ব্যাংক জব প্রস্তুতি যেভাবে শুরু করবেন | সম্পূর্ণ গাইডলাইন
প্রিয় চাকরিপ্রত্যাশীগণ, ব্যাংক জব প্রস্তুতি সংক্রান্ত আর্টিকেলে আপনাদেরকে স্বাগতম। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি ভালো চাকরি যেখানে সোনার হরিণ, সেখানে আশার আলো দেখাচ্ছে আমাদের ব্যাংকিং সেক্টর। দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া, দ্রুত পদোন্নতি, উন্নত বেতন কাঠামো, বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধাসহ নানা কারণে অন্যান্য চাকরির তুলনায় ব্যাংক জব বর্তমানে তরুণদের কাছে একটি আকাঙ্ক্ষিত চাকরিতে পরিণত হয়েছে।
বিসিএসসহ অন্যান্য চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা ব্যাংকের চাকরিকে করেছে আরও আকর্ষণীয়। বিগত কয়েক বছরের ব্যাংক নিয়োগের পরিসংখ্যান দেখলে এই বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়। এসব কারণে ব্যাংক জব সেক্টরে প্রতিযোগিতাও বেড়েছে আগের চেয়ে বহুগুণ। তাই ব্যাংকে চাকরি পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই ব্যাংক জব প্রস্তুতি নিয়ে সিরিয়াস হতে হবে।
এই আর্টিকেলটি পড়ার পর আপনার ব্যাংক জব প্রস্তুতি (Bank Job Preparation) নিয়ে আর কোন কনফিউশন থাকবে না। বিশেষত, যারা একদম নতুন অবস্থায় ব্যাংক জব প্রস্তুতি শুরু করতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য এই লেখাটি খুবই কাজে আসবে।
ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা: Bank Job Qualification
ব্যাংক জবের প্রিপারেশন শুরু করার পূর্বে অবশ্যই আপনার ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা সম্পর্কে একটি ধারনা থাকতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা নিয়ে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। সরকারি ব্যাংকগুলোর নিয়োগে সকল অনুষদের শিক্ষার্থীদের আবেদনের সুযোগ থাকলেও বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক সমমানের ডিগ্রীধারীদের প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে। নিম্নে বিভিন্ন ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হল –
সরকারি ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা:
সরকারি ব্যাংকে সাধারণত সিনিয়র অফিসার, অফিসার (জেনারেল), অফিসার (ক্যাশ), সিনিয়র অফিসার পদে নতুনদের সরাসরি নিয়োগ প্রদান করা হয়। যেকোনো অনুষদের স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রী অর্জনকারী প্রার্থীরাই এসব নিয়োগে আবেদন করতে পারেন। তবে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় নূন্যতম ১টি প্রথম শ্রেণি/বিভাগ থাকতে হবে এবং কোন পর্যায়ের ৩য় শ্রেণি/বিভাগ গ্রহণযোগ্য হবে না।
বর্তমানে জি.পি.এ পদ্ধতি চালু হওয়ায় ১ম, ২য়, ৩য় শ্রেণি/বিভাগ নিয়ে অনেক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে কনফিউশন তৈরি হতে পারে। গ্রেডিং পদ্ধতিতে প্রকাশিত ফলাফলের ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ ২০০৯ ও ২০১০ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি সমমান পরীক্ষার ক্ষেত্রে ও স্নাতক বা সমমানের পর্যায়ে জি.পি.এ বের করার পদ্ধতি আলোচনা করা হল –
এস.এস.সি / এইচ.এস.সি এর জন্য জিপিএ বের করার পদ্ধতি
শ্রেণি / বিভাগ | জি.পি.এ |
---|---|
প্রথম শ্রেণি / বিভাগ | জি.পি.এ ৩.০০ বা তদূর্ধ |
দ্বিতীয় শ্রেণি / বিভাগ | জি.পি.এ ২.০০ থেকে ২.৯৯ পর্যন্ত |
তৃতীয় শ্রেণি / বিভাগ | জি.পি.এ ১.০০ থেকে ১.৯৯ পর্যন্ত |
এস.এস.সি / এইচ.এস.সি এর জন্য জিপিএ বের করার পদ্ধতি
শ্রেণি / বিভাগ | জি.পি.এ |
---|---|
প্রথম শ্রেণি / বিভাগ | জি.পি.এ ৩.০০ বা তদূর্ধ |
দ্বিতীয় শ্রেণি / বিভাগ | জি.পি.এ ২.২৫ থেকে ২.৯৯ পর্যন্ত |
তৃতীয় শ্রেণি / বিভাগ | জি.পি.এ ১.৬৫ থেকে ২.২৪ পর্যন্ত |
এছাড়াও সরকারি ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকে বিভিন্ন সময় টেকনিক্যাল পদে লোকবল নিয়োগ প্রদান করা হয়। যেমন, ব্যাংকের IT (Information Technology) বা Accounting-এর মতো শাখায় নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে পারদর্শী ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এ ধরণের নিয়োগকে ‘Special Recruitment’ বলা হয়। এসব নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর আবেদনের যোগ্যতা পদভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি যোগ্যতা:
বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি যোগ্যতা অন্যান্য সরকারি ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতার অনুরূপ। অর্থাৎ, এক্ষেত্রেও সাধারণ (নন-টেকনিক্যাল) পদগুলোতে যেকোনো অনুষদ থেকে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রীধারী প্রার্থীরা আবেদন করতে পারেন। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক বা সমমানের পর্যায়ের যেকোন একটিতে প্রথম শ্রেণি / বিভাগ থাকলে এবং কোন পর্যায়ে তৃতীয় শ্রেণি/বিভাগ না থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাধারণ পদগুলোতে আবেদন করা যায়। এক্ষেত্রে সদ্য নিয়োগ প্রাপ্তদের জন্য সর্বোচ্চ পদটি হয় সহকারী পরিচালক (Assistant Director)।
প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা:
বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে চাকরির যোগ্যতা ও নিয়োগ প্রক্রিয়া সাধারণত ব্যাংকের নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী হয়ে থাকে। যেখানে অধিকাংশ ব্যাংকের নিয়োগ প্রক্রিয়া একই রকম হলেও কিছু কিছু ব্যাংকের ক্ষেত্রে ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।
বেসরকারি ব্যাংকগুলো তাদের চাহিদা অনুসারে ট্রেইনি অফিসার, প্রবেশনারি অফিসার, এক্সিকিউটিভ অফিসার, ট্রেইনি এসিস্ট্যান্ট অফিসার, জুনিয়র অফিসার, কাস্টমার সার্ভিস অফিসার, টেলর, সেলস অফিসার, রিলেশনশিপ অফিসার, ক্রেডিট অফিসার, অপারেশন অফিসার ইত্যাদি পদে নিয়োগ দিয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে, ব্যাংকভেদে নিয়োগ প্রক্রিয়া ভিন্ন হলেও ব্যাংকগুলো সাধারণত ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা ভালো সিজিপিএ প্রাপ্ত ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের প্রার্থীদের অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। প্রার্থীর Problem Solving Skills, Leadership Skills, English Language Proficiency Level, Computer Literacy Skill-এর মতো কিছু Extracurricular Activity-এর উপর অধিক গুরুত্ব দেয় ব্যাংকগুলো।
বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টর সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য
অনেকের মনেই বাংলাদেশের ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কিছু প্রশ্ন রয়েছে। যেমন – বাংলাদেশে বর্তমানে কতগুলো ব্যাংক অপারেশনে আছে, এরমধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের সংখ্যা কত ইত্যাদি। এই পর্যায়ে চলুন জেনে নেওয়া যাক বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো সম্পর্কে।
সরকারি ব্যাংক কয়টি ও কি কি?
বাংলাদেশে সরকার কর্তৃক পরিচালিত ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ব বাণিজ্যিক ব্যাংক রয়েছে। এই সরকারি ব্যাংকগুলো হল:
১। অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি
২। জনতা ব্যাংক পিএলসি
৩। রূপালী ব্যাংক পিএলসি
৪। সোনালী ব্যাংক পিএলসি
৫। বেসিক ব্যাংক পিএলসসি
৬। বাংলাদেশ ডেভলাপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি
উল্লেখিত এই ৬ টি ব্যাংক বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ব বণিজ্যিক ব্যাংক যার সম্পুর্ণ বা অধিকাংশ মালিকানাই বাংলাদেশ সরকারের।
বাংলাদেশের বেসরকারি ব্যাংক কয়টি ও কি কি?
