে এবং নিজ জেলা, বিশ্ববিদ্যালয় ও আপনার অনার্সে পঠিত বিষয় সম্পর্কেও স্বচ্ছ ধারণা রাখতে হবে।

      ৩। আপনার ক্যাডার চয়েস লিস্ট বিষয়েও পুরোপুরিভাবে পরিস্কার ধারণা রাখতে হবে। শুধুমাত্র প্রথম দুই বা তিনটি ক্যাডার নয়, বরং আপনার করা পুরো ক্যাডার চয়েস লিস্টের সবগুলো ক্যাডার বিষয়েই ভালো করে জানা থাকা দরকার।

      ৪। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং সংবিধান বিষয়ে ভালোভাবে জানতে হবে।

      ৫। সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে চলা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয় সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখতে হবে।

      ৬। আপনাকে অতি অবশ্যই আত্মবিশ্বাসী এবং তার সাথে সাথে বিনয়ী হতে হবে। তবে এক্ষেত্রে মাথায় রাখবেন যে, ওভার কনফিডেন্ট কিন্তু ভাইবার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

      ৭। ভাইবা বোর্ডের মুখোমুখি হবার জন্য আপনার সিরিয়াল আসলে ভাইবা রুমের দরজা থেকেই অনুমতি নিয়ে রুমে ঢুকবেন, আত্মবিশ্বাসী পদক্ষেপে এগিয়ে গিয়ে টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে আপনার ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী সালাম, আদাব ইত্যাদি বলবেন, অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত বসবেন না, কোন কারণে বোর্ডের সদস্যরা বসবার কথা বলতে দেরি করলে বিনয়ের সাথে বসবার জন্য তাদের অনুমতি চাইবেন, তারা অনুমতি দিলে তারপর বসবেন। বসবার পর ভাইবা বোর্ডের সকলের সাথে হাসিমুখে আই কন্ট্রাক্ট করবার চেষ্টা করবেন।

      ৮। ভাইবা চলাকালীন পুরোটা সময় মুখে স্মিত হাসি ধরে রাখার চেষ্টা করবেন।

      ৯। ভাষায় আঞ্চলিকতা পরিহার করতে পারলে ভালো হয়।

      ১০। যেকোনো প্রশ্ন মন দিয়ে পুরোটা শুনে তারপর খুব সামান্য সময় ভেবে নিয়ে উত্তর দিতে শুরু করবেন। প্রশ্নকর্তার প্রশ্নের মাঝেই কথা বলবেন না। হড়বড় করে কথা বলবেন না।

      ১১। সব প্রশ্নের উত্তর দিতেই হবে এমন মনোভাব নিয়ে ভুল বা অনুমান নির্ভর কথা বলবেন না। কোন প্রশ্নের উত্তর আপনার জানা না থাকলে সেটি বিনয়ের সাথে স্বীকার করে নেবেন।

      ১২। টেনশন ফ্রি থাকার চেষ্টা করবেন।

      ১৩। ইংরেজিতে প্রশ্ন করা হলে ইংরেজিতে উত্তর দেবেন। বাংলায় প্রশ্ন করে ইংরেজিতে উত্তর দিতে বললে সেটিই করবেন, বাংলায় উত্তর দেবার অনুমতি চাইবেন না।

      ১৪। ভাইবা বোর্ডে থাকা একজনের প্রশ্নের উত্তর করবার মাঝেই আরেকজন কোন প্রশ্ন করেলে প্রথমজনের অনুমতি নিয়ে দ্বিতীয়জনের প্রশ্নের উত্তর দেবেন।

      ১৫। কোন প্রশ্ন ঠিক মতো শুনতে না পেলে বিনীতভাবে সেটি জানাবেন।

      ১৬। আপনার একাডেমিক পড়াশোনার রেজাল্ট কোন কারণে ভালো হয়ে না থাকলে সে বিষয়ে একটা গ্রহণযোগ্য কারণ তৈরি করে রাখবেন।

