আপনারা নিশ্চয়ই জেনে থাকবেন যে সম্প্রতি তীব্র গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখে বাংলাদেশের সর্বশেষ নির্বাচিত সরকার বিলুপ্ত হয়েছে। পরবর্তীতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহম্মদ ইউনূস কে প্রধান উপদেষ্টা করে আরও ১৬ জন উপদেষ্টার সমন্বয়ে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট্য এই নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। ৮ আগস্ট ২০২৪ তারিখে বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চপ্পু বাংলাদেশের এই নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ গ্রহণ করান যার মধ্যে ২ জন উপদেষ্টার শপথ গ্রহণ বাকী ছিল। পরবর্তীতে গত ১৬ আগস্ট ২০২৪ তারিখে আগের ২ জন উপদেষ্টা সহ আর বেশ কয়েকজন নতুন উপদেষ্টা শপথ গ্রহণ করেন। যেকোন চাকরির পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকাররের তালিকা ২০২৪ এর সর্বশেষ হালনাগাদকৃত তথ্যগুলো পেতে সম্পূর্ণ ব্লগ টি পড়ুন।

আরও দেখুন: ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ সকল তথ্য

বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের ছবি সহ তালিকা 

ছবি সহ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তালিকা দেখে নিন। এই ছবিতে নতুন সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সকলের তথ্য দেওয়া হয়েছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের দায়িত্ব বন্টন - সর্বশেষ আপডেট ১৬ আগস্ট ২০২৪

দপ্তর বন্টন অনুসারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তালিকা ২০২৪ | interim government bangladesh 2024 list

বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাগন কে কোন মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন চলুন দেখে নেওয়া যাক।

 নাম পদবী দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রাণালয়
ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা  মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী, খাদ্য মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়,  নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
সালেহ উদ্দিন আহমেদ উপদেষ্টা অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়
ড. আসিফ নজরুল উপদেষ্টা আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়,
আদিলুর রহমান খান উপদেষ্টা শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়
এ এফ হাসান আরিফ উপদেষ্টা স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়
তৌহিদ হোসেন উপদেষ্টা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উপদেষ্টা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়
শারমিন মুরশিদ উপদেষ্টা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়
বিধান রঞ্জন রায় উপদেষ্টা  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
ফারুক-ই-আজম উপদেষ্টা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়
ব্রি.জে এম সাখাওয়াত হোসেন (অব) উপদেষ্টা  বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়
সুপ্রদীপ চাকমা উপদেষ্টা  পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়
আ.ফ.ম খালিদ হাসান উপদেষ্টা  ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়
ফরিদা আখতার উপদেষ্টা  মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়
নূর জাহান বেগম উপদেষ্টা  স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়
মো. নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা  ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উপদেষ্টা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়
ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন

উপদেষ্টা 

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়
ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ উপদেষ্টা  পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়
আলী ইমাম মজুমদার উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান উপদেষ্টা বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়
লে. জে. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী উপদেষ্টা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং কৃষি মন্ত্রণালয়
ইন্সটল Live MCQ অ্যাপ বাটন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা উপদেষ্টাদের পরিচয় বৃত্তান্ত

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস:

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদ। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের একজন শিক্ষক। তিনি ক্ষুদ্রঋণ ধারণার প্রবর্তক। অধ্যাপক ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে এই পুরস্কার লাভ করেন। ইউনূস বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার সহ আরও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন। ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসকে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে আরও জানার জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ সকল তথ্য লিংকে প্রবেশ করুন।

জনাব সালেহ উদ্দিন আহমেদ:

তিনি মহাপরিচালক (ডিরেক্টর জেনারেলডিজি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশ একাডেমি অব রুরাল ডেভেলপমেন্ট (বার্ড) এর। দীর্ঘদিন ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অফিসের এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর মহাপরিচালক পদেও। গত কয়েক বছর ধরে বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন তিনি।

ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৯৬৩ সালে এসএসসি এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৬৫ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পাস করার পর ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স ও পরের বছরের মাস্টার্স পরীক্ষা পাস করে সেই বিভাগেই অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন ১৯৭০ সালে। কিছু সময় শিক্ষকতা করে পরে সালেহউদ্দিন সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি) ক্যাডার কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন।