বাংলাদেশে বর্তমানে সর্বমোট ৪৩ টি বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে যার বেশিরভাগই বিভিন্ন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন। এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে ৩৩ টি ব্যাংক গতানুগতিক ব্যাংকিং সেবা পরিচালনা করে এবং ১০ টি ব্যাংক ইসলামী শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকিং সেবা পরিচালনা করে আসছে। এছাড়াও রয়েছে ৪ টি বিশেষায়িত ব্যাংক, ৫ টি অতালিকাভূক্ত ব্যাংক, এবং ৯ টি বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকের চাকরির খবর পেতে নিয়মিত ব্যাংকগুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইটের Career পেইজে এবং সংবাদপত্রে চোখ রাখুন।
ব্যাংক জব পরীক্ষা পদ্ধতি
ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষায় ভালো করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ব্যাংক জব পরীক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা রাখতে হবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিসিএসসহ অন্যান্য চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার জন্য প্রশ্নের ধরন কাছাকাছি হয়ে থাকলেও ব্যাংক নিয়োগের প্রশ্নের ক্ষেত্রে এই বিষয়ে ভিন্নতা দেখা যায়। প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার আগে ব্যাংক নিয়োগের পরীক্ষা পদ্ধতি ও মানবণ্টনের দিকে আলোকপাত করা যাক। ব্যাংকে নিয়োগের প্রক্রিয়াটি সাধারণত ৩ ধাপে হয়ে থাকে।
সরকারি ব্যাংক জব পরীক্ষা পদ্ধতি ও নম্বর বন্টন
পরীক্ষার নাম | নম্বর |
---|---|
প্রিলিমিনারি পরীক্ষা | ১০০ নম্বর |
লিখিত পরীক্ষা | ২০০ নম্বর |
মৌখিক পরীক্ষা | ২৫ নম্বর |
যেকোন প্রতিযোগিতামূলক চাকরির পরীক্ষার ক্ষেত্রে প্রথম ধাপ প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। ব্যাংক জবের প্রিলিমিনারি পরীক্ষাও তার ব্যাতিক্রম নয়। এই পরীক্ষাগুলো সাধারণত MCQ ধরনের হয়ে থাকে। যেখানে ১০০ টি প্রশ্নের উত্তর করতে হয়ে ১ ঘণ্টায়। ব্যাংক নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার্থী বাদ পরেন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই একজন প্রার্থী পরবর্তী পরীক্ষা অর্থাৎ লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা পরবর্তীতে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকেন। এইক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষার নম্বর মৌখিক পরীক্ষার নম্বরের সাথে যুক্ত হয় যা মেধাতালিকার ভিত্তিতে প্রার্থীর চূড়ান্ত মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কাজে আসে। সরকারি ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষায় পদভেদে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নের ধরনে ভিন্নতা আসলেও নম্বর বণ্টনের ক্ষেত্রে সবগুলো প্রায় একই রকমের থাকে।
সরকারি ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার মানবন্টন
সরকারি ব্যাংক গুলোর প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় সাধারণত ১০০ নম্বরের MCQ পরীক্ষা হয়ে থাকে। এখানে প্রার্থীকে ১ ঘণ্টায় ১০০ টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। প্রতি প্রশ্নের সঠিক উত্তরের জন্য ১ নম্বর এবং ভুল উত্তরের জন্য – ০.২৫ নম্বর কর্তন করা হয়। বর্তমান সময়ে ব্যাংকের সাধারণ পদগুলোর জন্য প্রিলিমিনারি পরীক্ষার মানবন্টন হয় নিম্নরূপ –
সরকারি ব্যাংকের (সাধারণ) পদগুলোর প্রিলিমিনারি পরীক্ষার মানবন্টন
বিষয় | মোট নম্বর |
---|---|
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য | ২৫ |
ইংরেজি | ২৫ |
সাধারণ গণিত ও মানসিক দক্ষতা | ২০ |
সাধারণ জ্ঞান | ২০ |
আইসিটি (ICT) | ১০ |
সর্বমোট | ১০০ |
তবে বিশেষায়িত পদগুলোর ক্ষেত্রে যেমন – আইটি, ইঞ্জিনিয়ারিং, গবেষণা, পরিসংখ্যানসহ বিভিন্ন পদের পরীক্ষার মানবন্টন ভিন্ন হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি’ সচিবালয় এর অধীনে ব্যাংকের সমন্বিত নিয়োগ কার্যক্রমের প্রিলিমিনারি পরীক্ষাতেও একই ধরনের মানবন্টন কাঠামো দেখা যায়। নিচে ব্যাংকের বিশেষায়িত পদে নিয়োগ পরীক্ষার মানবন্টন দেখানো হলো —
সরকারি ব্যাংকের (বিশেষায়িত) পদগুলোর প্রিলিমিনারি পরীক্ষার মানবন্টন
বিষয় | মোট নম্বর |
---|---|
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য | ১০ |
ইংরেজি | ১০ |
সাধারণ গণিত ও মানসিক দক্ষতা | ১০ |
সাধারণ জ্ঞান | ১০ |
বিষয়ভিত্তিক | ৬০ |
সর্বমোট | ১০০ |
অতীতে বিভিন্ন সময়ে সাধারণ পদগুলোতে অনুষ্ঠিত হওয়া ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ (Faculty of Arts), ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (IBA), Center for Trade and Investment (CTI), সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, ফিনান্স অনুষদ, বাবসায় শিক্ষা অনুষদ, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (BIBM), Ahsanullah University of Science and Technology (AUST), ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের অধীনে হতে দেখা গেছে।
বর্তমানে, ব্যাংকের সাধারণ ও টেকনিক্যাল পদের পরীক্ষাগুলো অধিকাংশই BIBM-এর অধীনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানবন্টন অনুসরণ করে প্রশ্ন করেছে। তবে বর্তমানে ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (BIBM) এর অধীনে অধিকাংশ ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হওয়ায় BIBM-এর মানবন্টনকেই এখানে স্টান্ডার্ড ধরে পরবর্তী সকল আলোচনা করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রশ্নের অধীনে অনুষ্ঠিত হওয়া ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের মানবন্টনে আংশিক পরিবর্তন দেখা যেতে পারে।
বেসরকারি ব্যাংক জব নিয়োগ পরীক্ষার মানবন্টন
বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে সাধারণত একই দিনে, একই প্রশ্নপত্রে প্রিলিমিনারী ও লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়। অন্যদিকে, বেসরকারি ব্যাংকগুলো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আবেদনকারীদের তালিকা থেকে বিভিন্ন যোগ্যতার সূচকে, এবং বিভিন্ন সময় অনলাইন টেস্ট নেওয়ার মাধ্যমে প্রার্থীদের প্রাথমিকভাবে বাছাই করে।
পরবর্তীতে প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত প্রার্থীরা প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা মিলিয়ে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে সর্বমোট ৮০-১০০ নম্বরের পরীক্ষা হতে দেখা যায়। যার মধ্যে সচরাচর প্রিলিমিনারি অংশে ৫০-৮০ নম্বর এবং লিখিত অংশে ২০-৪০ নম্বর থাকে। প্রিলি ও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এই পরীক্ষায় এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা এবং লিখিত অংশের জন্য ৩০ মিনিট থেকে ৪৫ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকে।
কিছু কিছু বেসরকারি ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় এমসিকিউ অংশের পরীক্ষা শেষ হলে প্রার্থীরা লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। আবার কিছু ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার ক্ষেত্রে এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সময় শেষ হলে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। বেসরকারি ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষায় সাধারণত বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান, সাধারণ বিজ্ঞান, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি থেকে প্রশ্ন আসতে দেখা যায়।
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সিলেবাস ও প্রস্তুতি
