যেভাবে সাজাবেন বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট

যেহেতু বিসিএস এর লিখিত পরীক্ষার একটি অংশ এবং ভাইভা পরীক্ষার প্রশ্নের ধরন এসব কিছুই প্রার্থীর ক্যাডার চয়েসের লিস্টের উপর নির্ভর করে, সেহেতু আবেদনের শুরুতেই বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।কিন্তু বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর সময় প্রার্থীরা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হন তা হল বিভিন্ন ক্যাডার সার্ভিস সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য না জানা এবং যেসব বিষয় বিবেচনা করে ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাতে হয় তা সম্পর্কে ভালো ধারনা না থাকা।

নতুন প্রার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে ইতোমধ্যে কর্মরত আছেন এবং বিসিএস পরীক্ষায় আবেদন করতে চাচ্ছেন এমন প্রার্থীদের জন্যও ক্যাডার চয়েস লিস্টটি কীভাবে সাজানো উচিত তা জানা খুবই জরুরি।

আপনি যে অবস্থানেই থাকুন না কেন বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোট ২৬টি ক্যাডারের মধ্য থেকে কীভাবে আপনার জন্য বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাবেন সবই জানবেন আজকের এই ব্লগে।কোন ক্যাডার আগে রাখবেন কোন ক্যাডার পরে আজকের পর এই বিষয়ে আর কোন কনফিউশন থাকবে না। তাছাড়া জেনারেল / সাধারণ ক্যাডার, টেকনিক্যাল / প্রফেশনাল ক্যাডার, বোথ ক্যাডার এসব নিয়েও কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকবে না। এছাড়াও জানতে পারবেন বিভিন্ন ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা, অসুবিধা, পদক্রম সহ নানান বিষয় যেন আপনার বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্টটি সাজাতে সুবিধা হয়।

বিসিএস ক্যাডার কয়টি ও কী কী?

বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর পূর্বে আপনাকে প্রথমেই বিসিএস ক্যাডারের ধরনগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। চলুন বিসিএস ক্যাডার কয়টি ও কী কী এবং এর ধরনগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। বিসিএস ক্যাডার সাধারণত ২ ধরনের হয়ে থাকে।

১। সাধারণ ক্যাডার (General Cadre)

২। কারিগরি ক্যাডার (Technical Cadre) / পেশাগত ক্যাডার (Professional Cadre)

এই দুই ধরনের ক্যাডারের মধ্যে সর্বমোট ২৬টি ক্যাডার রয়েছে যার মধ্যে ১৪টি সাধারণ ক্যাডার এবং ১২টি পেশাগত বা, কারিগরি ক্যাডার ।

একজন চাকরি প্রার্থী শুধুমাত্র সাধারণ ক্যাডার, শুধুমাত্র প্রফেশনাল ক্যাডার, এবং (সাধারণ ও প্রফেশনাল ক্যাডার) বা Both Cadre (উভয় ক্যাডার) – এই ৩ ভাবেই ক্যাডার চয়েস করে আবেদন করতে পারেন। নিম্নে এই ৩ ধরনের ক্যাডার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।

বিসিএস সাধারণ ক্যাডার (BCS General Cadre):

বিসিএস সাধারণ ক্যাডার (General Carder) এর পদগুলো বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্যাডারগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্য সকল প্রার্থীই আবেদনের সময় সাধারণ ক্যাডার (General Cadre) চয়েস করতে পারে। অর্থাৎ প্রার্থী যে বিষয়েই তার স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রী অর্জন করুন না কেন তিনি ১৪টি সাধারণ ক্যাডারের সবগুলোই চয়েস দিতে পারবেন।

কোন প্রার্থী যদি বিসিএস পরীক্ষার জন্য শুধুমাত্র সাধারণ ক্যাডার (General Cadre) চয়েস দিয়ে আবেদন করেন এবং ২০০ নম্বরের বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন, তবে তাকে সাধারণ ক্যাডারের জন্য নির্দিষ্ট ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

বিসিএস পেশাগত ক্যাডার (BCS Professional Cadre) / বিসিএস কারিগরি ক্যাডার (BCS Technical Cadre):

নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে পড়াশোনা করা প্রার্থীরা পেশাগত ক্যাডার (Professional Cadre) বা, কারিগরি ক্যাডার (Technical Cadre) পদ গুলোর জন্য আবেদন করতে পারেন। যেমন – চিকিৎসা, প্রকৌশল, কৃষি ইত্যাদি বিষয়ে পড়াশোনা সম্পন্ন করা প্রার্থীরা এই পদ গুলোর জন্য আবেদন করার সুযোগ পান। পেশাগত ক্যাডার এবং কারিগরি ক্যাডার ছাড়াও এই প্রার্থীরা একই সাথে জেনারেল ক্যাডারেও আবেদন করার সুযোগ পান। পেশাগত ক্যাডার (Professional Cadre) বা, কারিগরি ক্যাডার (Technical Cadre) এর সংখ্যা সর্বমোট ১২ টি।

কোন প্রার্থী যদি বিসিএস পরীক্ষার জন্য শুধুমাত্র পেশাগত ক্যাডার (Professional Cadre) বা কারিগরি ক্যাডার (Technical Cadre) চয়েস দিয়ে আবেদন করেন এবং বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তবে তাকে পেশাগত ক্যাডার বা কারিগরি ক্যাডারের জন্য নির্দিষ্ট ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।এই ক্ষেত্রে জেনারেল ক্যাডারের লিখিত পরীক্ষার জন্য যে নির্দিষ্ট ৯০০ নম্বরের সিলেবাস ছিল সেখান থেকে বাংলা ২য় পত্র এবং বিজ্ঞানের ২০০ নম্বর বিয়োগ হয়ে মোট ৭০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে সাধারণ ক্যাডার (General Cadre) সিলেবাস থেকে। এবং প্রার্থী যে বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন সেই নির্দিষ্ট বিষয় থেকে ২০০ নম্বরের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

অর্থাৎ সাধারণ ক্যাডারের সিলেবাস থেকে ৭০০ নম্বর ও স্নাতক বা সমমান পর্যায়ে অধ্যয়নকৃত বিষয় থেকে ২০০ নম্বর সহ মোট ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

উভয় ক্যাডার (Both Cadre):

যদি কোন প্রার্থী সাধারণ ক্যাডার এবং পেশাগত বা কারিগরি ক্যাডার উভয় ধরনের ক্যাডার সিলেক্ট করে বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এই প্রিক্রিয়াকে Both Cadre বা উভয় ক্যাডার চয়েস বলা হয়। Both Cadre চয়েস দিয়ে যদি কোন প্রার্থী বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তাহলে লিখিত পরীক্ষায় ঐ প্রার্থীকে সাধারণ ক্যাডার (General Cadre) এর জন্য নির্দিষ্ট ৯০০ নম্বর এবং স্নাতক পর্যায়ে নিজের পঠিত বিষয় থেকে ২০০ নম্বর সহ মোট ১১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। চলুন দেখে নেওয়া যাক সর্বমোট ২৬ টি ক্যাডারের সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

ক্যাডার কোড ও ক্যাডারের ধরনসহ বিসিএস ক্যাডার তালিকা (BCS Cadre List with Code):

২০২৪ সালের সর্বশেষ হালনাগাদকৃত তথ্য অনুযায়ী ক্যাডার কোড, ক্যাডারের ধরন সহ বিসিএস ক্যাডার তালিকা নিম্নে দেওয়া হলঃ

ক্যাডারের ধরন
[Type of cadre]
ক্যাডারের নাম
[Cadre Name]
ক্যাডার কোড
[Cadre Code]
সাধারণ ক্যাডার
[মোট ১৪টি]
বিসিএস এডমিন ক্যাডার [প্রশাসন]১১০
বিসিএস আনসার ক্যাডার১১৮
বিসিএস অডিট ক্যাডার [নিরীক্ষা ও হিসাব]১১২
বিসিএস সমবায় ক্যাডার১১৯
বিসিএস ট্যাক্স ক্যাডার [শুল্ক ও আবগারি]১১৩
বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডার১২৪
বিসিএস খাদ্য ক্যাডার১১১
বিসিএস ফরেন ক্যাডার [পররাষ্ট্র]১১৫
বিসিএস তথ্য ক্যাডার১২১ / ১২২ / ১২৩
বিসিএস পুলিশ ক্যাডার১১৭
বিসিএস ডাক ক্যাডার১১৬
বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডার [পরিবহণ ও বাণিজ্যিক]১২৫
বিসিএস ট্যাক্স ক্যাডার [কর]১১৪
বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডার১২০
পেশাদার/কারিগরি ক্যাডার
[মোট ১২টি]
বিসিএস কৃষি ক্যাডার২২৬/২২৭/২২৯
বিসিএস মৎস্য ক্যাডার২৪০/২৪৪/২৪৫/২৪৮/২৫৩/২৬১/২৬৩
বিসিএস বন ক্যাডার৫৫০
বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার৪১০/৪৫০
বিসিএস পশু সম্পদ ক্যাডার২৭০/২৮১
বিসিএস জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ক্যাডার৩২০
বিসিএস গণপূর্ত ক্যাডার৩১১/৩১২
বিসিএস রেলওয়ে প্রকৌশল ক্যাডার৩৫১/৩৫২
বিসিএস সড়ক ও জনপদ ক্যাডার৩৩১/৩৩২
বিসিএস পরিসংখ্যান ক্যাডার৫৪০
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারবিষয় সংশ্লিষ্ট কোড
বিসিএস কারিগরি শিক্ষা ক্যাডারবিষয় সংশ্লিষ্ট কোড