      ১৭। আপনার কোন মুদ্রাদোষ থেকে থাকলে সেই বিষয়ে সচেতন হবার চেষ্টা করুন।

      ১৮। যতো পারেন মক বা মডেল ভাইবা দিন।

      ভাইভাতে ভুলেও যে কাজগুলি করবেন না

        • বেশি পাণ্ডিত্য দেখাতে যাবেন না। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে প্রশ্নের উত্তর দিতে খুব বেশি দেরিও করবেন না।

        • নিজের রাজনৈতিক দর্শন প্রকাশ করবেন না।

        • কোনভাবেই ভাইবা বোর্ডে থাকা কারো সাথে তর্কে জড়াবেন না। তারা আপনাকে কোন বিষয়ে ভুল প্রতিপন্ন করলে সেই বিষয়ে আপডেট তথ্যটি আপনার জানা নেই এবং আপনি জেনে নেবেন বলে তাদের কথাই মেনে নেবেন।

      কোচিং ছাড়া বিসিএস প্রস্তুতি

      আপনার যদি নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস থেকে থাকে তাহলে আপনি কোথাও কোচিং না করেই ঘরে বসে নিজে নিজে বিসিএস প্রস্তুতি নিতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে যা করতে হবে তা হচ্ছে,

        • প্রথমে আপনার লক্ষ্যটাকে ঠিক করতে হবে। আপনি যে সত্যিই একজন বিসিএস ক্যাডার হতে চান এই বিষয়ে লক্ষ্যস্থির করতে হবে। হলে হলো, না হলে নেই ধরণের মনোভাব বাদ দিতে হবে।

        • লক্ষ্যস্থির করা হলে আসবে পড়াশোনার বিষয়টি। আপনার লক্ষ্যের প্রতি যদি আপনি অবিচল থাকতে পারেন তাহলে পড়াশোনার বিষয়টিকে মোটেও কষ্টকর মনে হবে না।

        • যথাযথভাবে পড়াশোনা করবার জন্য প্রথমেই একটা রুটিন বানিয়ে ফেলুন। তারপর সেটিকে অনুসরণ করতে শুরু করে দিন।

        • নিয়মিত পড়ুন এবং পড়াশোনা সংক্রান্ত বিষয়েই লেগে থাকুন। আপনার এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিজও যেন পড়াশোনা সংক্রান্ত হয় সেদিকে মনোযোগ দিন।

        • অবসর বিনোদনের মাধ্যমগুলিও আপনার পড়াশোনায় উৎসাহ যোগাবে এমনভাবে বেছে নিন। যেমন, কোন একটা চলচ্চিত্র দেখার ক্ষেত্রে চিন্তা করবেন এটা কীভাবে আপনাকে আপনার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে।

        • আপনাকে আপনার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পারে এমন নেতিবাচক মানসিকতার সঙ্গ ত্যাগ করুন।

        • টাইম ম্যানেজমেন্টের বিষয়ে সচেতন হোন। প্রতিদিন একই সময়ে একই বিষয়ে পড়ার চেষ্টা করুন। আপনার জেগে থাকবার সময়টুকু অকারণ কাজে বা কথায় ব্যয় করবেন না।

        • যতোক্ষণ ঘুমাবেন ততোক্ষণ গভীরভাবে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। কোন বিষয় নিয়ে অযথা টেনশন করবেন না। টেনশন সাউন্ড স্লিপের জন্য ক্ষতিকারক।

        • নিয়মিত এক্সারসাইজ করুন। স্বাস্থ্যকর খাবার ও বিশুদ্ধ পানি খান। সুস্থ থাকবার চেষ্টা করুন।