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতি: বাংলা
সাধারণত ব্যাংক নিয়োগ প্রিলিমিনারি পরীক্ষাগুলোতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য এই ২টি অংশ থেকে প্রশ্ন আসে। বিসিএস পরীক্ষার জন্য বাংলা অংশের সঠিক প্রস্তুতি নিলে ব্যাংক নিয়োগের জন্য বাংলা বিষয়ে আর আলাদা করে প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন পরে না। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ভালো প্রস্তুতি থাকলে আপনি সহজেই ২৫ নম্বর উত্তর করতে পারবেন। যেহেতু ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার ক্ষেত্রে আলাদা কোন সিলেবাস হয় না তাই বিগত সালে অনুষ্ঠিত হওয়া ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নের প্যাটার্নকে স্টান্ডার্ড ধরে প্রস্তুতি নিতে হবে। বর্তমান সময়ে পরীক্ষা নেওয়া বিভিন্ন ফ্যাক্লটি অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে আপনাকে ব্যাংক নিয়োগের বাংলা প্রস্তুতি নিতে নিম্নোক্ত টপিকগুলো অধিক গুরুত্বসহকারে পড়তে হবে।
বাংলা ব্যাকরণ অংশের গুরুত্বপূর্ণ টপিকসমূহ:
- ভাষা
- শব্দ
- উপসর্গ
- পদ প্রকরণ
- লিঙ্গ পরিবর্তন
- সন্ধি
- বচন
- প্রকৃতি প্রত্যয়
- বাগধারা
- সমাস
- কারক ও বিভক্তি
- এক কথায় প্রকাশ
- বিপরীত শব্দ
- দিরুক্ত শব্দ
- বাক্য ও বানান
- ণত্ব ও ষত্ব বিধান
বাংলা সাহিত্য অংশের গুরুত্বপূর্ণ টপিকসমূহ:
- বাংলা সাহিত্যের যুগ বিভাজন (প্রাচীনযুগ, মধ্যযুগ, আধুনিক যুগ)
- বাংলা ভাষার ও উৎপত্তি ও বিকাশ
- বিখ্যাত পত্রপত্রিকার সম্পাদক
- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্র, গান ও কবিতার লাইন
- প্রবাদ প্রবচন
- সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ও পুরস্কারপ্রাপ্ত সাহিত্যকর্ম
বিখ্যাত কবি সাহিত্যিকদের জীবনী ও রচিত গ্রন্থ:
- তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
- সৈয়দ শামসুল হক
- বিভূতিভূষণ
- আবু ইসহাক
- শামসুর রাহমান
- সেলিম আল দীন
- মাইকেল মধুসূদন দত্ত
- কাজী নজরুল ইসলাম
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- জীবনানন্দ দাশ
- আলাউদ্দিন আল আজাদ
- শওকত ওসমান
- আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
- সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
- আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
- সিকান্দার আবু জাফর
- হাসান আজিজুল হক
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য বাংলা বুকলিস্ট:
- ৯ম – ১০ম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ বোর্ড বই
- বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর) / শীকর বাংলা ভাষা ও সাহিত্য – মোহসীনা নাজিলা
ব্যাংক জব প্রস্তুতিতে বাংলা বিষয়ে ভালো করার কার্যকরী কিছু টিপস:
১। আপনার যদি বিসিএস পরীক্ষার জন্য একবার বাংলার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি নেওয়া থাকে, তাহলে নতুন করে আর প্রস্তুতি না নিয়ে বার বার পুরাতন বিষয়গুলো রিভিশন দিতে পারেন।
২। ব্যাকরণের জন্য ৯ম-১০ম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ বোর্ড বই টি ভালোভাবে অনুশীলন করা। বাংলা ব্যাকরণে এর বাইরে থেকে প্রশ্ন করা হয় না।
৩। বাংলা সাহিত্যের যুগ বিভাজন ও সমকালীন গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্ম, বিখ্যাত কবি সাহিত্যিকদের জীবনী ও সাহিত্যকর্ম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাহিত্যকর্ম, সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ও পুরস্কারপ্রাপ্ত সাহিত্যকর্ম ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।
৪। পঠিত বিষয়ের উপর নিয়মিত লাইভ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রস্তুতির মান যাচাই করুন।
এছাড়াও বাংলা বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি নিতে Live MCQ অ্যাপের ‘টপিকগুরু’ বাটনের ‘বাংলা সাহিত্য’ অংশে প্রায় ২০ হাজার ও ‘বাংলা ভাষা ও ব্যাকরণ’ অংশে প্রায় ৩০ হাজার ইউনিক প্রশ্ন তো রয়েছেই! প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর, রেফারেন্সসহ ব্যাখ্যা ও Question Analytics আপনাকে সহযোগিতা করবে একটি স্মার্ট প্রস্তুতি নিতে।
শুধু তাই নয় Live MCQ অ্যাাপে নিয়মিত ব্যাংক নিয়োগ প্রস্তুতি বাটন থেকে থেকে হাজারো পরীক্ষার্থীর সাথে লাইভ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে নিজের প্রস্তুতি এবং অবস্থান যাচাই করুন।
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতি: ইংরেজি
আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে যেকোনো চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় ভালো করতে ইংরেজিতে দক্ষতা অনেক গুরুত্বপুর্ণ। তবে শিক্ষা ব্যবস্থার নানা ত্রুটির কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে আমাদের দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর ইংরেজি বিষয়ে ভালো ভিত্তি তৈরি হয় না। পরবর্তীতে একাডেমিক জীবনে এবং চাকরির জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ও তারা ইংরেজির বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি নিতে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা থেকে শুরু করে প্রতিযোগিতামূলক চাকরির পরীক্ষা, সব ক্ষেত্রেই শুধু ইংরেজিতে পিছিয়ে থাকার কারণে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পরার অনেক উদাহরণ রয়েছে। এর একটি বড় কারণ ইংরেজিকে অন্যান্য ভাষার মতো একটি ভাষা হিসেবে গণ্য না করে একটি একাডেমিক বিষয় হিসেবে গণ্য করা। ইংরেজিতে দক্ষ হওয়ার স্বল্পমেয়াদী কোন উপায় না থাকলেও নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে ইংরেজিতে দুর্বলতা কাটিয়ে উঠা সম্ভব।
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ইংরেজি অংশে ২৫ নম্বর বরাদ্দ থাকে এবং প্রশ্নের কারিকুলামও ইংরেজিতে হয় বিধায় ইংরেজিতে দক্ষতা থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই নিয়োগ পরীক্ষায় শুধু ইংরেজি গ্রামার অংশ থেকে প্রশ্ন করা হয়, ইংরেজি সাহিত্য থেকে নয়। তাই এই বিষয়ে ভালো প্রস্তুতি নিতে পারলেই পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব। ব্যাংক নিয়োগ প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ইংরেজি বিষয় থেকে Vocabulary-based ও Grammar-based এর দুই ধরনের প্রশ্ন আসে। চলুন দেখে নেওয়া যাক, ব্যাংক নিয়োগ প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ইংরেজিতে ভালো করতে কোন বিষয়গুলো অধিক গুরুত্ব সহকারে পড়তে হবে।
Vocabulary Based topics:
- Synonyms, Antonyms
- One word substitution
- Replacing underlined word
- Analogy
- Odd man out
- Spelling
Grammar Based topics:
- Right from the verb
- Parts of speech
- Corrections
- Narration
- Voice
- Preposition
- Idioms and Phrases
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য ইংরেজি বুকলিস্ট:
- Cliff’s Toefl
- Live MCQ English Wizard Grammar
- Saifurs Student Vocabulary
ব্যাংক জব প্রস্তুতিতে ইংরেজিতে ভালো করার কিছু কার্যকরী টিপস:
১। ইংরেজির অনেকগুলো বড় বড় বই না পড়ে শুধু ব্যাংক জব প্রিপারেশনের জন্য যেটুকু প্রয়োজন সেটুকু পড়া,
২। গ্রামারের কোন টপিকে কনফিউশন থাকলে সেটি দূর করার জন্য রেফারেন্স হিসেবে একটি গ্রামার বই অনুসরণ করা,
৩। বিষয়ভিত্তিক দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করা এবং সেই অনুযায়ী দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠতে বাড়তি সময় দেওয়া।