যেসব বিষয় বিবেচনায় রেখে বিসিএস ক্যাডার চয়েজ লিস্ট তৈরি করতে হবে:

যেসব বিষয় বিবেচনায় রেখে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাবেন

বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনের পূর্বেই আপনাকে কাগজে কলমে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্টের একটি খসড়া সাজিয়ে ফেলতে হবে যেন আবেদনের সময় কোন প্রকার ভুল হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে। আবেদনের সময় তাৎক্ষণিক ক্যাডার চয়েসের সিদ্ধান্ত নিতে গেলে ভুল করার সম্ভাবনা বেড়ে যায় তাই আগে থেকে কাগজে কলমে এটা সাজিয়ে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।

ক্যাডার চয়েস লিস্টটি সাজানোর সময় বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। আপনার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পছন্দ, চাকরির সুযোগ সুবিধা, কর্মস্থল এবং কর্মস্থলের পরিবেশ, প্রমোশন ও পদসোপান, আর্থিক সচ্ছলতা ও সামাজিক মর্যাদা ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনা করে একজন আপনি বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাতে পারেন।

ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পছন্দ: আবেদনের সময় আপনি আপনার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পছন্দের উপর ভিত্তি করে ক্যাডার চয়েজ লিস্ট তৈরি করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি যদি পুলিশ ক্যাডারের প্রতি Passionate হোন, তাহলে অবশ্যই আপনার উচিত হবে পুলিশ ক্যাডারকেই প্রথম চয়েসে রাখা। আবার অনেকেই বিসিএস স্বাস্থ্য বা শিক্ষার প্রতি Passionate থাকেন, সেক্ষেত্রে সেই ক্যাডারই প্রথমে রাখা উচিত। অনেক ক্ষেত্রে আপনার পারিবারিক পছন্দও ক্যাডার চয়েজ লিস্ট তৈরিতে প্রাধান্য পেতে পারে।


বেতন, ভাতা ও অর্থনৈতিক সচ্ছলতা: সকল ক্যাডার পদেরই বেসিক বেতন প্রায় একই রকম হলেও অনেক ক্যাডারেই অতিরিক্ত দায়িত্ব, বিভিন্ন কমিটি প্রধান হিসাবে দায়িত্ব ইত্যাদি নানা কারণে বেতনের বাইরেও অতিরিক্ত ও বৈধ আয়ের সুযোগ থাকে। বেতনের বাইরে এই সুবিধাগুলো অর্থনৈতিক সচ্ছলতা নিয়ে আসে যা অবশ্যই ক্যাডার চয়েজ করার সময় বিবেচনা করা উচিত।

পদের দায়িত্ব ও সামাজিক মর্যাদা: বিসিএস ক্যাডার সার্ভিসের বিভিন্ন পদে সামাজিক মর্যাদা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন ক্যাডার পদের দায়িত্ব এবং সামাজিক মর্যাদা ভিন্ন হয়ে থাকে। তাছাড়া অনেকেই কোন একটা নির্দিষ্ট ক্যাডারের দায়িত্ব সম্পর্কে Passionate হতে পারেন, সেক্ষেত্রে সেই ক্যাডারটি পছন্দের তালিকায় শুরুর দিকে রাখা উচিত।

প্রমোশন ও পদসোপান, কর্মস্থল ও কাজের পরিবেশ: আপনি যে ক্যাডার পদটি সবার আগে রাখতে চান, সেই পদের প্রমোশন কত দ্রুততম সময়ে হয়, সর্বোচ্চ পদ কী, কর্মস্থলের পরিবেশ কেমন ইত্যাদি বিবেচনা করা ক্যাডার চয়েজ লিস্ট তৈরি করা উচিত।

যে ক্যাডারগুলো পেতে বেশি নম্বরের প্রয়োজন হয়:

বিসিএস পরীক্ষাগুলোতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা গড়ে ৩.৫ – ৪.৫ লাখ পর্যন্ত হয়ে থাকে, বিপরীতে পদের সংখ্যা গড়ে ৩-৫ হাজার। এত বিপুলসংখ্যক প্রার্থীকে পেছনে ফেলে কাঙ্ক্ষিত ক্যাডার পাওয়া অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। এই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বিভিন্ন ক্যাডার পদ প্রাপ্তির জন্য তুলনামূলক কম-বেশি নম্বরের প্রয়োজন হয়।

এক্ষেত্রে কিছু ক্যাডার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বেশি নম্বর প্রয়োজন হলেও কিছু ক্যাডারের জন্য তুলনামূলক কম নম্বর পেলেও চলে। বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর সময় নম্বর প্রাপ্তির এই বিষয়টিকেও প্রাধান্য দেওয়া যেতে পারে। তুলনামূলক যে ক্যাডারগুলো পেতে অধিক নম্বর পাওয়ার প্রয়োজন হয়, সেগুলো ক্রমানুসারে সাজানো হলো –

  • বিসিএস পররাষ্ট্র
  • বিসিএস প্রশাসন/পুলিশ
  • বিসিএস কাস্টমস/ট্যাক্স/অডিট
  • বিসিএস আনসার/তথ্য
  • বিসিএস খাদ্য/রেলওয়ে
  • বিসিএস তথ্য (বেতার অনুষ্ঠান/ বার্তা)
  • বিসিএস সমবায়/ডাক/পরিবার পরিকল্পনা

বেশি নম্বর প্রাপ্তির ভিত্তিতে উপরের ক্যাডারের ক্রমটি সাজানো হয়েছে। বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর সময় বেশি নম্বর লাগে এমন ক্যাডার গুলো প্রথমদিকে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ বিসিএস পরীক্ষার লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পূর্বে আপনি কেমন নম্বর পাবেন তা সম্পর্কে আপনার কোন ধারণা থাকে না।

তাই কম নম্বর লাগে এমন ক্যাডার যদি আপনি প্রথম দিকে রাখেন এবং পেয়েও যান তাহলে পরবর্তীতে অনুতাপ করার একটা প্রবণতা দেখা যায়। তাই বেশি নম্বর লাগে এমন ক্যাডারগুলো প্রথমদিকে এবং তুলনামূলক কম নম্বর লাগে এই পদগুলো পরের দিকে রাখাই শ্রেয়। তবে প্রার্থীর কাঙ্ক্ষিত পছন্দ উল্লিখিত ক্যাডারের ক্রম থেকে ব্যতিক্রম হলে এই লিস্টে পরিবর্তন করা যাবে।

Install Live MCQ App Button

যাভাবে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাবেন:

উভয় ক্যাডারের ক্ষেত্রে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট (Both Cadre BCS Choice List):

Both Cadre এর ক্ষেত্রে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট

Both Cadre এ আবেদন করার বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। যেমন – Both Cadre এ আবেদন করলে একজন প্রার্থীর ক্যাডার প্রাপ্তির সুযোগ অনেক বেড়ে যায়। যেহেতু সকল প্রার্থীই জেনারেল ক্যাডার চয়েস করতে পারেন, সেহেতু জেনারেল ক্যাডার গুলো পেতে একজন প্রার্থীকে অনেক বেশি সংখ্যক প্রার্থীর সাথে প্রতিযোগিতা করতে হয়।

অপরদিকে টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল ক্যাডারের ক্ষেত্রে প্রার্থীকে শুধু তার নিজের সাবজেক্ট এর উপর পড়াশোনা সম্পন্ন করা প্রার্থীদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হয়। এক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা কম হওয়ায় ক্যাডার প্রাপ্তির সুযোগ অনেক বেশি বেড়ে যায়। তাই ক্যাডার চয়েজের ক্ষেত্রে Both Cadre চয়েস করাটাই উত্তম।

বিভিন্ন দৃশ্যপট থেকে একজন প্রার্থী Both Cadre চয়েস দিতে চাইলে কিভাবে তার বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্টটি কীভাবে সাজাতে পারেন তা বাস্তবসম্মত ভাবে নিম্নে তুলে ধরা হল।