      অনলাইনে বিসিএস প্রস্তুতি

      কোচিং ছাড়া ঘরে বসে নিজে নিজে বিসিএস প্রস্তুতির জন্য সব থেকে সহায়ক শক্তি হচ্ছে অনলাইন। অনলাইনে বিসিএস প্রস্তুতি নিলে সেটি যেমন আপনার অনেক সময় বাঁচাবে ঠিক তেমনি অনেক ঝামেলাও কমাবে। আর ঘরে বসে অনলাইনে বিসিএস প্রিলি প্রস্তুতি নেবার জন্য বাংলাদেশের সর্ব প্রথম এবং সর্ববৃহৎ প্লাটফর্ম হচ্ছে Live MCQ। এছাড়া Live Written-এর মাধ্যমে বিসিএস রিটেনের জন্য একটি যথাযথ প্রস্তুতিও নিতে পারবেন খুব সহজে।

      বিসিএস প্রিলি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সব থেকে জরুরি হচ্ছে নিয়মিত বিসিএস মডেল টেস্ট দেবার মাধ্যমে নিজের প্রস্তুতির অবস্থা যাচাই করে দেখা। এই মডেল টেস্টসমূহ গাইড বইতে একা একা বা কোন কোচিং সেন্টারে গিয়ে একশ কিম্বা দুইশ পরীক্ষার্থীর সাথে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দিলে খুব একটা লাভ হয় না। যতো বেশি পরীক্ষার্থীর সাথে মডেল টেস্টে অংশ নিতে পারবেন ততোই আপনার প্রস্তুতির অবস্থা ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন। বাংলাদেশে একমাত্র Live MCQ-ই আপনাকে Live MCQ Model Test-এর মাধ্যমে একই সাথে এবং একই সময়ে অনলাইনে হাজার হাজার পরীক্ষার্থীর সাথে মক টেস্ট দেবার সুযোগ করে দিচ্ছে। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে ডাউনলোড করুন Live MCQ অ্যাপ এবং ভিজিট করুন Live MCQ ওয়েবসাইট।

      বিসিএস প্রিলিমিনারি শেষ সময়ের প্রস্তুতি

      বিসিএস প্রিলিমিনারি শেষ সময়ের প্রস্তুতি

      ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি হবার কথা আগামী ৯ মার্চ, ২০২৪ তারিখে। প্রস্তুতি নেবার জন্য খুব বেশি সময় আর আপনি পাবেন না। তাই এখন শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতির জন্য বিশেষ কয়েকটি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে আপনাকে। বিষয়গুলো হচ্ছে,

        • যতো বেশি পারা যায় মডেল টেস্ট দিন।

        • এই সময় নতুন কিছু না পড়ে বরং আগের পড়াগুলিই বার বার রিভিশন দিন।

        • চূড়ান্ত পরীক্ষায় নেগেটিভ মার্কিংয়ের কারণে যেন ভুগতে না হয় সেদিকে বিশেষ মনোযোগ দিন।

        • নিয়মিত পড়াশোনা করুন। একদিন ১৬ ঘন্টা পড়ে পরের দিন একদমই পড়লেন না এমন করলে কিন্তু সমস্যা হবে।

        • শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার চেষ্টা করুন।

        • টেনশন করবেন না। মনে রাখবেন, টেনশন করে কোন সমস্যার সমাধান হয় না।

        • আপনার জন্য অপরিহার্য নয় এমন কাজের পেছনে সময় ব্যয় করবেন না।

        • গাণিতিক যুাক্ত এবং মানসিক দক্ষতা বিষয় দুটি প্রতিদিন প্র্যাকটিস করুন।

        • হাতে কী পরিমান সময় আছে সেটা বুঝে একটি রুটিন সেট করে গাণিতিক যুাক্ত ও মানসিক দক্ষতা ছাড়া অন্যান্য কোন বিষয়ের পেছনে কতোদিন সময় দিয়ে রিভিশন করবেন সেটি ঠিক করুন।

      বিসিএস প্রিলি পাশের কৌশলঃ

      আসুন এবার জেনে নেই বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পাস করার জন্য কিছু অবশ্য মান্য কৌশল বিষয়ে। এই কৌশলসমূহ হচ্ছে,