৪। Vocabulary তে ভালো করার জন্য একটি Flash Card (কাগজের টুকরো) নিয়ে প্রতিদিন পর্যায়ক্রমে দুই থেকে তিন টি শব্দ কার্ডে লিখে কার্ড টি সাথে রাখা এবং দিনের বিভিন্ন সময় কার্ড থেকে শব্দের অর্থটি দেখা এবং ইংরেজিতেই নতুন নতুন বাক্য গঠন করার চেষ্টা করা।
৫। নিয়মিত দৈনিক পত্রিকার (ইংরেজি ও বাংলা) সম্পাদকীয় কলাম পড়া এবং অনুবাদের চেষ্টা করা।
এছাড়াও ইংরেজি বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি নিতে Live MCQ App এর টপিকগুরু বাটনের Bank Job Preparation অংশের All Subtopic এর Bank English বাটনের প্রায় ২.২ হাজার ইউনিক প্রশ্ন তো রয়েছেই! প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর, রেফারেন্স সহ ব্যাখ্যা ও Question Analytics আপনাকে সহযোগিতা করবে একটি স্মার্ট প্রস্তুতি নিতে।
শুধু তাই নয় Live MCQ অ্যাাপে নিয়মিত ব্যাংক নিয়োগ প্রস্তুতি বাটন থেকে থেকে হাজারো পরীক্ষার্থীর সাথে লাইভ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে নিজের প্রস্তুতি এবং অবস্থান যাচাই করুন।
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতি: গণিত
একটু গুছিয়ে প্রস্তুতি নিলে যেকোন চাকরির পরীক্ষায় গণিত অংশে সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করা যায়। তবে আমাদের অনেকের মধ্যেই গণিত নিয়ে ভয় কাজ করে বিধায় গণিত বিষয় টি খুব কঠিন মনে হয়। তবে নিয়মিত চর্চা করার মাধ্যমে গণিতভীতি দূর করে একটি শক্ত ফাউন্ডেশন তৈরি করা সম্ভব। আর গণিত যেহেতু ব্যাংক নিয়োগ প্রিলিমিনারি ও লিখিত উভয় ধাপের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ সেহেতু একটু গভীর ভাবেই ব্যাংক নিয়োগের গণিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে।
বিসিএস ও অন্যান্য চাকরির তুলনায় ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার গণিত অনেক বেশি পাটিগণিত নির্ভর। তবে মনে রাখতে হবে, ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার গণিত অংশের প্রশ্ন ইংরেজিতে হয় বিধায় ভাষাগত দক্ষতাও জরুরী। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের জন্য R. S. Agarwal রচিত Quantitative Aptitude বইটি অনুসরণ করতে পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন ভারতীয় ওয়েবসাইট যেমন, Indiabix, Examveda ইত্যাদি থেকেও অনুশীলন করতে পারেন।
ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষায় গণিত অংশের বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি নিতে যে টপিকগুলো খুব গুরুত্বসহকারে পড়তে হবে তা নিম্নে দেওয়া হল –
- শতকরা
- লাভ – ক্ষতি
- সরল ও যৌগিক মুনাফা
- বাস্তব সংখ্যা
- ল.সা.গু ও গ.সা.গু
- ঐকিক নিয়ম
- গতি
- ট্রেন
- নল ও চৌবাচ্চা
- কাজ সময়
- গড়
- সমীকরণ
- সূচক
- লগ
- ত্রিকোণমিতি
- পরিমিতি
- জ্যামিতি
- সম্ভাব্যতা
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য গণিত বুকলিস্ট:
- ৮ম শ্রেণির সাধারণ গণিত বোর্ড বই
- ৯ম-১০ম শ্রেণির সাধারণ গণিত বোর্ড বই
- Quantitative Aptitude by R. S. Agarwal
- বাজারের যেকোন একটি ভালো পাবলিকেশনের গাইড বই
ব্যাংক জব গণিত প্রস্তুতিতে ভালো করার কিছু কার্যকরী টিপস:
- ৮ম শ্রেণি থেকে ৯ম-১০ম শ্রেণির গণিত বই টি ভালো ভাবে শেষ করুন।
- গণিতের শর্টকাট পরিহার করে গভীর ভাবে অনুশীলন করুন যেন লিখিত পরীক্ষায়ও কাজে আসে।
- শর্টকাট পরিহার করে একটি ফাউন্ডেশন তৈরি করার পিছনে মননিবেশ করুন। একবার বেসিক ক্লিয়ার হলে কম সময়ে গণিত সমাধান করার পদ্ধতি আপনি নিজেই বের করতে পারবেন।
- গণিত প্রশ্নের ইংরেজি টার্মগুলো বুঝার চেষ্টা করুন নয়তো জানা প্রশ্নেরও উত্তর করতে পারবেন না।
- অর্জিত জ্ঞান যাতে ভুলে না যান, তাই অন্যান্য বিষয়ের সাথে প্রতিদিন অন্তত এক-দেড় ঘণ্টা নিয়মিত গণিত চর্চা করুন।
- Live MCQ অ্যাাপে নিয়মিত পরীক্ষা দিয়ে আপনার প্রস্তুতির মান যাচাই করুন।
এছাড়াও ব্যাংকের গণিত অংশের বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি নিতে Live MCQ App এর টপিকগুরু বাটনের Bank Preparation অংশের All Subtopics এর Bank Math বাটনের প্রায় ১৩হাজার+ প্রশ্ন তো রয়েছেই! প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর, রেফারেন্স সহ ব্যাখ্যা ও Question Analytics আপনাকে সহযোগিতা করবে একটি স্মার্ট প্রস্তুতি নিতে।
শুধু তাই নয় Live MCQ অ্যাাপে নিয়মিত ব্যাংক নিয়োগ প্রস্তুতি বাটন থেকে থেকে হাজারো পরীক্ষার্থীর সাথে লাইভ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে নিজের প্রস্তুতি এবং অবস্থান যাচাই করুন।
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতি: সাধারণ জ্ঞান ও আইসিটি
পূর্বে সাধারণ জ্ঞান অংশের জন্য কম পরিশ্রম করেই ব্যাংক নিয়োগের পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করা যেতো। তবে বর্তমানে ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ২০ নম্বর এবং লিখিত পরীক্ষায়ও ৩০ নম্বর থাকায় সাধারণ জ্ঞান অবহেলা করে এই পরিক্ষায় ভালো করার কোন সুযোগ নেই।
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সাধারণ জ্ঞান অংশের কোন নির্দিষ্ট সিলেবাস নেই। তবে বিগত সালের প্রশ্নগুলো এনালাইসিস করলে দেখা যায় যে, ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সাধারণ জ্ঞান অংশটি খুব বেশি সাম্প্রতিক বিষয়াবলি নির্ভর। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিষয়াবলি এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর সম্প্রতি সংগঠিত তথ্যগুলো জানলে সাধারণ জ্ঞান অংশে ভালো করা সম্ভব।
চাকরির পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপুর্ণ সাম্প্রতিক বিষয়াবলী সম্পর্কে নিয়মিত আপডেটেড থাকার জন্য একদম ফ্রীতে Live MCQ এর প্রতিদিনের আয়োজন Daily NewsPicker এবং সাপ্তাহিক আয়োজন Weekly Bulletin অনুসরণ করতে পারেন। নিয়মিত এই সংক্রান্ত ফ্রী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে এবং ইউটিউব চ্যানেল টি সাবস্ক্রাইব করে যুক্ত থাকুন। এছাড়াও আমাদের Live MCQ এর চ্যানেল গুলোতে যুক্ত থেকেও নিয়মিত এই আপডেট গুলো পেতে পারেন।
Live MCQ অ্যাাপের PDF সেকশনে প্রকাশিত প্রতি মাসের সাম্প্রতিক সমাচার, Live MCQ তথ্য সমাহার সহ গুরুত্বপূর্ণ সকল PDF আপনার সাধারণ জ্ঞাণ প্রস্তুতি নিতে সহযোগিতা করবে। এছাড়াও Dynamic Info Panel এর শেষ মুহূর্তের সকল আপডেটেড তথ্য তো রয়েছেই যা পরীক্ষার আগমুহূর্তে সাম্প্রতিক বিষয়াবলীতে আপনার প্রস্তুতিকে সহজ করবে।
সাম্প্রতিক বিষয়াবলী ছাড়াও ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষায় বিভিন্ন ব্যাংকিং টার্ম ও অর্থনৈতিক বিষয়াবলী থেকে প্রশ্ন আসতে দেখা যায় যা জানা থাকা খুবই জরুরি। এছাড়াও আইসিটি অংশের বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য ‘উচ্চমাধ্যমিক তথ্য ও প্রযুক্তি’ বই টি সবচেয়ে ভালো। বইটির পঞ্চম অধ্যায়: প্রোগ্রামিং ভাষা ছাড়া আর সকল অধ্যায়ই আপনাকে ব্যাংক জব সহ যেকোন চাকরির পরীক্ষায় আইসিটি অংশে ভালো ফলাফল পেতে সহযোগীতা করবে।
সাধারণ জ্ঞান এর গুরুত্বপূর্ণ টপিকসমূহ
১। বাংলাদেশ বিষয়াবলি: (মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, অর্থনীতি, ব্যাংক, শিল্প বাণিজ্য, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ পরবর্তী এবং সংস্কার প্রস্তাবণা, সাম্প্রতিক বিষয়াবলি)
২। আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি: (আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার সদর দপ্তর, বিভিন্ন দেশের মধ্যকার চুক্তি, দেশ ও মহাদেশ সম্পর্কিত তথ্য, বিভিন্ন দেশের রাজধানী, জনসংখ্যা, মুদ্রা, নদ-নদী, যুদ্ধ-বিগ্রহ, খেলাধুলা সংক্রান্ত বিষয়, সাম্প্রতিক বিষয়াবলি)
কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) এর গুরুত্বপূর্ণ টপিকসমূহ:
- কম্পিউটার এর অঙ্গসংগঠন: সিপিইউ, এএলইউ, হার্ডডিস্ক, মেমোরি ইত্যাদি
- ই-কমার্স, মোবাইল প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্যসমূহ এবং সেলুলার, ডাটা নেটওয়ার্ক – 2G, 3G, 4G, 5G
- কম্পিউটার সফটওয়্যার, ডাটাবেস সিস্টেম
- কম্পিউটার প্রোগ্রাম: ভাইরাস, ফায়ারওয়াল
- কম্পিউটার পেরিফেরয়ালস: মাউস, কি বোর্ড, ইনপুট ও আউটপুট
- এমএস অফিস
- WWW, ইন্টারনেট তথ্যপ্রযুক্তির বড় প্রতিষ্ঠান ও তাদের সেবা, গুগল, মাইক্রোসফট, আইবিএম ইত্যাদি,
- সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং: ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম ইত্যাদি, রোবটিক্স, সাইবার অপরাধ।
- কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, ল্যান, ম্যান, ওয়াই-ফাই, ওয়াইম্যাক্স, ব্লুটুথ।
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সধারণ জ্ঞান বুক লিস্ট:
- যেকোন ভালো প্রকাশনীর বাংলাদেশ বিষয়াবলি ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি বই
- Live MCQ মাসিক সাম্প্রতিক বিষয়াবলি PDF
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি (ICT) বুক লিস্ট:
- ৯ম-১০ম শ্রেণির আইসিটি বই
- একাদশ – দ্বাদশ শ্রেণির আইসিটি বই
- Easy কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি – জর্জ পাবলিকেশন
এছাড়াও ব্যাংকের সাধারণ অংশের বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি নিতে Live MCQ App এর টপিকগুরু বাটনের Bank Job Preparation এর All Subtopics এর অধীনে থাকা Bank General Knowledge এর প্রায় ৩ হাজার ৮০০ প্রশ্ন এবং Bank ICT এর প্রায় ৩ হাজার ৯০০ প্রশ্ন তো রয়েছেই! প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর, রেফারেন্স সহ ব্যাখ্যা ও Question Analytics আপনাকে সহযোগিতা করবে একটি স্মার্ট প্রস্তুতি নিতে।
শুধু তাই নয় Live MCQ অ্যাাপে নিয়মিত ব্যাংক নিয়োগ প্রস্তুতি বাটন থেকে থেকে হাজারো পরীক্ষার্থীর সাথে লাইভ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে নিজের প্রস্তুতি এবং অবস্থান যাচাই করুন।
ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভালো করার উপায়
ব্যাংক জব সহ যেকোন চাকরির প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভালো করার জন্য আপনাকে অবশ্যই কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে। কঠোর পরিশ্রমের সাথে সঠিক কৌশল আপনাকে ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় সফল হতে সহযোগিতা করবে।
- প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় কেমন প্রশ্ন আসে তা সম্পর্কে ভালো ধারনা নিন।
- বাংলা ছাড়া ব্যাংকের সকল বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ইংরেজিতে হয়। তাই ইংরেজি রিডিং স্কিলে গুরুত্ব দিন।
- বিগত সালে অনুষ্ঠিত হওয়া ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করুন।
- নিজের বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা ও দুর্বলতা খুঁজে বের করুন এবং সেই অনুযায়ী প্রস্তুতির সময় বণ্টন করুন।
- একটি স্মার্ট রিভিশন সার্কেল অনুসরণ করে পূর্বের পঠিত বিষয়গুলো বার বার রিভিশন করুন।
- পড়ার পাশাপাশি যতটা সম্ভব মডেল টেস্ট পরীক্ষা দিন এবং প্রস্তুতির মান যাচাই করুন।
- কারও দেখাদেখি একটি বিষয় নিয়ে পড়া শুরু না করে নিজের মতো করে প্রস্তুতি নিন।
- কোন বিষয় নিয়ে পড়ার সময় ক্লান্তি বা বিরক্তি বোধ করলে, ভালো লাগে এমন একটি বিষয় পড়ুন। তবুও পড়া ছাড়বেন না।
- সবকিছু আপনাকে পড়তে হবে বা জানতে হবে এমন মানসিকতা ত্যাগ করে যেটুকু পড়া দরকার শুধু সেটুকু পড়ুন।
- একটানা পড়াশোনা না করে মাঝে মাঝে বিরতি দিন। ১৫-২০ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে আবার পড়াশোনা শুরু করুন।
ব্যাংক জব লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি (Bank Job Written Exam Preparation)
ব্যাংক নিয়োগ প্রক্রিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি হল লিখিত পরীক্ষা। ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ একজন প্রার্থী তার কাঙ্ক্ষিত চাকরিটি পাবেন কিনা — তা অনেকাংশেই নির্ভর করে এই লিখিত পরীক্ষার উপর। ব্যাংক জব লিখিত পরীক্ষায় একজন প্রার্থীকে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয় যার সময় থাকে ২ ঘণ্টা।
ব্যাংক লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস ও মানবন্টন : Bank written syllabus
Post (Senior Officer/ Officer Cash/ Assistant Director) | Mark Distribution (Senior Officer) | Mark Distribution (Officer Cash) | Mark Distribution (Assistant Director) | Post (Officer General) | Mark Distribution (Officer General) |
---|---|---|---|---|---|
Focus Writing in Bangla | 35 | 35 | 35 | Focus Writing in Bangla | 30 |
Focus Writing in English | 35 | 35 | 35 | Focus Writing in English | 35 |
Argument Writing | 30 | 30 | 30 | Precis Writing | 20 |
Mathematics | 30 | 30 | 30 | Mathematics | 25 |
Translation E2B/ B2E (OC) | 10 | 20 | 10 | B2E & E2B | 40 |
General Knowledge | 30 | 30 | 30 | General Knowledge | 30 |
Comprehension | 30 | 20 | 30 | Comprehension | 20 |
Total Mark | 200 | 200 | 200 | Total Mark | 200 |
সরকারি ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রিলি ও লিখিত পরীক্ষা আলাদাভাবে অনুষ্ঠিত হলেও বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে সাধারণত একই দিনে একই প্রশ্নে MCQ অংশের সাথে লিখিত অংশেরও পরীক্ষা হয়ে থাকে। তবে উভয় ক্ষেত্রেই লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কোন পার্থক্য নেই। মনে রাখতে হবে, ব্যাংকের পরীক্ষা কার্যক্রম খুব দ্রুততম সময়ে অনুষ্ঠিত হওয়ায় প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পর লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য খুব একটা সময় পাওয়া যায় না। তাই ব্যাংক জব প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতির সময়ই যুগপৎভাবে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়াটা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
ব্যাংক জব লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি: ফোকাস রাইটিং:
ব্যাংক জব লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ফোকাস রাইটিং। ফোকাস রাইটিং হলো এমন এক প্রকারের লেখার পদ্ধতি যেখানে লেখক নির্দিষ্ট একটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত ও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে এবং তথ্য ও উপাত্ত ব্যবহার করে আলোচনা করে। মূল বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন টপিক বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার পরিবর্তে ফোকাস রাইটিং নির্দিষ্ট একটি বিষয়, সমস্যা বা দৃষ্টিভঙ্গির দিকে নির্দেশ করে। বাংলা ও ইংরেজিতে ভালোভাবে গুছিয়ে লেখার দক্ষতা ফোকাস রাইটিং-এ ভালো ফলাফল করতে সহযোগিতা করে।
ব্যাংক জব লিখিত পরীক্ষার খাতায় নির্দিষ্ট সংখ্যক পেইজ থাকে এবং অতিরিক্ত খাতা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। এবং এই অল্প লেখাতেই আপনাকে বাকিদের থেকে নিজেকে আলাদা করে উপস্থাপন করতে হবে। তাই অল্প কথায় ভালোভাবে একটা নির্দিষ্ট ফোকাস ধরে রেখে লেখা অনেক চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয়। তাই যেটুকু লেখা যায় খুব স্পষ্টভাবে লিখতে হবে। লেখার সময় অবশ্যই বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, যেমন – লেখার ধরন, বাক্যের গঠন, বানান, ব্যাকরণ, শব্দ চয়ন, তথ্য বিশ্লেষণ।
ফোকাস রাইটিং এ ভালো করার কিছু কার্যকরী টিপস:
- ফোকাস রাইটিং এর ভাষা হবে তথ্যসমৃদ্ধ, প্রাঞ্জল ও সহজবোধ্য।
- মূল বিষয় অথবা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো কালার পেন (নীল অথবা সবুজ) দিয়ে হাইলাইট করা যেতে পারে।
- ফোকাস রাইটিং এর ক্ষেত্রে যত সম্ভব ডাটা, গ্রাফ, চার্ট, টেবিল, ডায়াগ্রাম ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। এতে লেখার মান স্ট্যান্ডার্ড পর্যায়ে যায়।
- বিভিন্ন টপিক সম্পর্কিত কিছু কমন কোটেশন মুখস্ত করে রাখবেন এবং সেগুলো টপিকের সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রয়োগ করবেন। যথাসম্ভব নীল কালি দিয়ে কোটেশন লেখার চেষ্টা করবেন।
- ফোকাস রাইটিং এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নির্দিষ্ট টপিকেই ফোকাসড থাকা। অযথা এবং অসংলগ্ন বিষয় লেখার চেয়ে মূল বিষয়ের উপর ফোকাসড থাকা অতি জরুরি।
- যেহেতু ফোকাস লেখার জন্য খুব কম সময় পাবেন তাই অল্প কথায় মূল বিষয় লেখার চেষ্টা করবেন। একই বিষয় ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে দেওয়ার দরকার নাই। ভূমিকা না করে প্রথম বাক্য থেকেই মূল টপিকে চলে যান।
- যেহেতু লিখিত পরীক্ষায় খাতার পাতা নির্দিষ্ট করে দেওয়া থাকে, সেহেতু প্রতিটি ফোকাসের জন্য বরাদ্ধকৃত ৩-৪ পৃষ্ঠার মধ্যে সম্পূর্ণ লেখা শেষ করতে হবে। এজন্য বাসায় বেশি বেশি লেখার অভ্যাস করতে হবে।
ব্যাংক জব ফোকাস রাইটিং এ যে ধরনের টপিক আসতে পারে:
- অর্থনৈতিক ইস্যু
- পরিবেশ সংক্রান্ত ইস্যু
- সামাজিক ইস্যু
- ব্যাংকিং রিলেটেড ইস্যু
- সাম্প্রতিক বাংলাদেশ বিষয়াবলী
- সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ব্যাংক জব লিখিত পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ সকল স্টাডি ম্যাটিরিয়ালস, সাজেশন পেতে Live Written App টি ইন্সটল করুন। ঘরে বসে হাজারো পরীক্ষার্থীর সাথে লাইভ এক্সামের মাধ্যমে ব্যাংক জব লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিন।
ব্যাংক জব লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি: আর্গুমেন্ট রাইটিং:
ব্যাংক জব লিখিত পরীক্ষার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে আর্গুমেন্ট রাইটিং (Argument Writing)। এই অংশে সর্বমোট ৩৫ নম্বর থাকে বিধায় এখানে ভালো করলে ব্যাংক লিখিত পরীক্ষায় একটি ভালো ফলাফল করা যায়। কোন একটি বিষয়ের সাথে আপনি একমত নাকি মতভেদ রয়েছে, আপনি বিষয়টির সাথে কতটা একমত বা কতটা মতভেদ রয়েছে এবং এর স্বপক্ষে আপনার উদাহরণ ও যুক্তি খণ্ডনকেই Argument Writing বলে। তবে আর্গুমেন্ট রাইটিংয়ে অনেক সময় একটি বিষয়ের স্বপক্ষে এবং বিপক্ষে উভয় অবস্থান লিখতে হয়।
বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, অর্থনীতি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, বিভিন্ন সামাজিক ইস্যু, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার, বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনসহ সাধারণত সমসাময়িক বিষয়গুলোই আর্গুমেন্ট রাইটিংয়ের বিষয়বস্তু হতে দেখা যায়।
Argument Writing লেখার সময় যেসব বিষয় লক্ষ রাখতে হবে-
- Argument অনেকটা বিতর্কের মত, যেখানে বক্তব্যটির সাথে যে কেউ একমত বা দ্বিমত হতে পারে। Argument এর দুই পক্ষেই যুক্তি দেওয়া যায়। ব্যক্তিভেদে তা নির্ভর করে। তবে, আপনি যে পক্ষ নিবেন, আপনার যুক্তির স্বপক্ষে উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করবেন।
- প্রথমত, বক্তব্যটির সাথে আপনি agree করতে পারেন।
- দ্বিতীয়ত, বক্তব্যটির সাথে আপনি disagree করতে পারেন
- তৃতীয়ত, বক্তব্যটির সাথে নিরপেক্ষ অবস্থান নিতে পারেন।
- আপনি agree করলে বিষয়টির পক্ষের যুক্তিগুলো বেশি আলোচনা করবেন এবং বিপক্ষের যুক্তি থাকলে তা নিয়েও আলোচনা করবেন। তবে, পক্ষের যুক্তিগুলোকে ফোকাস করবেন বেশি, বিপক্ষের যুক্তিগুলো কিছুটা কম ফোকাস করবেন।
- আপনি disagree করলে বিষয়টির বিপক্ষের যুক্তিগুলো বেশি আলোচনা করবেন এবং পক্ষের যুক্তি থাকলে তা নিয়েও আলোচনা করবেন। তবে, বিপক্ষের যুক্তিগুলোকে ফোকাস করবেন বেশি, পক্ষের যুক্তিগুলো কিছুটা কম ফোকাস করবেন।
- নিরপেক্ষ নিলে পক্ষে এবং বিপক্ষের যুক্তিগুলো ভলোভাবে আলোচনা করে আপনার নিরপেক্ষ অবস্থান পরিষ্কার করবেন।
- ‘For’ এবং ‘Against’ উভয়ই লিখতে বলা হলে আপনি বিষয়টির পক্ষে এবং বিপক্ষের উভয়দিকের যুক্তিগুলো তুলে ধরতে হবে। কিংবা শুধু ‘For’ বা ‘Against’ লিখতে বলা হলে যেটি প্রশ্নে চাইবে সেটি নিয়ে আলোচনা করবেন।
ব্যাংক জব ভাইভা প্রস্তুতি : Bank Job Viva Preparation
ব্যাংক জব পরীক্ষার সর্বশেষ ধাপটি হচ্ছে ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষা। সরকারি ব্যাংকের ভাইভা পরীক্ষায় সাধারণত ২৫ নম্বর বরাদ্দ থাকে। এখানে মূলত ব্যাংকিং সংক্রান্ত বেসিক কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়ে থাকে। খুব বেশি খারাপ না করলে সাধারণত ব্যাংক নিয়োগের এই পর্যায়ে কোন প্রার্থীকে ফেল করানো হয় না। বাজারের প্রচলিত ব্যাংক ভাইভা সংক্রান্ত একটি বই অনুসরণ করলে ব্যাংক নিয়োগের ভাইভা পরীক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এছাড়া ব্যাংকের ভাইভা পরীক্ষায় প্রার্থীকে আরও যেসব প্রশ্ন করা হতে পারে —
১। প্রার্থীর নিজ নামের অর্থ।
২। নিজ জেলা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কৃত তথ্য।
৩। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রশ্ন।
৪। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন আলোচিত বিষয় সংক্রান্ত।
৫। যে ব্যাংকের ভাইভা পরীক্ষা হচ্ছে সেই ব্যাংক সম্পর্কিত।
৬। স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনা করা বিষয় সম্পর্কিত।
৭। ব্যাংকিং সম্পর্কিত বিভিন্ন টার্ম।
ব্যাংক জব ভাইভা পরীক্ষায় ভালো করার কিছু কার্যকরী টিপস:
১। ভাইভা বোর্ডে সবসময় পজেটিভ থাকবেন।
২। কোন প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে বিনয়ের সাথে নিজের অপারগতা প্রকাশ করবেন। কিন্তু আত্মবিশ্বাসের সাথে ভুল উত্তর দিবেন না।
৩। ভাইভা চলাকালীন পুরোটা সময় মুখে স্মিত হাসি ধরে রাখার চেষ্টা করবেন।
৪। ভাষার আঞ্চলিকতা পরিহার করার চেষ্টা করুন।
৫। যেকোন প্রশ্ন মন দিয়ে পুরোটা শুনে তারপর সামান্য সময় ভেবে উত্তর দেওয়া শুরু করুন। প্রশ্নকর্তার প্রশ্নের মাঝেই কথা বলবেন না।
৬। ইংরেজিতে প্রশ্নকরা হলে ইংরেজিতে উত্তর দিবেন। বাংলায় প্রশ্ন করে ইংরেজিতে উত্তর দিতে বললে সেটই করবেন, কিন্তু বাংলায় উত্তর দেওয়ার অনুমতি চাইবেন না।
৭। ভাইভা বোর্ডে একজনের প্রশ্নের উত্তর করা অবস্থায় আরেকজন প্রশ্ন করলে প্রথমজনের অনুমতি নিয়ে দ্বিতীয় জনের প্রশ্নের উত্তর দিবেন।
৮। আপনার একাডেমিক পড়াশোনার রেজাল্ট কোনভাবে ভালো না হয়ে থাকলে সে বিষয়ের স্বপক্ষে একটি গ্রহণযোগ্য কারণ আগেই তৈরি করে রাখবেন।
৯। বেশি বেশি মক / মডেল ভাইভাতে অংশগ্রহণ করুন।
১০। ব্যাংকের বিভিন্ন টার্ম সম্পর্কে ভালো ভাবে জানুন।
১১। নিজের পাণ্ডিত্য দেখাতে যাবেন না আবার সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে উত্তর দিতে খুব বেশি দেরিও করবেন না।
১২। নিজের রাজনৈতিক দর্শন প্রকাশ করবেন না।
১৩। বোর্ডের কারও সাথে তর্কে জড়াবেন না। তারা আপনাকে ভুল প্রতিপন্ন করলে সেই বিষয়ের আপডেট তথ্যটি আপনার জানা নেই এবং জেনে নিবেন বলে তাদের কথাই মেনে নিবেন।
ব্যাংক জব ভাইভা প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় বই:
- বাজারের প্রচলিত ব্যাংক জব ভাইভা পরীক্ষার প্রস্তুতি সম্পর্কিত বই
ব্যাংকে চাকরির পদসমূহ এবং পদসোপান / পদক্রম ও পদোন্নতি
সরকারি ব্যাংকের পদক্রম / পদসোপান:
সরকারি ব্যাংকগুলোতে সাধারণত ৯ম ও ১০ম গ্রেডে সরাসরি জনবল নিয়োগ করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় অভ্যন্তরীণ প্রমোশন ও বদলিজনিত কারণে একজন ব্যাংক কর্মকর্তার পদোন্নতি হয়ে থাকে। সাধারণত, একজন ব্যাংক কর্মকর্তা ‘অফিসার’ অথবা ‘সিনিয়র অফিসার’ পদে যোগদান করেন এবং সর্বোচ্চ ম্যানেজিং ডিরেক্টর পর্যন্ত পদোন্নতি পেতে পারেন। সরকারি ব্যাংকের পদসোপান / পদক্রম নিম্নরূপ –
- ম্যানেজিং ডিরেক্টর (১ম গ্রেড)
- মহাব্যবস্থাপক (GM) (২য় গ্রেড)
- উপ মহাব্যবস্থাপক (DGM) (৩য় গ্রেড)
- সহকারী মহাব্যবস্থাপক (AGM) (৪র্থ গ্রেড)
- সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (৫ম গ্রেড)
- প্রিন্সিপাল অফিসার (৬ষ্ঠ গ্রেড)
- সিনিয়র অফিসার (৯ম গ্রেড)
- অফিসার (১০ম গ্রেড)
বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্রম / পদসোপান:
সরকারি ব্যাংকের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকেও সাধারণত ৯ম গ্রেডে সরাসরি জনবল নিয়োগ করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় অভ্যন্তরীণ প্রমোশন ও বদলী জনিত কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত একজন ব্যাংক কর্মকর্তার পদোন্নতি হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা ‘সহকারী পরিচালক’ পদে যোগদান করেন এবং সর্বোচ্চ ‘গভর্নর’ পর্যন্ত পদোন্নতি পেয়ে থাকেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের পদসোপান / পদক্রম নিম্নরূপ –
- গভর্নর (সুপার গ্রেড)
- ডেপুটি গভর্নর (গ্রেড-১)
- এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (গ্রেড-২)
- জেনারেল ম্যানেজার (গ্রেড-৩)
- ডেপুটি জেনারেল ডিরেক্টর (গ্রেড-৪)
- জয়েন্ট ডিরেক্টর (গ্রেড-৫)
- ডেপুটি ডিরেক্টর (গ্রেড-৬)
- সহকারী পরিচালক (গ্রেড-৯)
ব্যাংকে চাকরির পদোন্নতি:
- সিনিয়র অফিসার থেকে প্রিন্সিপাল অফিসার হতে ৫ বছর ।
- প্রিন্সিপাল অফিসার থেকে সিনয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হতে ৩-৫ বছর।
- সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার থেকে সহকারী মহাব্যবস্থাপক (AGM) হতে ৩-৫ বছর।
- এর পরের সবগুলো ৩ বছরের প্রমোশন ডিউ হয়।
সরকারি ব্যাংকের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকেও সাধারণত ৯ম গ্রেডে সরাসরি জনবল নিয়োগ করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় অভ্যন্তরীণ প্রমোশন ও বদলী জনিত কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত একজন ব্যাংক কর্মকর্তার পদোন্নতি হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা ‘সহকারী পরিচালক’ পদে যোগদান করেন এবং সর্বোচ্চ ‘গভর্নর’ পর্যন্ত পদোন্নতি পেয়ে থাকেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের পদসোপান / পদক্রম নিম্নরূপ –
- গভর্নর (সুপার গ্রেড)
- ডেপুটি গভর্নর (গ্রেড-১)
- এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (গ্রেড-২)
- জেনারেল ম্যানেজার (গ্রেড-৩)
- ডেপুটি জেনারেল ডিরেক্টর (গ্রেড-৪)
- জয়েন্ট ডিরেক্টর (গ্রেড-৫)
- ডেপুটি ডিরেক্টর (গ্রেড-৬)
- সহকারী পরিচালক (গ্রেড-৯)
ব্যাংকে চাকরির সুবিধাসমূহ
ব্যাংকে চাকরির নানাবিধ সুবিধা রয়েছে। নিম্নে সরকারি ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরির সুবিধাসমূহ বর্ণনা করা হল।
সরকারি ব্যাংকে চাকরির সুবিধাসমূহ:
সরকারি ব্যাংকে চাকরির নানা ধরনের সুযোগ সুবিধার রয়েছে। ব্যাংক জব প্রিপারেশন নেওয়ার আগে এই সুবিধাগুলো সম্পর্কে আপনার জেনে রাখা ভালো।
- ব্যাংকে চাকরির একটি বড় সুবিধা হচ্ছে ওয়েটিং লিস্ট / প্যানেল থেকে নিয়োগ পাওয়া যায়। এখানে চতুর্থ থেকে পঞ্চম প্যানেল পর্যন্তও প্রার্থীরা নিয়োগ পায়।
- বিসিএস এর চেয়ে ব্যাংকে চাকরির প্রস্তুতি নিতে তুলনামূলক কম সময় লাগে এবং বছরে অনেকগুলো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যায়।
- মাসের ৩০ তারিখের মধ্যেই বেতন পাওয়া যায়।
- প্রতিদিন ২০০ টাকা লাঞ্চ ভাতা পান যে সুবিধা ক্যাডার সার্ভিসেও নেই।
- প্রতিবছর ৩-৪ টি incentive বোনাস পাওয়া যায়।
- ব্যাংকে অন্যান্য চাকরির তুলনায় প্রমোশন অনেক দ্রুত এবং সহজ। সিনিয়র অফিসার থেকে সহজেই মহাব্যবস্থাপক (GM) এবং এমডি হওয়া যায়।
- ১ বছর পর Computer Loan এবং ৩ বছর পর Bike Loan পাওয়া যায়।
- চাকরির ৩ বছর সম্পন্ন হওয়ার পর ৫ লক্ষ টাকা Instant Loan পাওয়া যায়।
- চাকরির ৪ বছর সম্পন্ন হওয়ার পর বাড়ি / ফ্লাট ক্রয় করার জন্য প্রায় কোটি টাকার লোন পাওয়া যায়।
- AGM হওয়ার পর গাড়ি ক্রয়ের জন্য ভাতা দেওয়া হয় এবং সেইসাথে মেইন্টেন্যান্স বাবদ অতিরিক্ত ভাতা প্রদান করা হয়।
- অবসর গ্রহণের পর বিশ্বব্যাংক সহ বিভিন্ন ডেভলাপমেন্ট পার্টনারের সাথে কাজ করার সুযোগ।
বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরির সুবিধাসমূহ:
সরকারি ব্যাংকে চাকরির সুবিধাগুলোর চেয়ে ব্যাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরির সুবিধা অনেকক্ষেত্রে বেশি। এসকল সুবিধার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি সরকারি ব্যাংক গুলোর তুলনায় আকর্ষনীয়। নিম্নে বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরির সুবিধসমূহ আলোচনা করা হল –
- ৯ম গ্রেডে সারাসরি নিয়োগ প্রাপ্ত হওয়ার পরে একজন কর্মকর্তার বেসিক বেতন ২২,০০০ টাকার সাথে একটি ৫% ইনক্রিমেন্ট যোগ হয়ে ২৩,১০০ টাকা থেকে বেতন শুরু হয়। এই বেসিক বেতনের উপরই একজন ব্যাংক কর্মকর্তা পরবর্তী অন্যান্য সুবিধা পেয়ে থাকেন।
- ছাত্রজীবনে এস.এস.সি, এইচ.এস.সি, অনার্স ও মাস্টার্স মিলিয়ে কারও যদি ৪ টি ফার্স্ট ক্লাস / প্রথম শ্রেণি এর ফলাফল থাকে তাহলে আরও ৪ টি ইনক্রিমেন্ট যোগ হয়ে তার বেসিক বেতন হবে ২৮,১০০ টাকা। ৩ টি ফার্স্ট ক্লাস থাকলে ২ টি ইনক্রিমেন্ট যোগ হয়ে বেসিক বেতন হবে ২৫,৪৮০ টাকা। তবে এই বাড়তি সুবিধাটি চাকরি কনফার্ম (১ বছর) হলে একসাথে পাবেন।
- ঢাকায় পদায়ন হলে একজন ব্যাংক কর্মকর্তা বেসিক বেতনের ৫৫% এবং অন্যান্য সিটিকর্পোরেশনে পদায়ন হলে ৪৫% বাড়ি ভাড়া পাবেন।
- এছড়াও নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য ডাক্তার দেখানো থেকে শুরু করে ওষুধ কেনার খরচ সহ ক্ষেত্রবিশেষে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্যও খরচ পেতে পারেন।
- মোবাইল / টেলিফোন, ইন্টারনেট বিল বাবদ প্রতি মাসে ১৫০০ টাকা।
- কর্মঘন্টার বাইরে অতিরিক্ত সময় (১ ঘণ্টা) কাজ করার জন্য (আর্লি সিটিং / লেইট সিটিং) এর সুবিধায় যাতায়াতের জন্য প্রতিদিন ৩৫০ টাকা ভাতা পাবেন। লেট সিটিং / আর্লি সিটিং এর সুবিধা না থাকলে ব্যাংকের বাসে আসা যাওয়া করতে পারবেন।
- সাপ্তাহিক ছুটির দিন (শুক্রবার -শনিবার) অতিরিক্ত কাজ করার জন্য (অর্ধদিবস) সুবিধায় প্রতিদিন ৭০০ টাকা পাবেন।
- চাকরিতে ৩ বছর অতিক্রম করার পর হাউজ বিল্ডিং লোন হিসেবে ৯৫ লক্ষ টাকা পাবেন (ব্যাংক রেট) ৪% ইন্টারেস্টে।
- চাকরি কনফার্মেশন হলেই মোটরসাইকেল লোন ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা (মাসে ১৩০০ টাকা কর্তন করে ২০ বছর পর্যন্ত) এছাড়াও ৮০ হাজার টাকার কম্পিউটার লোন পাবেন (মাসে ৮০০ টাকা কর্তন করে ১০ বছর পর্যন্ত)।
- গাড়ি কেনার জন্য ৩০ লক্ষ টাকা ব্যাংক রেট (৪% ইন্টারেস্টে) লোন পাবেন। কিন্তু উপ মহাব্যবস্থাপক (DGM) হলে একদম ইন্টারেস্ট ফ্রী থাকবে। শুধুমাত্র ১% সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। এবং DGM হলে গাড়ি মেইন্টেন্যান্স ফি বাবদ প্রতিমাসে ৪০ হাজার টাকা পাবেন।
- উচ্চশিক্ষার জন্য দেশে ও বিদেশে স্কলারশিপ সহ এবং ছাড়া পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। এবং অধ্যয়নকালীন সময়ে বেতন বা বোনাসের কোন ব্যাঘাত ঘটবে না।
- সরকারি অর্থায়নে বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে পোশাক ক্রয়ের জন্যাই ১৮০০০ টাকা পাওয়া যায়, যা দিয়ে পোশাক ক্রয়ের কোন বাধ্যবাধকতা নেই।