(পদ্ধতি-১) ইংরেজিতে দক্ষতার উপর নির্ভর করে:

ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা থাকলে একজন প্রার্থী পররাষ্ট্র ক্যাডারকে পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রেখে তার ক্যাডার চয়েজ লিস্ট সাজাতে পারেন। ইংরেজিতে ভালোভাবে কথা বলার দক্ষতার উপর ভিত্তি করে পররাষ্ট্র ক্যাডার কে প্রথম চয়েজ দিতে পারেন অথবা ক্যাডার চয়েজের তালিকা থেকে পররাষ্ট্র ক্যাডারটি বাদ দিতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার ক্যাডার চয়েস লিস্টটি হতে পারে নিম্নরূপ-

পররাষ্ট্র [ইংরেজি স্পিকিং ভাল হওয়ার সাপেক্ষে]

প্রশাসন/পুলিশ

পুলিশ/প্রশাসন

ট্যাক্স/কাস্টমস

কাস্টমস/ট্যাক্স

অডিট/আনসার

আনসার/অডিট

সমবায়/তথ্য

তথ্য/সমবায়

খাদ্য/পরিবার পরিকল্পনা

পরিবার পরিকল্পনা/খাদ্য

বাণিজ্য/ডাক

ডাক/বাণিজ্য

রেলওয়ে পরিবহণ ও বাণিজ্য

শিক্ষা ক্যাডার/স্বাস্থ্য ক্যাডার/প্রকৌশলী/অন্যান্য টেকনিক্যাল ক্যাডার

ইংরেজিতে ভালো ভাবে কথা বলার দক্ষতার উপর ভিত্তি করে পররাষ্ট্র ক্যাডার কে প্রথম চয়েস দিতে পারেন অথবা ক্যাডার চয়েস তালিকা থেকে পররাষ্ট্র ক্যাডার বাদ দিতে পারেন।

(পদ্ধতি-২) প্রফেশনাল / টেকনিক্যাল ক্যাডার ২য় অবস্থানে রেখে:

যারা শিক্ষা ক্যাডারসহ নিজের অধীনে থাকা বিভিন্ন প্রফেশনাল ক্যাডার ও টেকনিক্যাল ক্যাডার ২য় অবস্থানে রেখে বিসিএস ক্যাডার চয়েজ লিস্ট সাজাতে চান, তারা নিম্নোক্ত পদ্ধতিতে ক্যাডার চয়েজের তালিকাটি সাজাতে পারেন।

প্রশাসন/পুলিশ

সাধারণ শিক্ষা/টেকনিক্যাল ক্যাডার/প্রফেশনাল ক্যাডার

ট্যাক্স/কাস্টমস

কাস্টমস/ট্যাক্স

অডিট/আনসার

আনসার/অডিট

সমবায়/তথ্য

তথ্য/সমবায়

খাদ্য/পরিবার পরিকল্পনা

পরিবার পরিকল্পনা/খাদ্য

বাণিজ্য/ডাক

ডাক/বাণিজ্য

রেলওয়ে পরিবহণ ও বাণিজ্য

টেকনিক-৩ প্রফেশনাল / টেকনিক্যাল ক্যাডার ১ম অবস্থানে রেখে:

যারা স্নাতক ও সমমানের পর্যায়ে নিজের অধ্যয়নকৃত বিষয়ের উপর ভিত্তি করে এর অধীনে থাকা ক্যাডারগুলো পছন্দের তালিকায় প্রথমে রেখে আবেদন করতে চান, অর্থাৎ টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল ক্যাডার ১ম স্থানে রেখে আবেদন করতে চান তারা নিম্নোক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করে ক্যাডার চয়েজের তালিকাটি সাজাতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার ক্যাডার চয়েস লিস্ট হতে পারে নিম্নরূপ –

সাধারণ শিক্ষা/টেকনিক্যাল ক্যাডার/প্রফেশনাল ক্যাডার

প্রশাসন/পুলিশ

ট্যাক্স/কাস্টমস

কাস্টমস/ট্যাক্স

অডিট/আনসার

আনসার/অডিট

সমবায়/তথ্য

তথ্য/সমবায়

খাদ্য/পরিবার পরিকল্পনা

পরিবার পরিকল্পনা/খাদ্য

বাণিজ্য/ডাক

ডাক/বাণিজ্য

রেলওয়ে পরিবহণ ও বাণিজ্য

শুধু ১টি (জেনারেল / টেকনিক্যাল / প্রফেশনাল) ক্যাডার চয়েস লিস্ট (General / Professional Cadre BCS Cadre Choice List):

যেকোন একটি! সাধারণ ক্যাডার Vs প্রফেশনাল ক্যাডার

শিক্ষাগত কারণে অনেক বিষয়ে অধ্যয়ন করা প্রার্থীরা বিভিন্ন টেকনিক্যাল ও প্রফেশনাল ক্যাডারে আবেদন করতে পারেন না। তাই সেসকল প্রার্থীরা বাধ্য হয়েই কেবল জেনারেল ক্যাডারের পদগুলোতে আবেদন করেন। বিপরীতে অনেক প্রার্থী শুধু তাদের নিজের অধ্যয়ন করা বিষয়ের উপর চাকরি করতে চান। ফলে তারা শুধু তার বিষয়ের অধীনে থাকা টেকনিক্যাল ও প্রফেশনাল ক্যাডার গুলো চয়েস দিয়ে আবেদন করেন।

(পদ্ধতি-১) শুধু জেনারেল ক্যাডার চয়েস:

যে-সকল প্রার্থীর স্নাতক বা সমমানের পর্যায়ে অধ্যয়নকৃত বিষয়ের অধীনে কোন টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল ক্যাডার নেই অথবা যে-সকল প্রার্থী ঐচ্ছিক ভাবেই ভাবেই বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্টে শুধু জেনারেল ক্যাডার রাখতে চান তারা নিম্নোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করে তাদের বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্টটি সাজাতে পারেন।

পররাষ্ট্র (ইংরেজি স্পিকিং স্কিল ভাল হলে)

প্রশাসন / পুলিশ

পুলিশ / প্রশাসন

ট্যাক্স / কাস্টমস

কাস্টমস / ট্যাক্স

অডিট / আনসার

আনসার / অডিট

সমবায় / তথ্য

তথ্য / সমবায়

খাদ্য / পরিকল্পনা

পরিবার পরিকল্পনা / খাদ্য

বাণিজ্য / ডাক

ডাক / বাণিজ্য

রেলওয়ে পরিবহণ ও বাণিজ্য

ইংরেজিতে ভালোভাবে কথা বলার দক্ষতার উপর ভিত্তি করে পররাষ্ট্র ক্যাডার কে প্রথম চয়েস দিতে পারেন অথবা ক্যাডার চয়েস তালিকা থেকে পররাষ্ট্র ক্যাডার বাদ দিতে পারেন।

(পদ্ধতি-২) শুধু টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল ক্যাডার চয়েজ:

যদি কোন প্রার্থী শুধু তার অধ্যয়নকৃত বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ক্যাডার চয়েজ করতে চান, তবে তিনি শুধু তার স্নাতক পর্যায়ে পঠিত বিষয়ের অধীনে থাকা টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল ক্যাডারটি চয়েজ করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে প্রার্থীর চয়েজ করা ক্যাডারের সংখ্যা হবে ১টি। যেমন –

১। সাধারণ শিক্ষা / টেকনিক্যাল ক্যাডার / প্রফেশনাল ক্যাডার

Install Live MCQ App Button

বিভিন্ন ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা ও অসুবিধা:

সকল ক্যাডারের দায়িত্ব, সুবিধা-অসুবিধা ইত্যাদি খুঁটিনাটি জানা থাকলে বিসিএস ক্যাডার চয়েসের পছন্দক্রম তৈরি করা সহজ হয়। এই অংশে তাই প্রধান প্রধান ক্যাডারগুলোর সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:

❐ বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার:

পররাষ্ট্র ক্যাডারটি অন্য ক্যাডারের তুলনায় ব্যতিক্রম। পররাষ্ট্র ক্যাডারের জন্য আসন সংখ্যা সচরাচর অন্যান্য ক্যাডারের চেয়ে কম থাকে বিধায় প্রতিযোগিতা হয় সবচেয়ে বেশি। তাই বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের পররাষ্ট্র ক্যাডারটি পেতে একজন প্রার্থীর সবচেয়ে বেশি নম্বর অর্জন করতে হয়।