১৯৭৮ সালে কানাডার হ্যামিল্টন শহরেরম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটিথেকে অর্থনীতির উপর পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। সালেহউদ্দিনের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শ্রীরামপুর (দরিশ্রীরামপুর) গ্রামে।

জনাব এএফ হাসান আরিফ

বিএনপিজামায়াত জোট সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল এএফ হাসান আরিফ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী। তিনি ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্ম গ্রহণ করেন। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি ডিগ্রি পাস করেন।

১৯৬৭ সালে কলকাতা হাই কোর্টে আইনজীবী হিসেবে নথিভুক্ত হওয়ার পর তিনি সে সময়ের পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা হাই কোর্টে আইনজীবী হিসেবে নথিভুক্ত হন। তিনিএএফ হাসান আরিফ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসচেম্বারের প্রধান।

তিনি সেনাশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে ১৯৮২ সালের এপ্রিল থেকে ১৯৮৫ সালের অগাস্ট পর্যন্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল; ১৯৮৫ সালের অগাস্ট থেকে ১৯৯৬ সালের মার্চ পর্যন্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবং বিএনপি জামায়াতজোট সরকারের আমলে ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও ২০০৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ১ বছর তিনি তৎকালীন তত্বাবধায়ক সরকার ফখরুদ্দিন আহমেদ সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের একজন প্যানেল সদস্য।

জনাব মো. তৌহিদ হোসেন

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেনের জন্ম ১৯৫৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষ করার পর ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। ১৯৯৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০০০ সালে ফেব্রুয়ারি এবং ২০০৯ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১২ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত দুই মেয়াদে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এই কূটনীতিক।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার ছিলেন। ২০০৬ সালে ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২০০৯ সালের ৮ জুলাই পর্যন্ত তিনি পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সালের জুনে তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার হাইকমিশনার করা হয়।

জনাব আদিলুর রহমান খান

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের দ্বায়িত্ব পালন করা আদিলুর রহমান খান ১৯৬১ সালের ২ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। সুপ্রিম কোর্টের আইন পেশায় থাকার সময় ১৯৯৪ সালে তিনি মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’ প্রতিষ্ঠা করেন। আদিলুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করে ‘ভ্রিজ ইউনিভার্সিটি ব্রাসেলস’ থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের শাপলা চত্বরে বিক্ষোভের সময় নেতা-কর্মীরা অপসারণের অভিযানে নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে ‘বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ২০১৩ সালের ১০ অগাস্ট গোয়েন্দা পুলিশ তাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে আটক কর। এই মামলায় আদিলুর রহমান খান সহ তার সংগঠনের নাসিরুদ্দিন নামের একজন কর্মকর্তার দুই বছরের সাজা হয়। ২০১৪ সালে তিনি রবার্ট এফ. কেনেডি হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন। একই বছর তিনি মানবাধিকারের জন্য গোয়াংজু পুরস্কারও জিতেছিলেন।

জনাব ড. আসিফ নজরুল

আসিফ নজরুল ১৯৬৬ সালের ১২ জানুয়ারি জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে পড়াশুনা করেছেন। পরবর্তীতে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে তিনি তার পিএইচডি সম্পন্ন করেন। ১৯৯১ সালে তিনি বিচিত্রা নামক একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় কাজ করতেন। এছাড়া তিনি ম্যাজিস্ট্রেটও হিসেবে কাজ করেছেন।

লেখক, রাজনীতি-বিশ্লেষক ও কলামিস্ট অধ্যাপক আসিফ নজরুল আইন, সংবিধান ও মানবাধিকার বিষয়ে কয়েকটি বই লিখেছেন। এছাড়াও তার লিখনির তালিকায় কিছু নন-ফিকশন বইও রয়েছে। ২০১১ সাল থেকে ছয় বছর মানবাধিকার সংগঠন ‘সাউথ এশিয়ান ফর হিউম্যান রাইটস’-এর ব্যুরো সদস্য ছিলেন আসিফ নজরুল। ১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির হয়ে গণতদন্ত কমিশনের সঙ্গে কাজ করেছিলেন তিনি। তবে পরে সেই কমিটির সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়।