- সকল সরকারি চাকরির মতো সন্তান স্কুলে ভর্তী হলে প্রতি মাসে ৫০০ করে দুটি সন্তানের জন্য ১০০০ টাকা পাবেন।
- বেসিকের ৫% থেকে ২৫% পর্যন্ত প্রভিডেন্ট ফান্ডে রাখতে পারবেন যার ইন্টারেস্ট রেট প্রায় ১৩%।
- প্রতি তিন বছর পর পর ১৫ দিন শ্রান্তি বিনোদন ছুটি পাবেন এবং সাথে এক বেসিকের টাকাও পাবেন।
কোচিং ছাড়া ব্যাংক জব প্রস্তুতি যেভাবে নিবেন
আপনার লক্ষ্য যদি হয় ব্যাংকের একটি ভালো চাকরি কিন্তু কোন কোচিং সেন্টারে যেতে চান না বা যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না, তাহলে নিম্নোক্ত পরামর্শগুলো মেনে চলতে পারেন —
১। প্রথমে আপনার লক্ষ্য স্থির করুন। আপনি নিজের লক্ষ্য অবিচল থাকলে পড়াশোনা আপনার জন্য কোন কঠিন কাজ হবে না।
২। বিগত সালের প্রশ্নব্যাংক থেকে ব্যাংক জব এর প্রশ্নের প্যাটার্ন সম্পর্কে ধারনা নিন। কতটুকু পড়বেন এবং কতটুকু বাদ দিবেন ঠিক করুন।
৩। আপনার বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা এবং বিষয়ভিত্তিক দুর্বলতা খুঁজে বের করুন এবং সেই অনুযায়ী বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতির জন্য সময় নির্ধারন করুন।
৪। একটি স্টাডিরুটিন প্রস্তুত করে সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি শুরু করুন।
৫। প্রস্তুতির মান যাচাই করার জন্য নিয়মিত মডেল টেস্ট / মক টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
৬। একটি স্মার্ট রিভিশন সার্কেল অনুসরণ করুন এবং নিয়মিত পূর্বের পঠিত বিষয়গুলো নিয়মিত রিভিশন করুন।
যেকোন চাকরির প্রস্তুতি নিতে প্রয়োজন হয় একটি সঠিক দিকনির্দেশনা এবং সঠিক প্রস্তুতিমূলক গাইডলাইন। ব্যাংক জব প্রস্তুতির ক্ষেত্রেও তার ব্যাতিক্রম নয়। বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় Live MCQ নামের চাকরির প্রস্তুতির প্লাটফর্ম নিয়ে এসেছি আমরা, অর্জন করেছি ১২ লক্ষের অধিক অ্যাপ ব্যাবহারকারীর আস্থা।দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে কোচিং ছাড়াই ব্যাংক জব প্রস্তুতির সকল সুবিধা পাচ্ছেন Live MCQ অ্যাাপে। অ্যাাপের প্রিমিয়াম ও দুর্দান্ত সব ফিচার উপভোগ করতে আজই ইন্সটল করুন।
শেষকথা: আশাকরি এই আর্টিকেল টি আপনার ব্যাংক জব প্রস্তুতিকে আরও সহজ করবে। বিশেষ করে একদম নতুন করে যারা ব্যাংক জব প্রিপারেশন (Bank Job Preparation) নিতে চাচ্ছেন তাদের জন্য এই গাইডলাইনগুলো অনেক কাজে আসবে। যদি ব্যাংক জব প্রিপারেশন নিয়ে আপনার কোন প্রশ্ন থাকে অবশ্যই নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে জানাবেন
ব্যাংক জব প্রস্তুতি নিয়ে সচরাচর জিজ্ঞাসা করা কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর:
প্রশ্ন: ব্যাংকে চাকরি বেতন কত?
উত্তর: সরকারি ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরিতে ৯ম গ্রেডের একজন কর্মকর্তার মূল বেতন স্কেল ২২,০০০ টাকা থেকে ৫৩,০৬০ টাকা এবং ১০ম গ্রেডের একজন কর্মকর্তার মূল বেতন স্কেল ১৬,০০০ টাকা থেকে ৩৮,৬৪০ টাকা। বেসরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রে শিক্ষানবিশকালে একজন কর্মকর্তার ন্যুনতম বেতন ২৮,০০০ টাকা এবং শিক্ষানবিশকাল শেষে ন্যুনতম বেতন ৩৯,০০০ টাকা।
প্রশ্ন: ব্যাংক পরীক্ষার জন্য কি কি বই পড়তে হবে?
উত্তর: ব্যাংকের পরীক্ষার জন্য বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান, ICT এই বইগুলো পড়তে হয়। এবং বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতির জন্য যে বইগুলো পড়তে হবে তা এই আর্টিকেলে উল্লেখ করা আছে।
প্রশ্ন: ব্যাংকে চাকরির জন্য কোন বিষয় ভালো?
উত্তর: সরকারি ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরির জন্য নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে পড়াশোনা সম্পন্ন করা প্রার্থীরা আলাদা কোন সুবিধা পায় না। তবে বেসরকারি ব্যাংকে চাকরির জন্য ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন।
প্রশ্ন: ব্যাংকে চাকরির জন্য কি কি যোগ্যতা লাগে?
উত্তর: সরকারি ব্যাংক, বেসরকারি ও বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরির জন্য নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ভিন্ন হতে পারে। তবে সরকারি ব্যাংকে আবেদনের জন্য —
১. স্বীকৃত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় হতে যে কোনো বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা স্বীকৃত বোর্ড হতে এইচএসসি/ সমমানের পরীক্ষা পাশের পর স্বীকৃত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় হতে চার (৪) বছর মেয়াদী স্নাতক পাশ থাকতে হবে। সরকারি ব্যাংকের চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩২ বছর পর্যন্ত।
২. ও-লেভেল ও এ-লেভেল অথবা বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত ডিগ্রির ক্ষেত্রে যথাক্রমে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশি শিক্ষা বোর্ড অথবা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন/প্রযোজ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত সমমান সনদ আবশ্যক।
প্রশ্ন: ব্যাংক জবের জন্য সিজিপিএ কত লাগে?
উত্তর: এসএসসি/সমমান ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের পরীক্ষায় অন্তত একটি প্রথম বিভাগ/শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ থাকতে হবে। কোনো পর্যায়ে তৃতীয় বিভাগ/শ্রেণি বা সমমানের ফলাফল গ্রহণযোগ্য নয়।
উল্লেখ্য, বর্তমান ৫.০০ ও ৪.০০ স্কেলের জিপিএ/সিজিপিএ-কে প্রচলিত প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ/শ্রেণিতে রূপান্তরের জন্য ২ জুন ২০০৯ ও ২ মার্চ ২০১০ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত সার্কুলারের টেবিল অনুসরণ করতে হবে।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ ব্যাংকের এডির বেতন কত?
উত্তর: বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক (এডি) পদ টি সরকারি বেতন স্কেল অনুযায়ী ৯ম গ্রেডের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন এডি সরকারি বেতন স্কেল ২২,০০০ টাকা মূল বেতন দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন।
চাকরি প্রত্যাশীদের জন্য লাইভ এমসিকিউ একটা বেস্ট প্লাটফর্ম!
— চাইলে আগ্রহীরা এই প্লাটফর্মে যুক্ত হতে পারেন, আমার দেখা অনেক গোছানো একটা প্লাটফর্ম! তাদের সিস্টেমও অনেক সুন্দর!
– প্রথমে লাইভ ক্লাসগুলো করবেন, এরপর স্টাডি করবেন এবং সর্বশেষে তাদের লাইভ পরীক্ষায় যুক্ত হবেন!
!
ধন্যবাদ লাইভ এমসিকিউকে এমন একটা প্লাটফর্ম উপহার দেয়ার জন্য!
আপনার প্রস্তুতির জার্নির অংশীদার হতে পেরে আমরা আনন্দিত।
আপনার পরবর্তী ধাপগুলোর অনেক জন্য শুভকামনা রইল।
দোয়া থাকবে খুব দ্রুতই যেনো আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেন। ❤️❤️
বাংলাদেশ ব্যাংক হলো বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে মুদ্রানীতি পরিচালনা করে, ব্যাংকগুলোর তদারকি করে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ন্ত্রণ করে।
Live MCQ ❤️❤️❤️
❤️
Thank you,…
Live MCQ
You’re most welcome.
Thanks for your proper guidance 🙂
স্বাগত।
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় ১ ঘন্টা নিয়ে লেখাটা পড়লাম।
ভালো লেখা।
তবে-
বানানে ভুল, কিছু ইনফরমেশন (যেমন হেলিকপ্টারে পলাতক একজন আছেন, তার রিলেটেড) চেঞ্জ করার দরকার।
বিষয়টি নজরে আনার জন্য ধন্যবাদ। তথ্য সংশোধন করে পুনরায় আপলোড করে দেয়া হবে।
ব্যাংক প্রিপারেশন এর জন্য গঠনমূলক ও তথ্যনির্ভর গাইডলাইন এই প্রথম এতো সুন্দর ভাবে কোনো অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কে উপস্থাপন করতে দেখলাম,,ধন্যবাদ লাইভ এমসিকিউ কে❤️❤️
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
শুভকামনা আপনার জন্য। ❤️