এই ক্যাডারটির জন্য পিএসসি সবসময় স্মার্ট প্রার্থী বাছাই করে। ইংরেজি ভাষার উপর বিশেষ দক্ষতা, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি যেমন ভূ-রাজনীতি, কূটনীতি, সামরিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা ইত্যাদি সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান ও আগ্রহ থাকলেই পররাষ্ট্র ক্যাডারটি বিসিএস ক্যাডার চয়েজ লিস্টের সর্বপ্রথমে (১ম অবস্থানে) রাখতে পারেন। তবে পছন্দের তালিকার ১ম অবস্থানে কোন কারণে পররাষ্ট্র ক্যাডারটি না রাখতে চাইলে ঐ ক্যাডারটি অন্য কোন অবস্থানে রাখার প্রয়োজন নেই।

বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:

  • পররাষ্ট্র ক্যাডারের উপর কোন রাজনৈতিক চাপ না থাকায় স্বাধীন ভাবে নিজের কাজ পরিচালনা করার সুযোগ রয়েছে।
  • এই ক্যাডারের কর্মকর্তারা পরিবারসহ কূটনৈতিক পাসপোর্ট লাভ করেন এবং ভিআইপি সুবিধা লাভ করে থাকেন।
  • অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের শুরুতেই অধিদপ্তরে কাজ করতে হলেও পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তারা শুরুতেই মন্ত্রণালয়ে পদায়িত হন।
  • দূতাবাসে পদায়ন হলে পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তারা তাদের নিয়মিত বেতনের পাশাপাশি অতিরিক্ত ১২০০ ডলার মাসিক ভাতা প্রাপ্ত হয়ে থাকেন।
  • বিদেশে থাকা অবস্থায় ট্যাক্স বিহীন গাড়ি ও অন্যান্য পণ্য ক্রয়ের সুবিধা লাভ করেন।
  • দেশে ও বিদেশে সরকারি খরচে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেয়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন।
  • বিদেশের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানগুলোতে পরিবারসহ কূটনৈতিক মর্যাদায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাওয়া যায়।
  • পররাষ্ট্র ক্যাডারের প্রতিনিধি কম থাকার রাষ্ট্রদূত পর্যন্ত পদোন্নতির সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের অসুবিধা:

  • চাকরির শুরুতে কোনো গাড়ি দেওয়া হয় না। তখন Shared ট্রান্সপোর্টে যাতায়াত করতে হয়।
  • কর্মজীবনের শুরুতেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব পদে নিয়োগ প্রদান করা হয় যেখানে প্রশিক্ষণমূলক কাজ হিসেবে টাইপিং থেকে শুরু করে সকল দাপ্তরিক কাজ করতে হয়।
  • একজন পররাষ্ট্র ক্যাডার চাকরির শুরুতে দুই বছর পর্যন্ত বা চাকরি স্থায়ী না হওয়া পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কর্মরত থাকেন এবং পরবর্তী ছয় বছরে দুইটি মিশনে দেশের বাইরে কর্মরত থাকেন। পরবর্তীতে আবার দুই বছরের জন্য দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়য়ে পদায়িত হন। ফলে কর্মজীবনে এক জায়গায় বেশিদিন থাকার নিশ্চয়তা থাকে না।

পররাষ্ট্র ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:

মন্ত্রনালয়ের জন্য প্রযোজ্য:

সচিব/পররাষ্ট্রসচিব

অতিরিক্ত পররাষ্ট্রসচিব

মহাপরিচালক

পরিচালক

সিনিয়র সহকারী সচিব

সহকারী সচিব

মিশনের জন্য প্রযোজ্য (দূতাবাসে পদায়ন হলে):

অ্যাম্বাসেডর/হাইকমিশনার

মিনিস্টার

কাউন্সিলর

১ম/২য় সচিব

৩য় সচিব

❐ বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার:

বহুমুখী দায়িত্ব পালনের জন্য বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারকে সবচেয়ে বেশি বৈচিত্র্যময় ক্যাডার বলা হয়ে থাকে। সরকারের সকল ধরনের প্রশাসনিক কাজ পরিচালনা করে থাকেন একজন প্রশাসন ক্যাডার। সকল ক্যাডারের সমন্বয়ে কাজ করা এই ক্যাডার অন্যান্য ক্যাডারের চেয়ে অধিক ক্ষমতাবান হলেও কর্মক্ষেত্রে রয়েছে বেশ কিছু সুবিধা ও অসুবিধা। সংক্ষেপে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো আলোচনা করা হল।

বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:

  • বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের মধ্য থেকে ৮০ শতাংশ কর্মকর্তারই সচিবালয়ে নিয়োগ হয়। তাই প্রশাসন বা এডমিন ক্যাডার হতে পারলে সচিবালয়ে পদোন্নতি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

  • প্রশাসন ক্যাডারের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে এর কাজের বৈচিত্র্য। একজন প্রশাসন ক্যাডার তার কর্মজীবনে বিভিন্ন অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে কাজ করার সুযোগ পান।
  • যোগদানের পর থেকে একজন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন মেয়াদী প্রশিক্ষণের সুযোগ পান। এছাড়া সরকারি বৃত্তি নিয়ে বিদেশে মাস্টার্স এবং পিএইচডি করারও সুযোগ রয়েছে।
  • স্থানীয় পর্যায়ে প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার সুযোগ ও পেয়ে থাকেন।
  • প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ সরকার থেকে গাড়ি এবং বাংলোর সুবিধা পেয়ে থাকেন।
  • প্রশাসন ক্যাডারের প্রশাসনিক এবং সামাজিক মর্যাদা অনেক বেশি।

বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের অসুবিধা:

  • বিসিএস প্রশাসন/এডমিন ক্যাডারের উপর অন্যান্য ক্যাডারদের তুলনায় রাজনৈতিক চাপ অনেক বেশি থাকে। ফলে এই ক্যাডারে থেকে স্বাধীনভাবে কাজ পরিচালনা করার সুযোগ অনেক সীমিত।

  • অন্যান্য ক্যাডারের চেয়ে প্রশাসন ক্যাডারের কাজের বৈচিত্র্য বেশি হওয়ায় এই পদে বদলিও খুব বেশি হয়।

প্রশাসন ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:

সিনিয়র সচিব

সচিব

অতিরিক্ত সচিব

যুগ্ম সচিব

উপসচিব

সিনিয়র সহকারী সচিব

বিভাগীয় কমিশনার এবং কেন্দ্রীয় প্রশাসনে সহকারী সচিব

জেলা প্রশাসক

সিনিয়র সহকারী কমিশনার/উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা/অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক

সহকারী কমিশনার

❐ বিসিএস পুলিশ ক্যাডার:

দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে দেশ ও দেশের মানুষকে মাঠ পর্যায় থেকে সেবা প্রদান করার সুযোগ রয়েছে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার এই পুলিশ ক্যাডারের পদায়ন, পদোন্নয়ন, বদলিসহ অন্যান্য বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। অন্যান্য ক্যাডারের মতো পুলিশ ক্যাডারেও রয়েছে নানান সুযোগ সুবিধা এবং অসুবিধা। সংক্ষেপে পুলিশ ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা ও অসুবিধাগুলো আলোচনা করা হল।

বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:

  • রাজশাহীর সারদা একাডেমিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করার সুযোগ রয়েছে।
  • এই ক্যাডারে নিজের এবং পরিবারের জন্য সরকারি রেশন পাওয়া যায়।
  • একজন পুলিশ ক্যাডার চাকরির শুরুতেই গাড়ি, বাংলো বডিগার্ডসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধাদি প্রাপ্ত হবেন।
  • বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের জন্য সরকারি খরচে দেশে ও দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • জাতিসংঘের নিরাপত্তা মিশনে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে যেখান থেকে প্রতি মিশনে অনেক টাকার সম্মানী পাওয়া যায়।
  • দেশের নিরাপত্তামূলক পরিকল্পনাগুলো ফ্রন্টলাইনার হয়ে বাস্তবায়নের সুযোগ পাওয়া যায়।
  • এই ক্যাডারে থেকে নিকট আত্মীয়স্বজন এবং অসহায় মানুষদের সরাসরি আইনি সাহায্য সহযোগিতা করা যায়।

বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের অসুবিধা:

  • দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সরাসরি ফ্রন্টলাইনার হিসেবে জড়িত থাকায় পুলিশ ক্যাডার একটি ঝুঁকিপূর্ণ পেশা হিসেবে বিবেচিত।
  • কোন নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা না থাকায় পুলিশ ক্যাডারের চাকরিতে প্রয়োজনে ২৪ ঘণ্টাই ডিউটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ফলে পরিবারকে সময় দেওয়া ও ওয়ার্ক – লাইফ ব্যালেন্স করার সুযোগ এই ক্যাডারে কম থাকে।
  • দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে জড়িত থাকায় এই ক্যাডারে কোন বড় ছুটি পাওয়া যায় না।
  • বিভিন্ন রাজনৈতিক চাপের জন্য স্বাধীন ভাবে কাজ করা করার সুযোগ কম থাকে।