জনাব এম সাখাওয়াত হোসেন

এম সাখাওয়াত হোসেন ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশনড লাভ করেন তিনি। পরে দেশ স্বাধীন হলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। এম সাখাওয়াত হোসেন বাংলাদেশের সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল। ২০০৭ সালে সেনা শাসিত ত্বত্তাবধায়ক সরকারের সময়ে তিনি নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন এবং ২০১২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন।

জনাব আ ফ ম খালিদ হাসান

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমির ও সুন্নি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত আ ফ ম খালিদ হাসান। ১৯৫৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত সাতকানিয়া উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নে জন্ম নেওয়া এই ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব চরমোনাইয়ের পীরের নেতৃত্বাধীন দল ইসলামী আন্দোলনের শিক্ষা উপদেষ্টা ও মাসিক আত তাওহীদের সম্পাদক।

তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে তার শিক্ষা জীবন শেষ করেন। ২০০৬ সালে ‘হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর খুতবা: একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক গবেষণা’ বিষয়ে উপর পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

ফরিদা আখতার

ফরিদা আখতারের জন্ম চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ থানার হারলা গ্রামে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে পড়াশোনা করেছেন তিনি। বর্তমানে কাজ করছেন আর্থসামাজিক গবেষণার নানা ক্ষেত্রে। বিশেষ করে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের অবস্থা জানা এবং পরিবর্তনের জন্য নীতিনির্ধারণী গবেষণা ও লেখালেখিই তার কাজের প্রধান জায়গা। নারী উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্যসম্পদ, তাঁত শিল্প, গার্মেন্টস শিল্প ও শ্রমিক, জনসংখ্যা এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক বিষয়ে তিন দশক ধরে কাজ করেছেন।

বাংলাদেশের নারী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে জড়িত সম্মিলিত নারী সমাজের সদস্য তিনি। উন্নয়ন বিকল্পের নীতিনির্ধারণী গবেষণার (উবিনীগ) নির্বাহী পরিচালকও ফরিদা। লেখক ও কলামিস্ট হিসেবেও তার পরিচিতি আছে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের জন্ম ১৯৬৮ সালের ১৫ জানুয়ারি ঢাকার ধানমন্ডিতে। তার পৈত্রিক বাড়ি হবিগঞ্জে। ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও হলিক্রস কলেজের পড়াশুনা শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। পাস করার পর তিনি ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতিতে (বেলা) যোগ দেন। ১৯৯৭ সালে বেলার প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব নেন।

পরিবেশ রক্ষা ও সামাজিক কাজের জন্য অবদানের জন্য বেশকিছু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা তৈরির কারণে ২০০৭ সালে পরিবেশ পুরস্কার, পরের বছর নেপালভিত্তিক ক্রিয়েটিভ স্টেটমেন্টস অ্যান্ড সাউথ এশিয়া পার্টনারশিপসিলেব্রেটিং ওমেনহুড অ্যাওয়ার্ড’, ২০০৯ সালে গোল্ডম্যান পরিবেশ পুরস্কার, ওই বছরই টাইম সাময়িকীরহিরোজ অফ এনভায়রনমেন্টএবং ২০১২ সালে ম্যাগসেসে পুরস্কার পান রিজওয়ানা।

নূরজাহান বেগম

নূরজাহান বেগম ২০১০ সালে গ্রামীণ ডিস্ট্রিবিউশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। তিনি নোবেল বিজয়ী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে এই দায়িত্ব পেয়েছিলেন।

নুরজাহান বেগম গ্রামীণ পরিবারের একটি অলাভজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ শিক্ষার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৭৬ সালে যখন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকল্প শুরু হয়, তখন তিনি ইউনূসের প্রথম সারির সহযোগীদের একজন ছিলেন।তিনি অনেক দেশে ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পের পরামর্শদাতা, প্রশিক্ষক এবং মূল্যায়নকারী হিসাবে কাজ করেছেন। তিনি ওয়ার্ল্ড সামিট মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস অ্যাওয়ার্ড ২০০৯ এবং ভিশন অ্যাওয়ার্ড ২০০৯এভূষিতহন।

নুরজাহান ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসেফরচুন মোস্ট পাওয়ারফুল উইমেনসামিটে অংশ নেন। একই বছর স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিস পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতি হন।

শারমিন মুরশিদ

সমাজকর্মী শারমিন মুরশিদ বেসরকারি সংস্থা ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী হিসাবেও কাজ করে এই সংস্থা। তিনি একটি খ্যাতনামা পরিবারের সদস্য। তার বাবা খান সারওয়ার মুরশিদ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন। তার মা নূরজাহান মুরশিদ ১৯৫৪ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় কলকাতায় বাংলাদেশের প্রথম সরকারের দূত হিসেবে কাজ করেন।

নাহিদ ইসলাম

উপদেষ্টাদের মধ্যে আছেন কোটা সংস্কার ও সরকার পতনের ডাক দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের একজন নাহিদ ইসলাম। নাহিদ ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ (শিক্ষাবর্ষ-২০১৬-১৭) থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। এর আগে তিনি সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন।

নাহিদ ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের নেতৃত্ব গঠিত গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব। ২০২৩ সালের অক্টোবরে আত্মপ্রকাশের সময় বলা হয়েছিল, এটি ‘রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিমুক্ত স্বতন্ত্র একটি ছাত্র সংগঠন’।

আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের একজন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। আসিফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগ (শিক্ষাবর্ষ- ২০১৭-১৮) থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেছেন তিনি। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও কলেজটির বিএনসিসি ক্লাবের প্লাটুন সার্জেন্ট আসিফের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায়। গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সদস্য সচিব আসিফ।

জনাব ফারুক-ই-আজম

জনাব সুপ্রদীপ চাকমা

পররাষ্ট্র ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সাবেক এই রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা ১৯৬১ সালে খাগড়াছড়ির কমলছড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। ১৯৮৫ সালে সপ্তম বিসিএসের মাধ্যমে সুপ্রদীপ চাকমা সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন। পররাষ্ট্র ক্যাডারের সাবেক এই কর্মকর্তা পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চ্যায়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

কর্মজীবনে তিনি মেক্সিকো ও ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বও পালন করেছেন। রাবাত, ব্রাসেলস, আঙ্কারা এবং কলম্বোতে বাংলাদেশ মিশনেও তিনি বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন।

জনাব বিধান রঞ্জন রায়

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যাপক ও পরিচালক বিধান রঞ্জন রায় পেশায় একজন মানসিক চিকিৎসক ও মনরোগ বিশেষজ্ঞ। মনরোগ বিজ্ঞানে এমবিবিএস, ডিপিএম, ও এমফিল ডিগ্রি অর্জন করা এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ময়মসিংহ মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহের ইউনিয়ন স্পেশালাইজড হাসপাতালে কর্মরত আছেন।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

একজন সুপরিচিত বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ যিনি ১ জুলাই জন্ম হয় ১৯৪৮ সালে নোয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা করেছেন। পরবর্তীতে ১৯৬৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে বিএ (অনার্স) ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৭ সালের মধ্যবর্তী সময়ে তিনি ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। দেশে ফিরে এসে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান এবং ২০১১ সালে অবসর গ্রহণ করেন।

ড. মাহমুদ ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টার, জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (ইউএন-সিডিপি) সদস্য। সেইসাথে, তিনি সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অব ইকোনমিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসএএনইআই) চেয়ারম্যান। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তিনি পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি দীর্ঘ সময় এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ছিলেন।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির

ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান

. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বাংলাদেশের একজন সুপরিচিত অর্থনীতিবিদ। তিনি ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে ১৯৯৮ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডএর (ইডকল)দায়িত্ব পালন করেন।

. এম ফওজুল খান ১৯৮৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস অ্যাট বোস্টন, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে পার্টটাইম ও ফুলটাইম ফ্যাকাল্টি হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, ইউএনডিপি, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের একজন শীর্ষ পরামর্শক। তার বাড়ি সন্দ্বীপের হরিশপুর গ্রামে। বর্তমানে তিনি ইউনাইটেড পাওয়ারের পরিচালনা পরিষদে ইনডিপেন্ডেন্ট পরিচালক হিসাবে আছেন।

আলি ইমাম মজুমদার 

৭৪ বছর বয়সী আলী অমাম মজুমদার প্রাক্তন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী। ২০০৬ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০০৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্ব পালন করেন এবং একই সময়ে মুখ্য সচিবের অতিরিক্ত দায়িত্বও পালন করেন। তার পূর্বে তিনি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৭ সালে প্রশাসন ক্যাডারের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন আলী ইমাম মজুমদার এবং পরবর্তীতে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি বর্তমানে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) বিভিন্ন প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন। আলী ইমাম মজুমদার তার চাকরি জীবনে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে সহকারী কমিশনার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটসহ উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্যগুলো যেকোন চাকরির পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশাকরি সাম্প্রতিক এই তথ্যগুলো আপনার চাকরির প্রস্তুতিতে অনেক কাজে আসবে।

ইন্সটল Live MCQ অ্যাপ বাটন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ছাড়াও এই সরকার গঠন হওয়ার সাথে সাথে প্রধান বিচারপতি, অ্যাাটর্নি জেনারেল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু পদে পরিবর্তন আসে। নিম্নে ১৮ আগষ্ট ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত সদ্য রদবদল হওয়া এই পদগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হল:

পদবী / দপ্তর নাম বিশেষ তথ্য
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ
  • সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি এই নিয়োগ দেন।
  • তিনি দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি এবং ওবায়দুল হাসানের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান
  • তিনি এ এম আমিন উদ্দিনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
  • তিনি বাংলাদেশের ১৭তম অ্যাটর্নি জেনারেল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর
  • তিনি দেশের ১৩তম গভর্নর।
  • আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক অর্থনীতিবিদ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান
  • তিনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ছিলেন।
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম সহিদ উদ্দিন
  • তিনি প্রতিষ্ঠানটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ
  • তিনি এক জন সাংবাদিক, কবি ও কথাসাহিত্যিক।
  • এর আগে এক প্রজ্ঞাপনে বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক পদে আবুল কালাম আজাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়।
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম, এনডিসি
  • তিনি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
  • তিনি বাংলাদেশের ৩২তম আইজিপি।
র‍্যাবের মহাপরিচালক কে এম শহিদুর রহমান
  • তিনি মো. হারুন-অর-রশিদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
রেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) মহাপরিদর্শক মেজর জেনারেল মো. ফয়জুর রহমান
  • তিনি মেজর জেনারেল হামিদুল হকের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন
আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ
  • তিনি মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হকের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন
জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবু মোহাম্মদ সরোয়ার ফরিদ
  • তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির (বিএমএ) কমান্ড্যান্ট ছিলেন।
  • তিনি মেজর জেনারেল মো. হোসাইন আল মোরশেদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান মো. তওফিক মাহবুব চৌধুরী
  • তিনি পুলিশ সদর দপ্তরে ডেভেলপমেন্ট শাখায় অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আ স ম রিদওয়ানুর রহমান
  • এ পদে থাকা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া
  • তিনি এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরীর স্থলাভিষিক্ত হবেন।
  • এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরীকে ঢাকা বিমান বাহিনী সদর দপ্তরের প্রশিক্ষণ পরিদপ্তরের পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে।

আশাকরি বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মণ্ডলীর তথ্য, দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয় সহ সদ্য রদবদল হওয়া গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো আপনার চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে অনেক কাজে আসবে।

ইন্সটল Live MCQ অ্যাপ বাটন

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে সচরাচর জিজ্ঞাসা করা কিছু প্রশ্নের উত্তর:

প্রশ্ন: প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে কী হয়?

উত্তর: প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে তা স্থানে অন্য কাউকে নিয়োগ দিতে হয়। যদিও সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়, তবে সংবিধান অনুসারে ৩ মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিতে হয়। এছাড়া উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও গঠন করা যায়।

প্রশ্ন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাকে বলে?

উত্তর: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হচ্ছে একটি অস্থায়ী সরকার যা রাষ্ট্রের জরুরি প্রয়োজন ও উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় গঠন করা হয়।

প্রশ্ন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এর কাজ কী?

উত্তর: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কাজ হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা। তাছাড়া রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সংস্কার, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ও বিভিন্ন বাহিনীর সংস্কার করাও এ সরকারের কাজের অংশ হতে পারে।

প্রশ্ন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ কতদিন?

উত্তর: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ কতদিন হবে তা নির্দিষ্ট নয়। মেয়াদ ৩ মাস থেকে শুরু করে কয়েক বছর পর্যন্ত হতে পারে।