        • আত্মবিশ্বাসী হওয়া।

        • ধৈর্য ধারণ করা।

        • লক্ষ্যে অবিচল থাকা।

        • সিলেবাস সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা তৈরি করা।

        • বিগত বিসিএসের প্রশ্নপত্রের প্যার্টান বুঝে সব কিছু না পড়ে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় টপিকসমূহ পড়া।

        • রুটিন মেইনটেইন করা।

        • অবশ্যই বোর্ড বই থেকে পড়া।

        • বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিষয়ে সর্তক হওয়া।

        • শব্দ করে পড়া।

        • যা পড়ছেন সম্ভব হলে সেটি লিখে ফেলা।

        • ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে নিয়মিত অনুশীলন করা।

        • প্রতিদিন সংবাদপত্র পড়া।

        • স্মার্ট-রিভিশন সার্কেল অনুসরণ করে যে বিষয়ে পড়ছেন সেটা বার বার রিভিশন দেয়া।

        • গ্রুপ স্টাডি করা।

        • যতো বেশি পারা যায় মডেল টেস্ট দেয়া।

        • সাধারণ জ্ঞানের পরিবর্তনশীল তথ্যসমূহ অনেক আগে না পড়ে চূড়ান্ত পরীক্ষার ৪-৫ দিন আগে আপডেট তথ্যটি জেনে নেয়া।

        • নিজের ফোকাস ঠিক রাখা।

      বিসিএস প্রিলি ফেল করার কারণঃ

      কোন কোন বিষয়ে কী কী উপায় অবলম্বন করলে সাফল্য পাওয়া যাবে সেটা জানা যেমন জরুরি ঠিক তেমনি কোন কারণসমূহ সেই সাফল্যের পথে বাঁধা হয়ে উঠতে পারে সেটা জানাও কিন্তু অত্যন্ত জরুরি। তাই আসুন এবার জেনে নেই বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় সফল না হতে পারার কিছু মূল কারণ। এই কারণসমূহ হলো,

      নেগেটিভ মার্কিংঃ বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষাতে প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য যেমন ১ নম্বর বরাদ্দ থাকে ঠিক তেমনিভাবে ভুল উত্তরের জন্য কাটা হয় নম্বর। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য একজন পরীক্ষার্থীর .৫ (অর্ধেক) নম্বর কাটা হয়। একে সহজ ভাষায় নেগেটিভ মার্কিং বলে। এই নেগেটিভ মার্কিংয়ের কারণে একটি বা দুটি প্রশ্নের ভুল উত্তর করলেই মেধা তালিকায় হাজার হাজার পরীক্ষার্থীর পেছনে পড়ে যেতে হয়। নেগেটিভ মার্কিংয়ের শিকার না হতে চাইলে প্রশ্নপত্রের নৈতিকতা অংশ এবং কনফিউজিং প্রশ্নের উত্তর করার সময় বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।

      টাইম ম্যানেজমেন্টঃ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরীক্ষা শেষ করতে না পারাও বিসিএস প্রিলিতে ফেল করবার একটি অন্যতম বড় কারণ। হয়তো আপনার পড়াশোনা খুব ভালো হয়েছে, কিন্তু তারপরও যদি পরীক্ষাতে সময় মেইনটেইন করে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে না আসতে পারেন তাহলেও ফলাফল নেগেটিভ হতে পারে। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে পরীক্ষার পুরো সময়ের অর্ধেক ইংরেজি ও গণিত এবং বাকি অর্ধেক সময় অন্য বিষয়গুলোতে মনোযোগ দেয়া যেতে পারে। কোন প্রশ্নের উত্তর প্রথম দেখায় করতে না পারলে সেটি নিয়ে বসে থেকে সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না।

      নার্ভাসনেসঃ অনেক পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রেই এই সমস্যাটি দেখা যায়। পড়াশোনা, জানা ও বোঝা অনেক ভালো হওয়া সত্ত্বেও কেউ কেউ পরীক্ষার হলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। মূলত আত্মবিশ্বাসহীনতা এবং কখনো কখনো শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে এমন হয়ে থাকে। এ ধরনের সমস্যা কারো থেকে থাকলে তার অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিৎ।