পুলিশ ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:

চাকরির শুরুতে একজন পুলিশ ক্যাডার সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন যা অন্যান্য বিসিএস ক্যাডারের মতো সরকারি বেতন স্কেল নবম গ্রেডের অন্তর্ভুক্ত। একজন পুলিশ ক্যাডার বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়োগ প্রাপ্ত হতে পারেন।

পুলিশের অন্যান্য অঞ্চল ও মেট্রোপলিটন অঞ্চলের পদক্রম ও পদসোপানের উপর ভিত্তি করে একজন পুলিশ ক্যাডারের পদক্রম বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে যা নিম্নে তুলে ধরা হল।

সাধারণ পুলিশ অঞ্চলগুলোতে পদায়ন হলে

আইজিপি

অতিরিক্ত আইজিপি

ডিআইজি

অতিরিক্ত ডিআইজি

পুলিশ সুপার

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার

সহকারী পুলিশ সুপার

মেট্রোপলিটন এলাকায় পদায়ন হলে:

পুলিশ কমিশনার

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার

যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)

উপ-পুলিশ কমিশনার

সহকারী পুলিশ কমিশনার

❐ বিসিএস কাস্টমস্‌ ক্যাডার [শুল্ক ও আবগারি]

নিরিবিলি কর্ম পরিবেশের জন্য এবং রাজনৈতিক চাপ না থাকায় অনেকে কাস্টমস ক্যাডারকে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্টের প্রথমে রাখেন। সরকারের রাজস্ব আদায় করা এই ক্যাডারের কাজ।দেশের রাজস্ব আয়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব এই ক্যাডারের কর্মকর্তাদের অধীনে থাকে বিধায় বিসিএস কাস্টমস ক্যাডার অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয় একটি পদ।

বিসিএস কাস্টমস্‌ ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:

  • চাকরির শুরুতেই কাস্টমস্‌ ক্যাডারদের যাতায়াতের জন্য গাড়ির সুবিধা দেওয়া হয়।
  • বিসিএস কাস্টমস্‌ ক্যাডারে বৈধভাবে অনেক বেশি আয়ের সুযোগ রয়েছে। রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া বিভিন্ন চোরাচালান ধরিয়ে দিতে পারলে মূল্য ভেদে ১০-৪০% পর্যন্ত পুরষ্কার পাওয়া যায়।
  • এই ক্যাডারে শুল্ক গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে যেখানে ট্যাক্স রিটার্ন অডিট করে কর ফাঁকি উদ্‌ঘাটন করা থেকে শুরু করে যথাযথ কর নির্ধারণ করার সুযোগ রয়েছে।
  • সরকারি খরচে দেশের বাইরে মাস্টার্স ও পিএইচডি এর মতো উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস কাস্টমস্‌ ক্যাডারের অসুবিধা:

  • দপ্তর ভেদে বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারের চাকরিতে অনেক কাজের চাপ থাকে।
  • এই ক্যাডার দুর্নীতির জন্য অধিক সমালোচিত।
  • এই ক্যাডারে পদোন্নতি মোটামুটি ভালো; তবে ৩১তম বিসিএসে এই পদে অনেক বেশি নিয়োগ হওয়ায় পরবর্তীতে আটটি বিসিএসে এই পদে বেশি শূন্য পদ চোখে পরে নি।

বিসিএস কাস্টমস্‌ ক্যাডারের পদক্রম/পদসোপান:

বিসিএস কাস্টমস ক্যাডার অন্যান্য ক্যাডারের মতোই সরকারি বেতন স্কেল ৯ম গ্রেড থেকে কর্মজীবন শুরু করে। কর্মজীবনে বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারের বিভিন্ন সময় বদলি ও পদোন্নতি হয়ে থাকে।

এনিবিআর সদস্য

কমিশনার

অতিরিক্ত কমিশনার

যুগ্ম কমিশনার

উপ-কমিশনার

সহকারী কমিশনার

 

  • এছাড়াও একজন কাস্টমস্‌ ক্যাডারের ট্রেনিং একাডেমি ও অন্যান্য দপ্তরের পরিচালক, উপপরিচালক, যুগ্ম পরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, মহাপরিচালক প্রভৃতি পদে পদায়ন হয়ে থাকে
  • পাশাপাশি একজন কাস্টমস ক্যাডার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান (ইনকাম ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট প্রভৃতি উইংয়ের প্রধান) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

বিসিএস অডিট ক্যাডার:

সরকারি ব্যয় কার্যক্রম পরিচালনার সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয় সম্পর্কে হিসাব ও নিরীক্ষা করাই বিসিএস অডিট ক্যাডার (নিরীক্ষা ও হিসাব) এর কাজ। অডিট বা নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারের রয়েছে অডিট অধিদপ্তর ও অ্যাকাউন্টস বিভাগ নামে ২টি বিভাগ।

বিসিএস অডিট ক্যাডারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা, অসুবিধা ও পদক্রম নিম্নে তুলে ধরা হল:

বিসিএস অডিট ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:

  • সরকারি প্রায় সকল বিভাগের ব্যায় সংশ্লিষ্টতা থাকায় প্রতিটি বিভাগেই অডিট ক্যাডার রয়েছে। তাই এই ক্ষেত্রে কাজের বৈচিত্র্য দেখার সুযোগ রয়েছে।
  • দেশ ও বিদেশে সরকারি খরচে প্রশিক্ষণে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • সরকারি অডিট প্রতিষ্ঠানগুলো ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড অব সুপ্রিম অডিট ইনস্টিটিউশন (আইএসএআই) এর নীতিমালা অনুসরণ করে পরিচালিত হয় বিধায় কাজের পরিবেশ ভালো।
  • চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পরেও বিভিন্ন কোম্পানি ও অডিট ফার্ম থেকে অডিট পরিচালনা করার প্রস্তাব আসে।
  • অন্যান্য ক্যাডারের মতো রাজনৈতিক চাপ না থাকায় স্বাধীন ভাবে কাজ পরিচালনা করার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস অডিট ক্যাডারের অসুবিধা:

  • এই ক্যাডারের বিরুদ্ধে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ থাকে।

বিসিএস অডিট ক্যাডারের পদক্রম ও গ্রেড:

  • পদায়ন ঢাকায় হলে হিসাব ভবন অফিসের কন্ট্রোলার জেনারেল অব অ্যাকাউন্টস (সিজিএ) অফিস প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার অধীনে অ্যাডিশনাল সিজিএ, ডেপুটি সিজিএ, অ্যাসিস্ট্যান্ট সিজিএ দায়িত্ব পালন করে থাকেন। আবার ঢাকায় মন্ত্রণালয়ভিত্তিক ৫২টি চিফ অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফাইন্যান্স (সিএএফও) অফিস আছে যেখানে প্রধান হিসেবে দায়িত্বপালনের সুযোগ রয়েছে যার অধীনে অ্যাসিস্ট্যান্ট সিএএফও, ডেপুটি সিএএফও দায়িত্ব পালন করেন।
  • এছাড়াও ঢাকা হেড অফিসে কন্ট্রোলার জেনারেল অব ডিফেন্স ফাইন্যান্স (সিজিডিএফ) বিভাগের প্রধান হিসেবে একজন বিসিএস অডিট ক্যাডার দায়িত্ব পালন করেন। তার অধীনে জয়েন্ট সিজিডিএফ, ডেপুটি সিজিডিএফ এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট সিজিডিএফ দায়িত্ব পালন করেন।
  • পদায়ন ঢাকা বা অন্যান্য বিভাগীয় শহরে হলে বিভাগীয় পর্যায়ে আট বিভাগে আটজন ডিভিশনাল কন্ট্রোলার অব অ্যাকাউন্টস (ডিসিএ) অফিস প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার অধীনে ডেপুটি ডিসিএ অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিসিএ কাজ করে থাকেন।

❐ বিসিএস ট্যাক্স ক্যাডার:

আয়কর নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) এর শাখায় কাজ করেন বিসিএস কর ক্যাডার বা বিসিএস ট্যাক্স ক্যাডার।সরকারের সরাসরি প্রত্যক্ষ কর নিয়ে এই ক্যাডার কাজ করে থাকে। কর বা ট্যাক্স সার্ভিসের মূল কাজ করনীতি প্রণয়ন করা, ট্যাক্স রিটার্ন, ট্যাক্স রিটার্ন অডিট, কর ফাঁকি উদঘাটন, কর জরিপ করা, উৎসে কর কর্তন মনিটরিং করা, চলতি কর, বকেয়া কর ও অগ্রিম কর আদায় করা ইত্যাদি।