      প্রশ্ন কমন না পড়াঃ প্রশ্ন কমন না পড়বার কারণেও অনেকে ফেল করেন। দেখা যায়, অনেক পড়াশোনা করেও অনেকের প্রশ্ন কমন আসে না। কারণ তারা সিলেবাস ঠিক মতো এ্যানালাইসিস না করেই পড়াশোনা করে থাকেন। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে বিপিএসসি প্রণীত সম্পূর্ণ সিলেবাস ভালো ভাবে যাচাই করে কী কী পড়তে হবে আর কী কী বাদ দেয়া যাবে সেটি সবার প্রথমেই ঠিক করে নিতে হবে। মনে রাখবেন, বাংলা এবং ইংরেজি সাহিত্য, সাধারণ জ্ঞানের বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী অনেক পড়লেও সব প্রশ্ন কমন পাবেন না। অন্যদিকে গণিত, মানসিক দক্ষতা, সাধারণ বিজ্ঞান, তথ্য-প্রযুক্তি, বাংলা ও ইংরেজি ব্যাকরণ ইত্যাদি বিষয়গুলোতে দক্ষ হয়ে উঠতে পারলে পরীক্ষায় প্রশ্ন কমন পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। এক্ষেত্রে যে ট্রিকি বিষয়টি মাথায় রাখা দরকার সেটি হচ্ছে, যে প্রশ্নটা অনেক পড়ে কমন পাবেন আর যে প্রশ্নটা কম পড়ে কমন পাবেন- সে দুটির জন্যই কিন্তু বরাদ্দকৃত নম্বর সমান।

      অন্ধ অনুকরণঃ অমুক ভাই এতো জানে! আমাকেও জানতে হবে। কিম্বা তমুক আপু ওইভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে! আমাকেও ওই সিস্টেমই ফলো করতে হবে- এমন মানসিকতাও কিন্তু বিসিএস পরীক্ষায় ফেল করবার কারণ হতে পারে। এ ধরনের অন্ধ অনুকরণ প্রবনতা মানসিক চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। অভিজ্ঞদের পরমার্শ অবশ্যই নিতে হবে। তবে নিজের প্রস্তুতি নিজের মতো করে নিতে পারলেই ভালো।

      রিভিশনে ঘাটতিঃ এটা বিসিএস প্রিলি উৎরাতে না পারার একটা অন্যতম বড় কারণ। বিসিএস প্রিলিতে ভালো ফল করতে চাইলে স্মার্ট-রিভিশন সার্কেল ফলো করার কোন বিকল্প আসলে নেই। (স্মার্ট-রিভিশন সার্কেল বিষয়ে বিসিএস প্রিলিমিনারি প্রস্তুতি নেওয়ার কিছু কার্যকরী উপায় অংশে বিস্তারিত লেখা আছে)।

      নেতিবাচক মনোভাবঃ অনেকে আছেন যারা ভাবেন যে, চাকরির বয়স থাকাকালে বিসিএস তো বেশ কযেকবারই দেয়া যায়, তাই এবার না হলেও পরের বার ঠিকই হয়ে যাবে। এই ধরনের মনোভাব আসলে আত্মঘাতী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়। এ বছর আপনি যে যে কারণে পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারছেন না সেই সকল কারণ যে আগামী বছরও আপনার জীবনে থাকবে না তার কোন গ্যারান্টি কিন্তু কেউই দিতে পারবে না। তাই বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে চাইলে সিরিয়াস আপনাকে হতেই হবে।