বিসিএস ট্যাক্স/কর ক্যাডারের সুবিধা:

  • কর ফাঁকি ধরতে পারলে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ প্রণোদনা দেয়া হয়।
  • নভেম্বর ছাড়া বছরের অন্যান্য সময়ে কাজের পরিমাণ তেমন থাকে না।
  • সরকারি খরচে দেশে, বিদেশে ট্রেনিং এ যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • ৫ম গ্রেড থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস ট্যাক্স ক্যাডার / কর ক্যাডারের অসুবিধা:

  • এই বিভাগের ঊর্ধ্বতন পদগুলোতে প্রশাসন ক্যাডার থেকে পদায়ন হয় বিধায় পদোন্নতি পেয়ে শীর্ষস্থানে যাওয়া একটু কঠিন।
  • খুব অল্প সংখ্যক জনবল নিয়ে কাজ করতে হয় বিধায় বছরের শেষ সময়ে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় অনেক কাজের চাপ থাকে।
  • শুরুতেই ব্যক্তিগত গাড়ি পাওয়া যায় না।
  • এই ক্যাডারে নিজের জেলায় পদায়নের সুযোগ নেই তবে আশেপাশের জেলাগুলোতে আসার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস ট্যাক্স/কর ক্যাডারের পদক্রম বা পদসোপান:

কর বা ট্যাক্স ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ বাংলাদেশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য। একজন বিসিএস কর ক্যাডার সহকারী কর কমিশনার হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় পদোন্নতি এবং বদলির মাধ্যমে কর কমিশনার এবং সদস্য হিসেবে পদায়ন হন।

সদস্য [রাজস্ব বোর্ড]

কর কমিশনার

অতিরিক্ত কর কমিশনার

যুগ্ম কর কমিশনার

উপ-কর কমিশনার

সহকারী কর কমিশনার

❐ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার:

সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ক্যাডার রয়েছেন বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে। সরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকতা করে এবং শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের বিভিন্ন পদে কাজ করে সরকারের শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করাই শিক্ষা ক্যাডারের দায়িত্ব। সংখ্যায় অধিক হওয়ার পরেও সুযোগ সুবিধার দিক থেকে অন্যান্য ক্যাডার থেকে কিছুটা পিছিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত ক্যাডারগন।

বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:

  • এই ক্যাডারে নিজের জেলায় পদায়নের সুযোগ রয়েছে।
  • শিক্ষকতা পেশা ভালো লাগলে এই ক্যাডার আপনার ভালো লাগবেই।
  • শিক্ষকতা পেশায় জড়িত থাকতে হয় বিধায় এই ক্যাডারে মাঠপর্যায়ে শিক্ষার মানোন্নয়নের সুযোগ রয়েছে।
  • ট্রেনিং, খাতা মূল্যায়ন, পরীক্ষার ডিউটি – ইত্যাদির মাধ্যমে অতিরিক্ত আয়ের সহজ সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের অসুবিধা:

  • বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে অন্যান্য ক্যাডারের তুলনায় সুযোগ সুবিধা অনেক কম।
  • এই ক্যাডারে পদোন্নতি কিছুটা ধীর হয়।

শিক্ষা ক্যাডার পদক্রম:

সরকারি কলেজে পদায়ন হলে

প্রফেসর/অধ্যাপক

অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর/সহযোগী অধ্যাপক

অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর/সহকারী অধ্যাপক

লেকচারার/প্রভাষক

 

  • এছাড়াও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি কলেজগুলোর বিভাগীয় প্রধান এবং কলেজের প্রিন্সিপাল এই শিক্ষা ক্যাডার থেকেই হয়ে থাকে।
  • এছাড়াও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিভিন্ন পদে ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন শাখায় শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ পদায়িত হন।

❐ বিসিএস খাদ্য ক্যাডার:

দেশের খাদ্যের উৎপাদন, বিপণন ও বিতরণের সাথে সরাসরি যুক্ত থাকেন বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ। একদম তৃণমূল পর্যায় থেকে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এই ক্যাডারের বিচরণ থাকে।

বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের সুবিধা:

  • কোন রাজনৈতিক চাপ থাকেনা বিধায় স্বাধীনভাবে কাজ পরিচালনা করা যায়।
  • মন্ত্রণালয় থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ থাকায় কাজের বৈচিত্র্য রয়েছে।
  • সরাসরি বাংলাদেশের কৃষিতে উন্নয়ন করার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের অসুবিধা:

  • এই ক্যাডারে চলাচলের জন্য ব্যক্তিগত গাড়ি পাওয়ার সুযোগ নেই।
  • অন্যান্য ক্যাডারের মতো সরকার কর্তৃক প্রদত্ত কোন প্রণোদনা এই ক্যাডারে থাকে না।

বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের পদক্রম:

  • এই ক্যাডারে চাকরির শুরুতেই খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে মন্ত্রণালয়য়ে নিয়োগ প্রদান করা হয়। সেখান থেকে খাদ্য অধিদপ্তরে এবং পরে জেলা পর্যায়ে পদায়ন করা হয়।

❐ বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডার:

দেশের আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের সাম্যাবস্থা ঠিক রাখার দায়িত্বে নিযুক্ত থাকেন বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ। বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় মিটানোর জন্য অনেকটাই রপ্তানি আয়ের উপর নির্ভর করতে হয়। তাই এই ক্যাডারটি সরকারের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।

বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারের সুবিধা:

  • সরকারি খরচে বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • কর্মজীবনের শুরুতেই ট্রান্সপোর্টের জন্য ব্যাক্তিগত গাড়ি প্রদান করা হবে।
  • এই ক্যাডারে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
  • বাণিজ্য ক্যাডারে দ্রুত পদোন্নতি পাওয়া যায়।

বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারের অসুবিধা:

  • এই ক্যাডারে ঘন ঘন বদলি লক্ষ্য করা যায়।
  • ভবিষ্যতে এই মন্ত্রণালয়ের সাথে প্রশাসন ক্যাডার যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিধায় উচ্চপদস্থ পদগুলো প্রশাসন ক্যাডার থেকে পদায়ন হতে পারে।
  • প্রশাসন ক্যাডারের সাথে একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্তে একীভূত হওয়ায় ভবিষ্যতে বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডার বিলুপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে।

বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারের পদক্রম:

  • বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদে বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারগন তাদের কর্মজীবন শুরু করেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিসিসি), প্রতিযোগিতা কমিশন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও ফরেইন ট্রেড ইন্সটিটিউটে বাণিজ্য ক্যাডারদের পদায়ন হয়।

❐ বিসিএস আনসার ক্যাডার:

সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তা রক্ষা, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, জননিরাপত্তামূলক কাজ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, দারিদ্র বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন ও বিভিন্ন আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে কাজ করে আসছে বিসিএস আনসার ক্যাডার। এই ক্যাডারের সরাসরি আইন প্রয়োগ করার সুযোগ না থাকলেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সাহায্য করে এই আনসার।

বিসিএস আনসার ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:

  • চাকরির শুরুতেই বাড়ি, গাড়ি ও বডিগার্ডের সুবিধা পাওয়া যায় যা সাধারণত পুলিশ ক্যাডাররা পেয়ে থাকেন।
  • এই ক্যাডারে নিজের এবং পরিবারের জন্য সরকারি রেশন পাওয়া যায়।

বিসিএস আনসার ক্যাডারের অসুবিধা:

  • সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল কর্মকর্তাদের আনসারের সর্বোচ্চ মহাপরিচালক পদের নিয়োগ দেওয়া হয় বিধায় আনসার ক্যাডার থেকে আনসারের সর্বোচ্চ পদে পদায়ন পাওয়া যায় না।
  • সরাসরি আইন প্রয়োগ করার ক্ষমতা না থাকায় আনসার ক্যাডারের প্রভাব পুলিশ ক্যাডারের চেয়ে কম।

বিসিএস আনসার ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:

কর্মজীবনের শুরুতেই বিসিএস আনসার ক্যাডারগন আনসার ও ভিডিপি অধিদপ্তরের অধীনে সহকারী জেলা অ্যাডজুট্যান্ট বা সহকারী পরিচালক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় বদলি ও পদোন্নতি হয়ে দেশের ৮টি প্রধান শহরের আনসার রেঞ্জ ও হেডকোয়ার্টারে পদায়ন হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বিসিএস আনসার ক্যাডারের পদসোপান হয় নিম্নরূপ-

উপ মহাপরিচালক/ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল

পরিচালক/ডিরেক্টর

উপ পরিচালক/ডেপুটি ডিরেক্টর

সহকারী জেলা অ্যাডজুট্যান্ট/সহকারী পরিচালক

❐ বিসিএস তথ্য ক্যাডার:

সরকারের বিভিন্ন কাজের তথ্য উপাত্ত সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছে দেন তথ্য ক্যাডার। এই ক্যাডারের অধীনে তথ্য সাধারণ, তথ্য বেতার বার্তা ও তথ্য বেতার অনুষ্ঠান নামে ৩ তি সাব ক্যাডার রয়েছে।

বিসিএস তথ্য ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:

  • সহজেই মিডিয়ায় পরিচিত তৈরি হয়।
  • কোন রাজনৈতিক চাপ থাকেনা বিধায় স্বাধীনভাবে কাজ পরিচালনা করার সুযোগ রয়েছে।
  • তথ্য ক্যাডারের চাকরিতে পুল সিস্টেমের মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির অফিসে তথ্য কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস তথ্য ক্যাডারের অসুবিধা:

  • এই ক্যাডারের কাজের পরিধি অনেক কম হওয়ার প্রশাসনিক ক্ষমতা ও সম্মান খুব কম।
  • নিয়মিত মিডিয়ার সামনে আসতে হয় বিধায় সমালোচিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • অতীতে তথ্য ক্যাডারের কর্মরত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি পাওয়ার জটিলতা দেখা গেছে এবং পদোন্নতি না পেয়েও অবসরে যাওয়ার ঘটনা রয়েছে।

বিসিএস তথ্য ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:

  • বিসিএস তথ্য ক্যাডারের মধ্যে আরও ৩ ধরনের (সাধারণ ক্যাডার) রয়েছে। এই ৩টি সাধারণ ক্যাডারের মধ্যে রয়েছে সহকারী পরিচালক (তথ্য), সহকারী পরিচালক (অনুষ্ঠান), এবং সহকারী বার্তা নিয়ন্ত্রক।
  • সহকারী পরিচালক (তথ্য) এর ক্ষেত্রে একজন তথ্য ক্যাডার সহকারী পরিচালক / তথ্য অফিসার / গবেষণা কর্মকর্তা / সমমানের পদে তার কর্মজীবন শুরু করেন। এবং বাকী দুই ক্যাডারের ক্ষেত্রে সহকারী পরিচালক অনুষ্ঠান ও সহকারী বার্তা নিয়ন্ত্রক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এছাড়াও বিসিএস তথ্য ক্যাডারের মধ্যে সহকারী বেতার প্রকৌশলী আরেকটি (টেকনিক্যাল ক্যাডার) রয়েছে ।
  • একজন তথ্য ক্যাডার বিভিন্ন বদলি ও পদোন্নতির মাধ্যমে যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব, সিনিয়র সহকারী সচিব, উপসচিব এবং সিনিয়র সচিব হিসেবে পদায়ন হতে পারেন।

❐ বিসিএস ডাক ক্যাডার:

ডাক বিভাগের সকল কাজের দায়িত্ব পালন করে বিসিএস ডাক ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ। সরকারি চিঠি আদান প্রদান থেকে শুরু করে মানি অর্ডার, ব্যক্তিগত চিঠি, ডাক বিভাগের সঞ্চয়ী হিসাব ও অন্যান্য দাপ্তরিক কাজগুলোর তত্ত্বাবধান করেন এই ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ।

বিসিএস ডাক ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:

  • বিসিএস ডাক ক্যাডারে কোন রাজনৈতিক চাপ না থাকায় স্বাধীন ভাবে কাজ সম্পাদন করা যায়।

  • ডাক ক্যাডারে কাজের চাপ তুলনামূলক কম ও পর্যাপ্ত ছুটি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • শুরুতেই জেলা শহরে অথবা ঢাকায় পোস্টিং এই ক্যাডারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক।
  • ডাক বিভাগের সর্বোচ্চ পদ মহাপরিচালক পর্যন্ত পদোন্নতি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • বিসিএস ডাক ক্যাডার থেকে প্রশাসন ক্যাডারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস ডাক ক্যাডারের অসুবিধা:

  • প্রথম প্রমোশনে একটু বিলম্ব হতে পারে (সামনে যদি বড় ব্যাচ থাকে)।
  • বেতন ছাড়া খুব বেশি বাড়তি আয়ের সুযোগ নেই।

বিসিএস ডাক ক্যাডারের পদসপান / পদক্রম:

মহাপরিচালক

অতিরিক্ত মহাপরিচালক

পোস্ট-মাস্টার জেনারেল

অতিরিক্ত পোস্ট-মাস্টার জেনারেল

ডেপুটি পোস্ট-মাস্টার জেনারেল

সিনিয়র সহকারী পোস্ট-মাস্টার জেনারেল

সহকারী পোস্ট-মাস্টার জেনারেল

❐ বিসিএস সমবায় ক্যাডার:

বিভিন্ন সমবায় সমিতির লাইসেন্স প্রদান করা এবং নিয়মিত অডিট করাই একজন বিসিএস সমবায় ক্যাডারের কাজ। এই ক্যাডার মাঠ পর্যায়ে সমবায় ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করেন।

বিসিএস সমবায় ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:

  • এই ক্যাডারে কোন রাজনৈতিক চাপ থাকেনা বিধায় স্বাধীন ভাবে কাজ করার সুযোগ পান।
  • সমবায় ক্যাডারে কাজের চাপ তুলনামূলক কম।
  • পদোন্নতি দ্রুত হয়।
  • চাকরির শেষদিকে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, দপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের সচিব হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস সমবায় ক্যাডারের অসুবিধা:

  • এই ক্যাডারে কোনো আবাসন বা ট্রান্সপোর্টের সুবিধা পাওয়া যায় না।
  • প্রশাসনিক সম্মান এবং ক্ষমতা এই ক্যাডারে তুলনামূলক কম।

সমবায় ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:

সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক / রেজিস্ট্রার

অতিরিক্ত নিবন্ধক/এডিশনার রেজিস্ট্রার

বিভাগীয় সমবায় অফিসে যুগ্ম নিবন্ধক / জয়েন্ট রেজিস্ট্রার

উপ-নিবন্ধক/ডেপুটি রেজিস্ট্রার

জেলা সমবায় অফিসার

সহকারী নিবন্ধক

  • এছাড়াও একজন সমবায় ক্যাডার তার কর্মজীবনে সরকারি আদেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, দপ্তর, মন্ত্রণালয়ের কাজ করার এবং সচিব হওয়ারও সুযোগ পান।

❐ বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডার [সাধারণ]

সরকারের পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সকল কার্যক্রম পরিচালনা এবং তদারকি করাই পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের কাজ। এই ক্যাডারের পদায়ন পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সহ বিভাগীয়, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে হয়ে থাকে। একজন পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের সাধারণ জনগণের সাথে মাঠ পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:

  • এই ক্যাডারে কাজের চাপ তুলনামূলক অনেক কম থাকে।

  • রাজনৈতিক চাপ থাকে না বিধায় ইচ্ছা স্বাধীন কার্য পরিচালনা করার সুযোগ রয়েছে।
  • মাঠ পর্যায়ে থেকে সরকারি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সুযোগ রয়েছে।
  • একটি নির্দিষ্ট সময় পরে এই ক্যাডার থেকে প্রশাসন ক্যাডারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের অসুবিধা:

  • এই ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রশাসন ক্যাডারের অধীনে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর অধীনে কাজ করতে হয়।
  • প্রশাসনিক এবং সামাজিক মূল্যায়ন অন্যান্য ক্যাডারের তুলনায় অনেক কম।

বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের পদক্রম/পদসোপান:

পরিচালক [ডিজি]

অতিরিক্ত পরিচালক

উপ-পরিচালক

সহকারী পরিচালক

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা

❐ বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডার:

রেলওয়ে পরিবহণ, উন্নয়ন ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করাই বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডারের কাজ। এই ক্যাডার মূলত রেলওয়ের যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ, সেবার উন্নয়ন এবং প্রশাসনিক কাজটি নিশ্চিত করেন।

বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:

  • রেলওয়ে ক্যাডারে পর্যাপ্ত ছুটি পাওয়া যায়। 
  • রাজনৈতিক চাপ না থাকায় স্বাধীনভাবে কর্ম পরিচালনা করা যায়। 
  • একটি নির্দিষ্ট সময় রেলওয়ে ক্যাডারে সার্ভিস দেওয়ার পর প্রশাসন ক্যাডারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। 
  • কাজের চাপ তুলনামূলক কম। 

বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডারের অসুবিধা:

  • রেলওয়ে ক্যাডারে পদোন্নতি অনেক ধীর গতিতে হয়।
  • বিভিন্ন সরকারি প্রণোদনা প্রাপ্তির সুযোগ এই ক্যাডারে কম থাকে। 
  • পদোন্নতি পেয়ে সর্বোচ্চ উচ্চপদস্থ স্থান মহাপরিচালক পদে পদায়নের সম্ভাবনা কম। কারণ মহাপরিচালক পদে টেকনিক্যাল ক্যাডার থেকে পদায়ন করা হয়ে থাকে।

রেলওয়ে ক্যাডারের পদক্রম/পদসোপান:

  • একজন রেলওয়ে পরিবহণ ও বাণিজ্যিক ক্যাডার (সাধারণ ক্যাডার) হিসেবে সহকারী ট্র্যাফিক সুপারিনটেনডেন্ট হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। এছাড়াও রেলওয়ে প্রকৌশল নামক (টেকনিক্যাল ক্যাডার) হিসেবে একজন রেলওয়ে ক্যাডার সহকারী যন্ত্র প্রকৌশলী এবং সহকারী যন্ত্র নিয়ন্ত্রক হিসেবে তার কর্মজীবনের সূচনা করেন। 
  • একজন রেলওয়ে ক্যাডার তার কর্মজীবনে বিভিন্ন সময়ে বদলি ও পদোন্নতির মাধ্যমে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব, উপসচিব, সহকারী সচিব এবং সচিব পদে পদায়ন হতে পারেন। তবে রেলওয়ের মহাপরিচালক পদে সাধারণত টেকনিক্যাল ক্যাডার থেকে পদায়ন হতে দেখা যায়।

সর্বোপরি বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর পূর্বে একজন প্রার্থীকে অনেকগুলো দিক বিবেচনা করতে হয়। সামগ্রিক সকল দিক বিবেচনা করে কিভাবে আপনি আপনার বিসিএস ক্যডার চয়েস লিস্ট সাজাতে পারেন তা সম্পর্কে এই ব্লগে আপনাদের ধারনা দেওয়া হল। সকল দিক বিবেচনা করে নিজের ব্যাক্তিগত পছন্দ কে প্রাধান্য দিয়ে নিজের বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট টি সাজান।

Install Live MCQ App Button

বিসিএস ক্যাডার চয়েস সংক্রান্ত সচরাচর জিজ্ঞাসা কিছু প্রশ্নের উত্তর:

প্রশ্নঃ বিসিএস এর পূর্ণরূপ কি

উত্তরঃ বিসিএস এর পূর্ণরূপ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস।

প্রশ্নঃ বিসিএস ক্যাডার কয়টি

উত্তরঃ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস বা বিসিএস ক্যাডার সর্বমোট ২৬ টি। পূর্বে বিসিএস ক্যাডারের সংখ্যা আরও বেশি থাকলেও কিছু ক্যাডার বিলুপ্ত হয়ে বর্তমানে এই সংখ্যা ২৬ টি হয়েছে।

প্রশ্নঃ সাধারণ ক্যাডার কি?

উত্তরঃ বিসিএস ক্যাডার সার্ভিসের যে পদগুলোর মধ্যে সকল বিভাগ থেকে অধ্যয়ন করা শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারেন, অর্থাৎ যে পদগুলোর জন্য কোন বিশেষ বিষয়ে পড়াশোনা দরকার পরে না সেই ক্যাডার গুলোকে সাধারণ ক্যাডার বলা হয়।

প্রশ্নঃ বিসিএস ক্যাডারের বেতন কত?

উত্তরঃ প্রত্যেক বিসিএস ক্যাডারই সরকারি বেতন স্কেল ৯ম গ্রেডে (২২০০০ – ৫৩০৬০ টাকা) থেকে তার কর্মজীবন শুরু করেন। পরে বিভিন্ন সময় পদোন্নতি এবং বদলির মাধ্যমে এই বেতন স্কেলের আরও উন্নতি হয়। বেতন ছাড়াও এই সার্ভিসে আরও নানান সুযোগ সুবিধা থাকে।

প্রশ্নঃ কোন ক্যাডার সবচেয়ে ভালো?

উত্তরঃ বিসিএস ক্যাডার সার্ভিসের কোন ক্যাডার সবচেয়ে ভালো তা যাচাই করা একটু কঠিন। কারন একেক জনের কাছে ভালোর সংজ্ঞা একেক রকম। তবে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা, ক্ষমতা ইত্যাদি দিক বিবেচনা করে পররাষ্ট্র, প্রশাসন, পুলিশ, কাস্টমস, ট্যাক্স, অডিট এই ক্যাডারগুলোকে এগিয়ে রাখা হয়।

প্রশ্নঃ বোথ ক্যাডার কি?

উত্তরঃ বোথ ক্যাডারের অর্থ হচ্ছে উভয় ক্যাডার। যদি কোন প্রার্থী একই সাথে জেনারেল এবং টেকনিক্যাল / প্রফেশনাল উভয় পদের ক্যাডার গুলো চয়েস করে বিসিএস এর ফরম পূরণ করেন তাহলে সেটিকে বোথ ক্যাডার বা উভয় ক্যাডার চয়েস বলা হয়।

প্রশ্নঃ কোন কোন সাবজেক্টে প্রশাসন ক্যাডার আছে?

উত্তরঃ যেহেতু বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার একটি জেনারেল ক্যাডার। তাই বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনের যোগ্য যে কেউই প্রশাসন ক্যাডারে আবেদন করতে পারবেন। প্রশাসন ক্যাডারের জন্য কোন বিশেষ বিষয়ে পড়াশোনা করার প্রয়োজন নেই।

প্রশ্নঃ প্রফেশনাল ক্যাডার কি?

উত্তরঃ মূলত পেশাদার ক্যাডারদেরই প্রফেশনাল ক্যাডার বলা হয়। আপনি যে বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রী অর্জন করেছেন বিসিএস ক্যাডার সার্ভিসে যদি আপনি নিজের বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত কোন ক্যাডার পদের জন্য আবেদন করেন তাহলে সেটিকে প্রফেশনাল ক্যাডার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 

প্রফেশনাল ক্যাডারের সাথে টেকনিক্যাল ক্যাডারও সম্পর্কিত রয়েছে। স্বাস্থ্য ক্যাডার, শিক্ষা ক্যাডার, প্রকৌশলী এসব ক্যাডারই প্রফেশনাল ক্যাডার বা টেকনিক্যাল ক্যাডারের অন্তর্ভুক্ত। 

৪২তম বিসিএস প্রিলিমিনারি মূল প্রশ্নের সমাধান PDF | 42 bcs question solution pdf

0 Comments

প্রিয় চাকরি প্রত্যাশীগণ ৪২তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF সংক্রান্ত ব্লগে আপনাদের স্বাগতম। আপনারা জানেন যে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে ৪২তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বিসিএসের মাধ্যমে শুধুমাত্র ডাক্তারদের নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো।[...]

১০ম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF | 10th BCS Question Solution PDF

0 Comments

প্রিয় চাকরি প্রার্থীগণ ১০ম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF সংক্রান্ত ব্লগে আপনাদের স্বাগতম। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে বিসিএস পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করার জন্য বিগত সময়গুলোতে অনুষ্ঠিত হওয়া বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধানের কোন বিকল্প নেই।[...]

১১তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF | 11th BCS Question Solution PDF

2 Comments

প্রিয় চাকরি প্রার্থীগণ ১১তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF সংক্রান্ত আলোচনায় আপনাদের স্বাগতম। আপনারা জানেন যে যেকোন চাকরির পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করতে উক্ত চাকরির পরীক্ষায় আসা বিগত সালের প্রশ্নগুলো সমাধান করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। বিসিএস[...]

১২তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF | 12th BCS Question Solution PDF

0 Comments

প্রিয় চাকরি প্রাত্যাশীগন ১২তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF সংক্রান্ত আলোচনায় আপনাদের স্বাগতম। বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার শুরুতেই আমরা বিগত সালের বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান অনুসরণ করতে পরামর্শ দিয়ে থাকি। এতে করে বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নের[...]

১৩তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF | 13th BCS Question Solution PDF

0 Comments

প্রিয় চাকরি প্রার্থীগণ ১৩তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF সংক্রান্ত আলোচনায় আপনাদের স্বাগতম। যেকোন চাকরির প্রস্তুতি শুরু করার আগে সেই চাকরির পরীক্ষায় আসা বিগত সালের প্রশ্নগুলো সমাধান করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা নিশ্চয়ই আপনাদের অজানা নয়।[...]

১৫তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF | 15th BCS Question Solution

0 Comments

প্রিয় চাকরি প্রত্যাশীগণ ১৫তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF সংক্রান্ত ব্লগে আপনাদের স্বাগতম। যেকোন চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির প্রারম্ভেই উক্ত চাকরির পরীক্ষায় আসা বিগত সালের প্রশ্নগুলো সমাধান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিসিএস পরীক্ষাও এর ব্যাতিক্রম নয়। কেননা[...]