      উপরে উল্লেখিত কারণসমূহ ছাড়াও অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি, আড্ডাবাজি, আলসেমি ইত্যাদি বিষয়গুলোও বিসিএস প্রিলিতে ফেল করবার কারণের মধ্যে পড়ে। আসল কথা হচ্ছে, যা যা আপনার যথাযথ প্রস্তুতিকে ব্যাহত করবে তার সবই আপনার বিসিএস প্রিলিতে সাফল্য বঞ্চিত হবার কারণ হিসাবে পরিগণিত হবে। পরীক্ষার্থীদের এই কথা সব সময় মাথায় রাখতে হবে যে, প্রস্তুতি যতো সঠিক হবে, বিসিএস প্রিলিতে সাফল্য পাওয়া ততো সহজ হবে।

      শেষ কথাঃ

      ধৈর্য ধরে এই আর্টিকেলটি পড়েছেন মানে হচ্ছে আপনি সত্যি সত্যিই মন থেকে একজন বিসিএস ক্যাডার হবার স্বপ্ন দেখেন। আপনাকে ঠেকানোর সাধ্য আর কারো নেই। এখন শুধু দরকার এই গাইডলাইন অনুসারে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করে দেয়া। দেরি না করে সেটি শুরু করে দিন এখনি। আশা করি Live MCQ-এর সাথে আপনার এই বিসিএস যাত্রা স্মরণীয় হবে। আপনার জন্য রইলো অশেষ শুভ কামনা।

      FAQ:


      প্রশ্নঃ দিতে কত পয়েন্ট লাগে?

      উত্তরঃ শিক্ষা জীবনে একের অধিক তৃতীয় শ্রেণী (3rd Class) থাকলে বিসিএস পরীক্ষায় আবেদন করতে পারবেন না।

      প্রশ্নঃ বিসিএস ক্যাডার কয়টি?

      উত্তরঃ জেনারেল এবং কারিগরি বা প্রফেশনাল এই দুটি মূল বিভাগের অধীনে মোট বিসিএস ক্যাডারের সংখ্যা ২৬টি।

      প্রশ্নঃ ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষা কবে হতে পারে?

      উত্তরঃ আগামী ২৬ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে ৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

      প্রশ্নঃ বিসিএস প্রিলিতে পাস মার্ক কত?

      উত্তরঃ বিসিএস প্রিলিতে কোন নির্দিষ্ট পাস মার্ক নেই। আছে “কাট মার্ক।” ধরুন, কোন এক বিসিএস প্রিলিতে মোট ১০০০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছেন। এর মধ্য থেকে বিপিএসসি (পিএসসি) সর্বোচ্চ ৫০ জন পরীক্ষার্থীকে পাশ করানোর সিদ্ধান্ত নিলো। এখন মেধা তালিকার ৫০তম অবস্থানে যিনি থাকেন তার প্রাপ্ত নাম্বারকেই “কাট মার্ক” বলে। এই কাট মার্ক প্রতি বছরই পরিবর্তিত হয়।

      প্রশ্নঃ বিসিএস প্রিলির কত দিন পর লিখিত পরীক্ষা হয়?

      উত্তরঃ প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শেষ হবার পর বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য গড়ে মোটামুটি ৬-৭ মাস সময় হাতে পাওয়া যায়।

      প্রশ্নঃ বিসিএস পরীক্ষা কত বছর পর পর হয়?

      উত্তরঃ সাধারণত প্রতি বছরই বিসিএস ক্যাডার নিয়োগ করবার লক্ষ্যে পিএসসি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং পরীক্ষা পরিচালনা করে থাকে।

      প্রশ্নঃ বিসিএস প্রস্তুতি নিতে কতদিন লাগে?

      উত্তরঃ যতো আগে বিসিএস প্রস্তুতি শুরু করতে পারবেন ততোই আপনার জন্য ভালো হবে। অনার্স ভর্তির পর থেকেই প্রস্তুতি নেয়া শুরু করে দিন। কোন কারণে সেটা সম্ভব না হলে Live MCQ-এর ২০০ দিন, ১৪০ দিন, ১০০ দিন এবং শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি হিসাবে ৩৫ দিনের রুটিন ফলো করলে যথাযথভাবে সিলেবাস শেষ করবার মাধ্যমেও প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারবেন।