যেভাবে সাজাবেন বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট

যেহেতু বিসিএস এর লিখিত পরীক্ষার একটি অংশ এবং ভাইভা পরীক্ষার প্রশ্নের ধরন এসব কিছুই প্রার্থীর ক্যাডার চয়েসের লিস্টের উপর নির্ভর করে, সেহেতু আবেদনের শুরুতেই বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।কিন্তু বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর সময় প্রথমেই একজন প্রার্থী যেসব সমস্যার সম্মুখীন হন তা হল বিভিন্ন ক্যাডার সার্ভিস সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য না জানা এবং যেসব বিষয় বিবেচনা করে ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাতে হয় তা সম্পর্কে ভালো ধারনা না থাকা।

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোট ২৬ টি ক্যাডারের মধ্য থেকে কিভাবে আপনার বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাবেন। কোন ক্যাডার আগে রাখবেন কোন ক্যাডার পরে এই সকল বিষয় নিয়ে আজকের পর থেকে আর কোন কনফিউশন থাকবে না। তাছাড়া জেনারেল ক্যাডার / সাধারণ ক্যাডার, টেকনিক্যাল / প্রফেশনাল ক্যাডার, বোথ ক্যাডার এসব কনফিশন নিয়ে নিয়ে আর কারও দ্বারস্থ হতে হবে না। এছাড়াও জানতে পারবেন বিভিন্ন ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা, অসুবিধা, পদক্রম সহ নানান বিষয়।

বিসিএস ক্যাডার কয়টি ও কি কি?

বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর আগে প্রথমেই আপনাকে বিসিএস ক্যাডারের ধরন সম্পর্কে জানতে হবে। বিসিএস ক্যাডার সাধারণত ২ ধরনের হয়ে থাকে।

১। সাধারণ ক্যাডার (General Cadre)

২। কারিগরি ক্যাডার (Technical Cadre) / পেশাগত ক্যাডার (Professional Cadre)

এই দুই ধরনের সর্বমোট ২৬ টি ক্যাডার রয়েছে যার মধ্যে ১৪ টি সাধারণ ক্যাডার এবং ১২ টি পেশাগত বা, কারিগরি ক্যাডারনিম্নে এই ২ ধরনের ক্যাডার চয়েস এবং পরীক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।

বিসিএস সাধারণ ক্যাডার (BCS General Cadre):

বিসিএস সাধারণ ক্যাডার (General Carder) এর পদগুলো বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্যাডারগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্য সকল প্রার্থীই আবেদনের সময় সাধারণ ক্যাডার (General Cadre) চয়েস করতে পারে। অর্থাৎ প্রার্থী যে বিষয়েই তার স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রী অর্জন করুন না কেন তিনি ১৪টি সাধারণ ক্যাডারের সবগুলোই চয়েস দিতে পারবেন।

কোন প্রার্থী যদি বিসিএস পরীক্ষার জন্য শুধুমাত্র সাধারণ ক্যাডার (General Cadre) চয়েস দিয়ে আবেদন করেন এবং ২০০ নম্বরের বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন, তবে তাকে সাধারণ ক্যাডারের জন্য নির্দিষ্ট ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

বিসিএস পেশাগত ক্যাডার (BCS Professional Cadre) / বিসিএস কারিগরি ক্যাডার (BCS Technical Cadre):

নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে পড়াশোনা করা প্রার্থীরা পেশাগত ক্যাডার (Professional Cadre) বা, কারিগরি ক্যাডার (Technical Cadre) পদ গুলোর জন্য আবেদন করতে পারেন। যেমন – চিকিৎসা, প্রকৌশল, কৃষি ইত্যাদি বিষয়ে পড়াশোনা সম্পন্ন করা প্রার্থীরা এই পদ গুলোর জন্য আবেদন করার সুযোগ পান। পেশাগত ক্যাডার এবং কারিগরি ক্যাডার ছাড়াও এই প্রার্থীরা একই সাথে জেনারেল ক্যাডারেও আবেদন করার সুযোগ পান। পেশাগত ক্যাডার (Professional Cadre) বা, কারিগরি ক্যাডার (Technical Cadre) এর সংখ্যা সর্বমোট ১২ টি।

কোন প্রার্থী যদি বিসিএস পরীক্ষার জন্য শুধুমাত্র পেশাগত ক্যাডার (Professional Cadre) বা কারিগরি ক্যাডার (Technical Cadre) চয়েস দিয়ে আবেদন করেন এবং বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তবে তাকে পেশাগত ক্যাডার বা কারিগরি ক্যাডারের জন্য নির্দিষ্ট ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।এই ক্ষেত্রে জেনারেল ক্যাডারের লিখিত পরীক্ষার জন্য যে নির্দিষ্ট ৯০০ নম্বরের সিলেবাস ছিল সেখান থেকে বাংলা ২য় পত্র এবং বিজ্ঞানের ২০০ নম্বর বিয়োগ হয়ে মোট ৭০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে সাধারণ ক্যাডার (General Cadre) সিলেবাস থেকে। এবং প্রার্থী যে বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন সেই নির্দিষ্ট বিষয় থেকে ২০০ নম্বরের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

অর্থাৎ সাধারণ ক্যাডারের সিলেবাস থেকে ৭০০ নম্বর ও স্নাতক বা সমমান পর্যায়ে অধ্যয়নকৃত বিষয় থেকে ২০০ নম্বর সহ মোট ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

উভয় ক্যাডার (Both Cadre):

যদি কোন প্রার্থী সাধারণ ক্যাডার এবং পেশাগত বা কারিগরি ক্যাডার উভয় ধরনের ক্যাডার সিলেক্ট করে বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এই প্রিক্রিয়াকে Both Cadre বা উভয় ক্যাডার চয়েস বলা হয়। Both Cadre চয়েস দিয়ে যদি কোন প্রার্থী বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তাহলে লিখিত পরীক্ষায় ঐ প্রার্থীকে সাধারণ ক্যাডার (General Cadre) এর জন্য নির্দিষ্ট ৯০০ নম্বর এবং স্নাতক পর্যায়ে নিজের পঠিত বিষয় থেকে ২০০ নম্বর সহ মোট ১১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

চলুন দেখে নেওয়া যাক সর্বমোট ২৬ টি ক্যাডারের মধ্যে কোনগুলো সাধারণ ক্যাডার, কোনগুলো প্রফেশনাল/ টেকনিক্যাল ক্যাডার।

ক্যাডার কোড ও ক্যাডারের ধরন সহ বিসিএস ক্যাডার তালিকা: 

২০২৪ সালের সর্বশেষ হালনাগাদকৃত তথ্য অনুযায়ী ক্যাডার কোড, ক্যাডারের ধরন সহ বিসিএস ক্যাডার তালিকা নিম্নে দেওয়া হলঃ

ক্রমিক নং

Serial

ক্যাডারের নাম

Cadre Name

ক্যাডার কোড

Cadre Code

ক্যাডারের ধরন

Cadre Type

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন) ১১০ সাধারণ ক্যাডার
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (আনসার) ১১৮ সাধারণ ক্যাডার
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (নিরীক্ষা ও হিসাব) ১১২ সাধারণ ক্যাডার
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (সমবায়) ১১৯ সাধারণ ক্যাডার
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (শুল্ক ও আবগারি) ১১৩ সাধারণ ক্যাডার
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পরিবার পরিকল্পনা) ১২৪ সাধারণ ক্যাডার
বিসিএস (খাদ্য) ১১১ সাধারণ ক্যাডার
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পররাষ্ট্র) ১১৫ সাধারণ ক্যাডার
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (তথ্য) ১২১ / ১২২ / ১২৩ সাধারণ ক্যাডার
১০ বিসিএস (পুলিশ) ১১৭ সাধারণ ক্যাডার
১১ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস ডাক ১১৬ সাধারণ ক্যাডার
১২ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক) ১২৫ সাধারণ ক্যাডার
১৩ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কর) ১১৪ সাধারণ ক্যাডার
১৪ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বাণিজ্য) ১২০ সাধারণ ক্যাডার
১৫ বিসিএস (কৃষি) ২২৬ / ২২৭ / ২২৯ প্রফেশনাল ক্যাডার
১৬ বিসিএস (মৎস্য) ২৪০/২৪৪/২৪৫/২৪৮/২৫৩/২৬১/২৬৩ প্রফেশনাল ক্যাডার
১৭ বিসিএস (বন) ৫৫০ প্রফেশনাল ক্যাডার
১৮ বিসিএস (স্বাস্থ্য) ৪১০/৪৫০ প্রফেশনাল ক্যাডার
১৯ বিসিএস (পশু সম্পদ) ২৭০/২৮১ প্রফেশনাল ক্যাডার
২০ বিসিএস (জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল) ৩২০ প্রফেশনাল ক্যাডার
২১ বিসিএস (গণপূর্ত) ৩১১/৩১২ প্রফেশনাল ক্যাডার
২২ বিসিএস (রেলওয়ে প্রকৌশল) ৩৫১/৩৫২ প্রফেশনাল ক্যাডার
২৩ বিসিএস (সড়ক ও জনপদ) ৩৩১/৩৩২ প্রফেশনাল ক্যাডার
২৪ বিসিএস (পরিসংখ্যান) ৫৪০ প্রফেশনাল ক্যাডার
২৫ বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ৬২০ প্রফেশনাল ক্যাডার
২৬ বিসিএস  (কারিগরি শিক্ষা) ৬৩০ প্রফেশনাল ক্যাডার

যেসব বিষয় বিবেচনায় রেখে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাবেন:

যেসব বিষয় বিবেচনায় রেখে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাবেন

বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাতে একজন প্রার্থীকে বেশ কিছু বিষয় মাথায় রেখে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। প্রার্থীর ব্যাক্তিগত ও পারিবারিক পছন্দ, চাকরির সুযোগ সুবিধা, কর্মস্থল এবং কর্মস্থলের পরিবেশ, সামাজিক মর্যাদা ও অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার বিষয়গুলো মাথায় রেখে একজন প্রার্থী বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাতে পারেন। এই ব্লগেই বিভিন্ন ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা, অসুবিধা এবং পদক্রম অংশে আমরা এই বিষয়গুলো আরও বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি।

বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনের পূর্বেই আপনাকে কাগজে কলমে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্টের একটি খসড়া সাজিয়ে ফেলতে হবে যেন আবেদনের সময় কোন প্রকার ভুল হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে। আবেদনের সময় তাৎক্ষনিক ক্যাডার চয়েসের সিদ্ধান্ত নিতে গেলে ভুল করার সম্ভাবনা বেড়ে যায় তাই আগে থেকে কাগজে কলমে এটা সাজিয়ে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।

আপনার পছন্দের ক্যাডার টি সবসময় চয়েস লিস্টের শীর্ষে রাখতে হবে এবং ঐ ক্যাডার টি না পেলে যে ক্যাডার টি আপনার পছন্দ ষেটই দ্বিতীয় অবস্থানে রাখতে হবে। এবং এই পদ্ধতি অনুযায়ী ধারাবাহিক ভাবে বাকি ক্যাডার গুলো সিলেক্ট করতে হবে।

তবে এক্ষেত্রে পররাষ্ট্র ক্যাডার টি ব্যতিক্রম। পররাষ্ট্র ক্যাডারের জন্য আসন সংখ্যা সচরাচর অন্যান্য ক্যাডারের চেয়ে কম থাকে বিধায় প্রতিযোগিতা হয় সবচেয়ে বেশি। তাই বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের পররাষ্ট্র ক্যাডার টি পেতে একজন প্রার্থীর সবচেয়ে বেশি নম্বর অর্জন করতে হয়। এই ক্যাডার টির জন্য পিএসসি সবসময় স্মার্ট প্রার্থী বাছাই করে। ইংরেজি ভাষার উপর বিশেষ দক্ষতা, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী যেমন ভূ-রাজনীতি, কূটনীতি, সামরিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা ইত্যাদি সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান ও আগ্রহ থাকলেই পররাষ্ট্র ক্যাডার টি বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্টের সর্বপ্রথমে (১ম অবস্থানে) রাখতে পারেন।

তবে পছন্দের তালিকার ১ম অবস্থানে কোন কারনে পররাষ্ট্র ক্যাডার টি না রাখতে চাইলে ঐ ক্যাডার টি অন্য কোন অবস্থানে রাখার প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ পররাষ্ট্র ক্যাডার হওয়ার ইচ্ছা থাকলেই কেবল সেটিকে ১ম চয়েস দিন নয়তো এই এই ক্যাডার টি একেবারেই বাদ দিন। এই একই পদ্ধতি বেশি নম্বর অর্জন করা লাগে এমন অন্য ক্যাডারগুলো পছন্দের সময়ও ব্যবহার করুন।

চলুন দেখে নেওয়া যাক কোন ক্যাডার গুলো পেতে বেশি নম্বরের প্রয়োজন হয় –

১। পররাষ্ট্র

২। প্রশাসন / পুলিশ

৩। কাস্টমস / ট্যাক্স / অডিট

৪। আনসার / তথ্য

৫। খাদ্য / রেলওয়ে

৬। তথ্য (বেতার অনুষ্ঠান/ বার্তা)

৭। সমবায় / ডাক / পরিবার পরিকল্পনা

বেশি নম্বর প্রাপ্তির ভিত্তিতে উপরের ক্যাডারের ক্রম টি সাজানো হয়েছে। তাই আমরা বেশি নম্বর লাগে এমন ক্যাডার গুলো প্রথম দিকে রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকি। কারন বিসিএস পরীক্ষার লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পূর্বে আপনি কেমন নম্বর পাবেন তা সম্পর্কে আপনার কোন ধারনা থাকে না। তাই কম নম্বর লাগে এমন ক্যাডার যদি আপনি প্রথম দিকে রাখেন এবং পেয়েও যান তাহলে পরবর্তীতে অনুতাপ করার একটা প্রবণতা দেখা যায়। তাই আমরা বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর পূর্বে বেশি নম্বর লাগে এমন ক্যাডারগুলো প্রথমদিকে এবং তুলনামূলক কম নম্বর লাগে এই পদগুলো পরের দিকে রাখার পরামর্শ দেই। তবে প্রার্থীর বাক্তিগত পছন্দ উল্লেখিত ক্যাডার গুলো থেকে ব্যতিক্রম হলে এই লিস্টে পরিবর্তন করা যাবে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রার্থীদের পররাষ্ট্র ক্যাডার কে প্রথম পছন্দ এবং সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কে সর্বশেষ পছন্দ দেওয়ার একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এটি কোন স্বতঃসিদ্ধ প্রক্রিয়া নয় এবং একজন প্রার্থী তার পছন্দের ক্রম অনুসারে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কে প্রথম এবং পররাষ্ট্র ক্যাডার কে লিস্ট থেকে বাদ ও দিতে পারেন।

বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর ভুল পন্থা এবং বর্জনীয় দিকসমূহ:

ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর সময় প্রার্থীদের মধ্যে বেশকিছু ভুল করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অন্যের ক্যাডার চয়েসের ভিত্তিতে নিজের ক্যাডার চয়েস দেওয়া বা অন্যকে অনুকরণ করা। ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর সময় একটা কথা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে অন্যের জন্য যে ক্যাডার চয়েস আশীর্বাদ তা আপনার জন্য হতাশার কারন হতে পারে। যেহেতু কর্ম জীবনে একজন মানুষের জীবনের দীর্ঘতম একটা সময় অতিবাহিত করতে হয় তাই বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট প্রস্তুত করার সময় নিজের পছন্দকেই সবার আগে প্রাধান্য দেওয়া উচিত।

এছাড়াও বেশি সংখ্যক শূন্য পদের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে এবং কম নম্বর প্রাপ্তিতে ক্যাডার হওয়ার সম্ভাবনার উপর ভিত্তি করে প্রার্থীদের বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। যা বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর আরেকটি ভুল পন্থা।

পদ সংখ্যা বেশি হওয়ায় এবং নম্বর কম লাগায় যদি একজন প্রার্থী কোন ক্যাডার পছন্দের শীর্ষে রাখেন এবং সেই ক্যাডার টি পেয়েও যান তবুও তারা পরবর্তীতে কর্মজীবনে হতাশায় ভুগেন এটা ভেবে যে তার প্রাপ্ত নম্বর পছন্দের শীর্ষে রাখা ক্যাডার প্রাপ্তির তুলনায় অনেক বেশি ছিল কিন্তু সে ক্যাডার চয়েসে ভুল করায় তার কাঙ্খিত ক্যাডার টি পান নি।

বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর সময় এটা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে প্রতিযোগিতা কম বা পদ সংখ্যা বেশি এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে কখনই ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানো যাবে না। পরীক্ষায় ভালো করলে আপনি অবশ্যই কোন না কোন ক্যাডার পাবেন। যদি শুরুতেই পদ সংখ্যা বেশি এবং কম নম্বরে ক্যাডার প্রাপ্তির দিকগুলো মাথায় রেখে ক্যাডার পছন্দ করেন তাহলে আপনার ভালো ক্যাডার প্রাপ্তির সম্ভাবনা শুরুতেই শেষ হয়ে যাবে।

বিসিএস ক্যাডার চয়েসের সময় যা করা যাবে না:

১। অন্যের ক্যাডার চয়েসের ভিত্তিতে নিজের ক্যাডার চয়েসের পরিবর্তন করা যাবে না।

২। কোন ক্যাডার পেতে কম অথবা, বেশি নম্বর লাগে এই ভিত্তিতে ক্যাডার চয়েস করা যাবে না।

৩। বেশি সংখ্যক শূন্য পদের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ক্যাডার চয়েস করা যাবে না।

Live MCQ App Installment Button

Both Cadre এর ক্ষেত্রে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট (Both Cadre BCS Choice List):

Both Cadre এর ক্ষেত্রে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট

Both Cadre এ আবেদন করার বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। যেমন – Both Cadre এ আবেদন করলে একজন প্রার্থীর ক্যাডার প্রাপ্তির সুযোগ অনেক বেড়ে যায়। যেহেতু সকল প্রার্থীই জেনারেল ক্যাডার চয়েস করতে পারেন, সেহেতু জেনারেল ক্যাডার গুলো পেতে একজন প্রার্থীকে অনেক বেশি সংখ্যক প্রার্থীর সাথে প্রতিযোগিতা করতে হয়।

অপর দিকে টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল ক্যাডারের ক্ষেত্রে প্রার্থীকে শুধুমাত্র তার নিজের সাবজেক্ট এর উপর পড়াশোনা সম্পন্ন করা প্রার্থীদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হয়। এক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা কম হওয়ায় ক্যাডার প্রাপ্তির সুযোগ অনেক বেশি বেড়ে যায়। তাই ক্যাডার চয়েসের ক্ষেত্রে Both Cadre চয়েস করাটাই উত্তম।

বিভিন্ন দৃশ্যপট থেকে একজন প্রার্থী Both Cadre চয়েস দিতে চাইলে কিভাবে তার বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট টি কিভাবে সাজাতে পারেন তা বাস্তবসম্মত ভাবে নিম্নে তুলে ধরা হল।

টেকনিক-১ ইংরেজিতে দক্ষতার উপর নির্ভর করে:

ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা থাকলে একজন প্রার্থী পররাষ্ট্র ক্যাডার কে পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রেখে তার ক্যাডার চয়েস লিস্ট টি সাজাতে পারেন। বিপরীতে ইংরেজি স্পিকিং এ দুর্বলতা থাকলে এই তালিকা থেকে পররাষ্ট্র ক্যাডার কে বাদ দিয়ে প্রার্থী তার বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাতে পারেন। মনে রাখবেন পররাষ্ট্র ক্যাডার হয় প্রথমে দিবেন নয়তো একেবারেই বাদ দিবেন।

১. পররাষ্ট্র (ইংরেজি স্পিকিং ভাল হলে)

২. প্রশাসন / পুলিশ

৩. পুলিশ / প্রশাসন

৪. ট্যাক্স / কাস্টমস

৫. কাস্টমস / ট্যাক্স

৬. অডিট / আনসার

৭. আনসার / অডিট

৮. সমবায় / তথ্য

৯. তথ্য / সমবায়

১০. খাদ্য / পরিবার পরিকল্পনা

১১.পরিবার পরিকল্পনা / খাদ্য

১২. বাণিজ্য / ডাক

১৩. ডাক / বাণিজ্য

১৪. রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্য

১৫. শিক্ষা ক্যাডার / স্বাস্থ্য ক্যাডার / প্রকৌশলী / অন্যান্য টেকনিক্যাল ক্যাডার

ইংরেজিতে ভালো ভাবে কথা বলার দক্ষতার উপর ভিত্তি করে পররাষ্ট্র ক্যাডার কে প্রথম চয়েস দিতে পারেন অথবা ক্যাডার চয়েস তালিকা থেকে পররাষ্ট্র ক্যাডার বাদ দিতে পারেন।

টেকনিক-২ প্রফেশনাল / টেকনিক্যাল ক্যাডার ২য় অবস্থানে রেখে:

যারা শিক্ষা ক্যাডার সহ নিজের অধীনে থাকা বিভিন্ন প্রফেশনাল ক্যাডার ও টেকনিক্যাল ক্যাডার ২য় অবস্থানে রেখে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাতে চান তারা নিম্নোক্ত পদ্ধতিতে ক্যাডার চয়েসের তালিকা টি সাজাতে পারেন।

১. প্রশাসন / পুলিশ

২. সাধারণ শিক্ষা / টেকনিক্যাল ক্যাডার / প্রফেশনাল ক্যাডার

৩. ট্যাক্স / কাস্টমস

৪. কাস্টমস / ট্যাক্স

৫. অডিট / আনসার

৬. আনসার / অডিট

৭. সমবায় / তথ্য

৮. তথ্য / সমবায়

৮. খাদ্য / পরিবার পরিকল্পনা

১০.পরিবার পরিকল্পনা / খাদ্য

১১. বাণিজ্য / ডাক

১২. ডাক / বাণিজ্য

১৩. রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্য

টেকনিক-৩ প্রফেশনাল / টেকনিক্যাল ক্যাডার ১ম অবস্থানে রেখে:

যারা স্নাতক ও সমমানের পর্যায়ে নিজের অধ্যয়নকৃত বিষয়ের উপর ভিত্তি করে এর অধীনে থাকা ক্যাডার গুলো পছন্দের তালিকায় প্রথমে রেখে আবেদন করতে চান, অর্থাৎ টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল ক্যাডার ১ম স্থানে রেখে আবেদন করতে চান তারা নিম্নোক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করে ক্যাডার চয়েসের তালিকাটি সাজাতে পারেন।

১. সাধারণ শিক্ষা / টেকনিক্যাল ক্যাডার / প্রফেশনাল ক্যাডার
২. প্রশাসন / পুলিশ
৩. ট্যাক্স / কাস্টমস
৪. কাস্টমস / ট্যাক্স
৫. অডিট / আনসার
৬. আনসার / অডিট
৭. সমবায় / তথ্য
৮. তথ্য / সমবায়
৮. খাদ্য / পরিবার পরিকল্পনা
১০.পরিবার পরিকল্পনা / খাদ্য
১১. বাণিজ্য / ডাক
১২. ডাক / বাণিজ্য
১৩. রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্য

শুধুমাত্র ১ টি (জেনারেল / টেকনিক্যাল / প্রফেশনাল) ক্যাডার চয়েস লিস্ট (General / Professional Cadre BCS Cadre Choice List):

যেকোন একটি! সাধারণ ক্যাডার Vs প্রফেশনাল ক্যাডার

শিক্ষাগত কারনে অনেক বিষয়ে অধ্যয়ন করা প্রার্থীরা বিভিন্ন টেকনিক্যাল ও প্রফেশনাল ক্যাডারে আবেদন করতে পারেন না। তাই সেসকল প্রার্থীরা বাধ্য হয়েই কেবল জেনারেল ক্যাডারের পদ গুলোতে আবেদন করেন। বিপরীতে অনেক প্রার্থী শুধুমাত্র তাদের নিজের অধ্যয়ন করা বিষয়ের উপর চাকরি করতে চান। ফলে তারা শুধুমাত্র তার বিষয়ের অধীনে থাকা টেকনিক্যাল ও প্রফেশনাল ক্যাডার গুলো চয়েস দিয়ে আবেদন করেন।

ক্ষেত্র বিশেষে শুধুমাত্র জেনারেল ক্যাডার, বা শুধুমাত্র টেকনিক্যাল ও প্রফেশনাল ক্যাডার চয়েস দিয়ে বিভিন্ন দৃশ্যপট থেকে একজন প্রার্থী কিভাবে তার বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট টি সাজাতে পারেন তা বাস্তবসম্মত ভাবে নিম্নে তুলে ধরা হল।

টেকনিক-১ শুধুমাত্র জেনারেল ক্যাডার চয়েস:

যেসকল প্রার্থীর স্নাতক বা সমমানের পর্যায়ে অধ্যয়নকৃত বিষয়ের অধীনে কোন টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল ক্যাডার নেই অথবা যেসকল প্রার্থী ঐচ্ছিক ভাবেই ভাবেই বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্টে শুধুমাত্র জেনারেল ক্যাডার রাখতে চান তারা নিম্নোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করে তাদের বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট টি সাজাতে পারেন।

১. পররাষ্ট্র (ইংরেজি স্পিকিং স্ক্লিল ভাল হলে)

২. প্রশাসন / পুলিশ

৩. পুলিশ / প্রশাসন

৪. ট্যাক্স / কাস্টমস

৫. কাস্টমস / ট্যাক্স

৬. অডিট / আনসার

৭. আনসার / অডিট

৮. সমবায় / তথ্য

৯. তথ্য / সমবায়

১০. খাদ্য / পরিকল্পনা

১১.পরিবার পরিকল্পনা / খাদ্য

১২. বাণিজ্য / ডাক

১৩. ডাক / বাণিজ্য

১৪. রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্য

ইংরেজিতে ভালো ভাবে কথা বলার দক্ষতার উপর ভিত্তি করে পররাষ্ট্র ক্যাডার কে প্রথম চয়েস দিতে পারেন অথবা ক্যাডার চয়েস তালিকা থেকে পররাষ্ট্র ক্যাডার বাদ দিতে পারেন।

টেকনিক-২ শুধুমাত্র টেকনিক্যাল / প্রফেশনাল ক্যাডার চয়েস:

যদি কোন প্রার্থী শুধুমাত্র তার অধ্যয়নকৃত বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ক্যাডার চয়েস করতে চান তবে তিনি শুধুমাত্র তার স্নাতক পর্যায়ে পঠিত বিষয়ের অধীনে থাকা টেকনিক্যাল / প্রফেশনাল ক্যাডার টি চয়েস করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে প্রার্থীর চয়েস করা ক্যাডারের সংখ্যা হবে ১ টি। যেমন –

১। সাধারণ শিক্ষা / টেকনিক্যাল ক্যাডার / প্রফেশনাল ক্যাডার

ঘরে বসে বিসিএস, ব্যাংক, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ, NTRCA, ৯ম-২০তম গ্রেড সহ সকল চাকরির লাইভ এক্সামের মাধ্যমে প্রস্তুতি নিতে live MCQ অ্যাাপ টি ইন্সটল করুন

বিভিন্ন ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা ও অসুবিধা:

একজন প্রার্থীর বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর পূর্বে বিভিন্ন ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে জানা থাকলে তার জন্য বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানো অনেক টা সহজ হয়। তাই আপনি যেন বিভিন্ন ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে অবগত হয়ে সঠিক ভাবে ক্যাডার চয়েস করতে পারেন সেজন্য আমরা নিম্নে বিভিন্ন ক্যাডারের কাজ, সুযোগ সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা ও অসুবিধা:

বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্টের মধ্যে প্রশাসন ক্যাডার অন্যতম একটি আকর্ষণীয় ক্যাডার। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্যাডার চয়েসের প্রথম সারিতেই প্রশাসন ক্যাডার বা এডমিন ক্যাডার চয়েজ দিতে দেখা যায়। এর কারন টি নিশ্চয়ই আপনি এতক্ষণে জেনে গেছেন। সরকারের সকল ধরনের প্রশাসনিক কাজ পরিচালনা করে থাকেন একজন প্রশাসন ক্যাডার। সকল ক্যাডারের সমন্বয়ে কাজ করা এই ক্যাডার অন্যান্য ক্যাডারের চেয়ে অধিক ক্ষমতাবান হলেও কর্মক্ষেত্রে রয়েছে বেশ কিছু সুবিধা ও অসুবিধা। সংক্ষেপে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো আলোচনা করা হল।

বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:

  • বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের মধ্য থেকে ৮০ শতাংশ কর্মকর্তারই সচিবালয়ে নিয়োগ হয়। তাই প্রশাসন বা এডমিন ক্যাডার হতে পারলে সচিবালয়ে পদোন্নতি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • প্রশাসন ক্যাডারের সবচয়ে বড় আকর্ষন হচ্ছে এর কাজের বৈচিত্র্য। একজন প্রশাসন ক্যাডার তার কর্মজীবনে বিভিন্ন অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে কাজ করার সুযোগ পান।
  • যোগদানের পর থেকে একজন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন মেয়াদী প্রশিক্ষণের সুযোগ পান। এছাড়া সরকারি বৃত্তি নিয়ে বিদেশে মাস্টার্স এবং পিএইচডি করারও সুযোগ রয়েছে।
  • স্থানীয় পর্যায়ে প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার সুযোগ ও পেয়ে থাকেন।
  • প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগন সরকার থেকে গাড়ি এবং বাংলোর সুবিধা পেয়ে থাকেন।
  • প্রশাসন ক্যাডারের প্রশাসনিক এবং সামাজিক মর্যাদা অনেক বেশি।

বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের অসুবিধা:

  • বিসিএস প্রশাসন / এডমিন ক্যাডারের উপর অন্যান্য ক্যাডারদের তুলনায় রাজনৈতিক চাপ অনেক বেশি থাকে। ফলে এই ক্যাডারে থেকে স্বাধীন ভাবে কাজ পরিচালনা করার সুযোগ অনেক কম।
  • অন্যান্য ক্যাডারের চেয়ে প্রশাসন ক্যাডারের কাজের বৈচিত্র্য বেশি হওয়ায় এই পদে বদলিও খুব বেশি হয়।

বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের পদক্রম ও গ্রেড:

সরকারের প্রশাসনিক কাজগুলো পরিচালনা করাই একজন প্রশাসন ক্যাডারের কাজ। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের পদগুলোকে মূলত মাঠ প্রশাসন এবং সচিবালয় এই ২ ভাগে ভাগ করা যায়। ক্যাডার সার্ভিসে নতুন নিয়োগ প্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা সর্বপ্রথম মাঠ প্রশাসনে সহকারী কমিশনার পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। এবং পরবর্তিতে বিভিন্ন সময়ে বদলি ও প্রমোশনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ পর্যায়ে অর্থাৎ সিনিয়র সচিব পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।

এক্ষেত্রে একজন প্রশাসন ক্যাডারের পদসোপান / পদক্রম হয় এমন –

সহকারী কমিশনার > সিনিয়র সহকারী কমিশনার/উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা/অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক > জেলা প্রশাসক > বিভাগীয় কমিশনার এবং কেন্দ্রীয় প্রশাসনে সহকারী সচিব > সিনিয়র সহকারী সচিব > উপসচিব> যুগ্ম সচিব > অতিরিক্ত সচিব > সচিব > সিনিয়র সচিব।

বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা ও অসুবিধা:

বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্টের অন্যতম আরেকটি আকর্ষনীয় পদ হচ্ছে বিসিএস ফরেইন ক্যাডার বা পররাষ্ট্র ক্যাডার। প্রার্থীদের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই ক্যাডারটিকে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্টের প্রথম সারিতে রাখতে দেখা যায়। প্রথম স্থানে রাখার কারনটি নিশ্চয়ই এই পোষ্ট টি পড়ে আপনি জেনে গেছেন!

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের প্রতিনিধিত্ব করাই পররাষ্ট্র ক্যাডারের প্রধান কাজ। যার মধ্যে রয়েছে অন্য দেশের সঙ্গে নিজের দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন ও বিনিময়; আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, বিভিন্ন ধরনের সমঝোতা স্বাক্ষর ও চুক্তি, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সহ উচ্চপদস্থ ও অন্যান্য দেশের প্রধানদের বৈদেশিক সফর ব্যাবস্থাপনা ও প্রটোকল সংক্রান্ত কাজ। এছাড়াও অন্য দেশে কর্মরত বাংলাদেশী নাগরিকদের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা এবং নিরাপত্তা প্রদান করাও এই ক্যাডারের অন্যতম কাজ।

অন্যন্য ক্যাডারের মতো বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারেরও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। সংক্ষেপে পররাষ্ট্র ক্যাডারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ও অসুবিধাগুলো আলোচনা করা হল –

বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:

  • পররাষ্ট্র ক্যাডারের উপর কোন রাজনৈতিক চাপ না থাকায় স্বাধীন ভাবে নিজের কাজ পরিচালনা করার সুযোগ রয়েছে।
  • এই ক্যাডারের কর্মকর্তারা পরিবার সহ কূটনৈতিক পাসপোর্ট পান।
  • অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের শুরুতেই অধিদপ্তরে কাজ করতে হলেও পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তারা শুরুতেই মন্ত্রণালয়য়ে কাজ করার সুযোগ পান।
  • দূতাবাসে পদায়ন হলে পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তারা দেশের নিয়মিত বেতনের পাশাপাশি অতিরিক্ত ১২০০ ডলার মাসিক ভাতা প্রাপ্ত হন।
  • বিদেশে থাকা অবস্থায় ট্যাক্স বিহীন গাড়ি ও অন্যান্য পণ্য ক্রয়ের সুবিধা।
  • দেশে ও বিদেশে সরকারি খরচে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেয়ার সুযোগ।
  • বিদেশের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান গুলোতে পরিবার সহ কূটনৈতিক মর্যাদায় অংশগ্রহণের সুযোগ।
  • পরারাষ্ট্র ক্যাডারের প্রতিনিধি কম থাকার রাষ্ট্রদূত পর্যন্ত পদোন্নতির সুযোগ রয়েছে।
  • রাজনৈতিক চাপ থাকে না বিধায় স্বাধীন ভাবে কাজ পরিচালনা করার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের অসুবিধা:

  • চাকরির শুরুতে কোন গাড়ি দেওয়া হয় না। তখন শেয়ারড ট্রান্সপোর্টে যাতায়াত করতে হয়।
  • কর্মজীবনের শুরুতেই পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সহকারী সচিব পদে নিয়োগ প্রদান করা হয় যেখানে প্রশিক্ষণমূলক কাজ হিসেবে টাইপিং থেকে শুরু করে সকল দাপ্তরিক কাজ করতে হয়।
  • একজন পররাষ্ট্র ক্যাডার চাকরির শুরুতে দুই বছর পর্যন্ত বা চাকরি স্থায়ী না হওয়া পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অধীনে কর্মরত থাকেন এবং পরবর্তী ছয় বছরে দুই টি মিশনে দেশের বাইরে কর্মরত থাকেন। পরবর্তীতে আবার দুই বছরের জন্য দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়য়ে পদায়ন হন। ফলে কর্মজীবনে এক জায়গায় বেশিদিন থাকার নিশ্চয়তা থাকে না।

তবে অন্যান্য ক্যাডারের তুলনায় এই ক্যাডারে সুযোগ সুবিধা তুলনামূলক বেশি থাকে।

বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের পদক্রম ও গ্রেড:

অন্যান্য ক্যাডারের মতোই পররাষ্ট্র ক্যাডার সরকারি বেতন স্কেল ৯ম গ্রেড থেকে তার কর্মজীবন শুরু করে। কর্মজীবনের শুরুতে সহকারী সচিব পদে নিয়োগপ্রাপ্ত এই ক্যাডারগণ পদোন্নতি পেয়ে সিনিয়র সচিব ও পররাষ্ট্রসচিব পদে পদায়ন হন।

এক্ষেত্রে একজন পররাষ্ট্র ক্যাডারের পদসোপান / পদক্রম হয় এমন –

মন্ত্রনালয়ের জন্য প্রযোজ্য:

সহকারী সচিব > সিনিয়র সহকারী সচিব > পরিচালক > মহাপরিচালক > অতিরিক্ত পররাষ্ট্রসচিব > সচিব/পররাষ্ট্রসচিব।

মিশনের জন্য প্রযোজ্য (দূতাবাসে পদায়ন হলে):

৩য় সচিব > ১ম/২য় সচিব > কাউন্সিলর > মিনিস্টার > অ্যাম্বাসেডর/হাইকমিশনার ।

বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা ও অসুবিধা:

বিসিএস পুলিশ ক্যাডার চাকরি প্রার্থীদের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় একটি পদ। এটিকে কেউ পছন্দের তালিকায় শীর্ষে আবার কেউবা দ্বিতীয় বা তৃতীয় অবস্থানে রাখেন। তবে অবস্থান যাই হোক না কেন দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে দেশ ও দেশের মানুষকে মাঠ পর্যায় থেকে সেবা প্রদান করার সুযোগ রয়েছে এই ক্যাডারে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার এই পুলিশ ক্যাডারের পদায়ন, পদোন্নয়ন, বদলি সহ অন্যান্য বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।

অন্যান্য ক্যাডারের মতো পুলিশ ক্যাডারেও রয়েছে নানান সুযোগ সুবিধা এবং অসুবিধা। সংক্ষেপে পুলিশ ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা ও অসুবিধাগুলো আলোচনা করা হল।

বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:

  • রাজশাহীর সারদা একাডেমীতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী সম্পন্ন করার সুযোগ রয়েছে।
  • এই ক্যাডারে নিজের এবং পরিবারের জন্য সরকারি রেশন পাওয়া যায়।
  • একজন পুলিশ ক্যাডার চাকরির শুরুতেই গাড়ি, বাংলো বডিগার্ড সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধাদি প্রাপ্ত হবেন।
  • বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের জন্য সরকারি খরচে দেশে ও দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • জাতিসংঘের নিরাপত্তা মিশনে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে যেখান থেকে প্রতি মিশনে অনেক টাকার সম্মানী পাওয়া যায়।
  • দেশের নিরাপত্তামূলক পরিকল্পনাগুলো ফ্রন্টলাইনার হয়ে বাস্তবায়নের সুযোগ পাওয়া যায়।
  • এই ক্যাডারে থেকে নিকট আত্মীয়স্বজন এবং অসহায় মানুষদের সরাসরি আইনি সাহায্য সহযোগিতা করা যায়।

বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের অসুবিধা সমূহ:

  • দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সরাসরি ফ্রন্টলাইনার হিসেবে জড়িত থাকায় পুলিশ ক্যাডার একটি ঝুকিপূর্ণ পেশা হিসেবে বিবেচিত।
  • কোন নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা না থাকায় পুলিশ ক্যাডারের চাকরিতে প্রয়োজনে ২৪ ঘণ্টাই ডিউটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ফলে পরিবার কে সময় দেওয়া ও ওয়ার্ক – লাইফ ব্যালেন্স করার সুযোগ এই ক্যাডারে কম থাকে।
  • দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে জড়িত থাকায় এই ক্যাডারে কোন বড় ছুটি পাওয়া যায় না।
  • বিভিন্ন রাজনৈতিক চাপের জন্য স্বাধীন ভাবে কাজ করা করার সুযোগ কম থাকে।

বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের পদক্রম ও গ্রেড:

চাকরির শুরুতে একজন পুলিশ ক্যাডার সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন যা অন্যান্য বিসিএস ক্যাডারের মতো সরকারি বেতন স্কেল নবম গ্রেডের অন্তর্ভুক্ত। একজন পুলিশ ক্যাডার বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়োগ প্রাপ্ত হতে পারেন।

পুলিশের অন্যান্য অঞ্চল ও মেট্রোপলিটন অঞ্চলের পদক্রম ও পদসোপানের উপর ভিত্তি করে একজন পুলিশ ক্যাডারের পদক্রম বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে যা নিম্নে তুলে ধরা হল।

একজন বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের পদসোপান / পদক্রম হয় এমন –

সাধারণ পুলিশ অঞ্চলগুলোতে পদায়ন হলে –

সহকারী পুলিশ সুপার > অতিরিক্ত পুলিশ সুপার > পুলিশ সুপার > অতিরিক্ত ডিআইজি > ডিআইজি > অতিরিক্ত আইজিপি > আইজিপি পর্যন্ত পদোন্নতি হয়।

মেট্রোপলিটন এলাকায় পদায়ন হলে –

সহকারী পুলিশ কমিশনার > উপ পুলিশ কমিশনার > যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত আইজিপি/ডিআইজি পদমর্যাদা) পর্যন্ত পদোন্নতি হয়

বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা এবং অসুবিধা:

নিরিবিলি কর্ম পরিবেশের জন্য এবং রাজনৈতিক চাপ না থাকায় অনেকে কাস্টমস ক্যাডার কে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্টের প্রথমে রাখেন। সরকারের রাজস্ব আদায় করাই এই ক্যাডারের কাজ।

কাস্টমস ক্যাডার কর্মকর্তাদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দুটি উইং এ – ১। কাস্টমস, এক্সাইজ এন্ড ভ্যাট (শুল্ক ও আবগারি) ও ২। ইনকাম ট্যাক্স (কর) এর অধীনে শুল্ক, আবগারী ও মূল্য সংযোজন কাজগুলো করতে হয়। দেশের রাজস্ব আয়েরর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব এই ক্যাডারের কর্মকর্তাদের অধীনে থাকে বিধায় বিসিএস কাস্টমস ক্যাডার অনেক গুরুত্বপুর্ণ এবং জনপ্রিয় একটি পদ।

অন্যান্য ক্যাডারের মত কাস্টমস ক্যাডারেরও রয়েছে বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা এবং অসুবিধা । সংক্ষেপে বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হল।

বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:

  • চাকরির শুরুতেই কাস্টমস ক্যাডারদের যাতায়াতের জন্য গাড়ির সুবিধা দেওয়া হয়।
  • বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারে বৈধভাবে অনেক বেশি আয়ের সুযোগ রয়েছে। রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া বিভিন্ন চোরাচালান ধরিয়ে দিতে পারলে মূল্যবেঁধে ১০-৪০% পর্যন্ত পুরষ্কার পাওয়া যায়।
  • এই ক্যাডারে শুল্ক গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
  • সরকারি খরচে দেশের বাইরে মাস্টার্স ও পিএইচডি এর মতো উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারের অসুবিধা:

  • দপ্তর ভেদে বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারের চাকরিতে অনেক কাজের চাপ থাকে।
  • এই ক্যাডার দুর্নীতির জন্য অধিক সমালোচিত।
  • এই ক্যাডারে পদোন্নতি মোটামুটি ভালো তবে ৩১তম বিসিএস এ এই পদে অনেক বেশি নিয়োগ হওয়ায় পরবর্তীতে আটটি বিসিএস এ এই পদে বেশি শূন্য পদ চোখে পরে নি।

বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারের পদক্রম ও গ্রেড:

বিসিএস কাস্টমস ক্যাডার অন্যান্য ক্যাডারের মতোই সরকারি বেতন স্কেল ৯ম গ্রেড থেকে কর্মজীবন শুরু করে। কর্মজীবনে বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারের বিভিন্ন সময় বদলি ও পদোন্নতি হয়ে থাকে।

এক্ষেত্রে বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারের পদক্রম / পদসোপান হয় এমন –

সহকারী কমিশনার, উপকমিশনার, যুগ্ম কমিশনার, অতিরিক্ত কমিশনার, কমিশনার, সদস্য। এছাড়াও একজন কাস্টমস ক্যাডারের ট্রেনিং একাডেমি ও অন্যান্য দপ্তরের পরিচালক, উপপরিচালক, যুগ্ম পরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, মহাপরিচালক প্রভৃতি পদে পদায়ন হয়ে থাকে

এছাড়াও একজন কাস্টমস ক্যাডার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান (ইনকাম ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট প্রভৃতি উইংয়ের প্রধান) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

বিসিএস অডিট ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা এবং অসুবিধা:

সরকারি ব্যায় কার্যক্রম পরিচালনার সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যায় সম্পর্কে হিসাব ও নিরীক্ষা করাই বিসিএস অডিট ক্যাডার (নিরীক্ষা ও হিসাব) এর কাজ। অডিট বা নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারের রয়েছে অডিট অধিদপ্তর ও অ্যাকাউন্টস বিভাগ নামে ২ টি বিভাগ।

বিসিএস অডিট ক্যাডারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা, অসুবিধা ও পদক্রম নিম্নে তুলে ধরা হল:

বিসিএস অডিট ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:

  • সরকারি প্রায় সকল বিভাগের ব্যায় সংশ্লিষ্টতা থাকায় প্রতিটি বিভাগেই অডিট ক্যাডার রয়েছে। তাই এই ক্ষেত্রে কাজের বৈচিত্র্য দেখার সুযোগ রয়েছে।
  • দেশ ও বিদেশে সরকারি খরচে প্রশিক্ষণে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • সরকারি অডিট প্রতিষ্ঠানগুলো ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড অব সুপ্রিম অডিট ইনস্টিটিউশন (আইএসএআই) এর নীতিমালা অনুসরণ করে পরিচালিত হয় বিধায় কাজের পরিবেশ ভালো।
  • চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পরেও বিভিন্ন কোম্পানি ও অডিট ফার্ম থেকে অডিট পরিচালনা করার প্রস্তাব আসে।
  • অন্যান্য ক্যাডারের মতো রাজনৈতিক চাপ না থাকায় স্বাধীন ভাবে কাজ পরিচালনা করার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস অডিট ক্যাডারের অসুবিধা:

  • এই ক্যাডারের বিরুদ্ধে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ থাকে।

বিসিএস অডিট ক্যাডারের পদক্রম ও গ্রেড:

অন্যান্য সকল ক্যাডারের মতোই বিসিএস অডিট ক্যাডারও সরকারি বেতন স্কেল ৯ম গ্রেড থেকে তার কর্মজীবন শুরু করেন। বিসিএস অডিট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের হিসাব (সিভিল) বিভাগে পোস্টিং হলে ঢাকা এবং অন্যান্য বিভাগীয় শহর গুলোতে পদায়ন হতে পারে। এই ক্যাডারে পদায়নের উপর ভিত্তি করে পদের নাম নির্ধারিত হয়।

পদায়ন ঢাকায় হলে হিসাব ভবন অফিসের কন্ট্রোলার জেনারেল অব আকাউন্টস (সিজিএ) অফিস প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার অধীনে অ্যাডিশনাল সিজিএ, ডেপুটি সিজিএ, অ্যাসিস্ট্যান্ট সিজিএ দায়িত্ব পালন করে থাকেন। আবার ঢাকায় মন্ত্রণালয়ভিত্তিক ৫২ টি চিফ অ্যাাকাউন্টস অ্যান্ড ফাইন্যান্স (সিএএফও) অফিস আছে যেখানে প্রধান হিসেবে দায়িত্বপালনের সুযোগ রয়েছে যার অধীনে এসিস্ট্যান্ট সিএএফও, ডেপুটি সিএএফও দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়াও ঢাকা হেড অফিসে কন্ট্রোলার জেনারেল অব ডিফেন্স ফাইন্যান্স (সিজিডিএফ) বিভাগের প্রধান হিসেবে একজন বিসিএস অডিট ক্যাডার দায়িত্ব পালন করেন। তার অধীনে জয়েন্ট সিজিডিএফ, ডেপুটি সিজিডিএফ এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট সিজিডিএফ দায়িত্ব পালন করেন।

পদায়ন ঢাকা বা অন্যান্য বিভাগীয় শহরে হলে বিভাগীয় পর্যায়ে আট বিভাগে আট জন ডিভিশনাল কন্ট্রোলার অব অ্যাাকাউন্টস (ডিসিএ) অফিস প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার অধীনে ডেপুটি ডিসিএ অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিসিএ কাজ করে থাকেন।

বিসিএস ট্যাক্স ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা এবং অসুবিধা:

আয়কর নিয়ে অর্থ মন্ত্রনালয়ের অধীনে এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) এর শাখায় কাজ করেন বিসিএস কর ক্যাডার বা বিসিএস ট্যাক্স ক্যাডার।সরকারের সরাসরি প্রত্যক্ষ কর নিয়ে এই ক্যাডার কাজ করে থাকে। কর বা ট্যাক্স সার্ভিসের মূল কাজ করনীতি প্রণয়ন করা, ট্যাক্স রিটার্ন, ট্যাক্স রিটার্ন অডিট, কর ফাঁকি উদঘাটন, কর জরিপ করা, উৎসে কর কর্তন মনিটরিং করা, চলতি কর, বকেয়া কর ও অগ্রিম কর আদায় করা ইত্যাদি।

অন্যান্য ক্যাডারের মতো বিসিএস কর ক্যাডারের সুবিধা অসুবিধাগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরা হল।

বিসিএস ট্যাক্স ক্যাডার / কর ক্যাডারের সুবিধা:

  • কর ফাঁকি ধরতে পারলে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হয়।
  • নভেম্বর ছাড়া বছরের অন্যান্য সময়ে কাজের পরিমাণ তেমন থাকে না।
  • সরকারি খরচে দেশে, বিদেশে ট্রেনিং এ যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • ৫ম গ্রেড থেকে ব্যাক্তিগত গাড়ি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস ট্যাক্স ক্যাডার / কর ক্যাডারের অসুবিধা:

  • এই বিভাগের উর্ধ্বতন পদগুলোতে প্রশাসন ক্যাডার থেকে পদায়ন হয় বিধায় পদোন্নতি পেয়ে শীর্ষস্থানে যাওয়া একটু কঠিন।
  • এই ক্যাডারে নিজের জেলায় পদায়নের সুযোগ নেই তবে আশেপাশের জেলাগুলোতে আসার সুযোগ রয়েছে।
  • খুব অল্প সংখ্যক জনবল নিয়ে কাজ করতে হয় বিধায় বছরের শেষ সময়ে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় অনেক কাজের চাপ থাকে।
  • শুরুতেই ব্যাক্তিগত গাড়ি পাওয়া যায় না।

বিসিএস ট্যাক্স / কর ক্যাডারের পদক্রম:

কর বা ট্যাক্স ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ বাংলাদেশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য। একজন বিসিএস কর ক্যাডার সহকারী কর কমিশনার হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় পদোন্নতি এবং বদলির মাধ্যমে কর কমিশনার এবং সদস্য হিসেবে পদায়ন হন।

এক্ষেত্রে বিসিএস ট্যাক্স ক্যাডার / কর ক্যাডারের পদক্রম বা পদসোপান হয় এমন –

সহকারী কর কমিশনার > উপ-কর কমিশনার > যুগ্ম কর কমিশনার > অতিরিক্ত কর কমিশনার > কর কমিশনার > সদস্য

বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা এবং অসুবিধা:

সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ক্যাডার রয়েছেন বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে। সরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকতা করে এবং শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের বিভিন্ন পদে কাজ করে সরকারের শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করাই শিক্ষা ক্যাডারের দায়িত্ব। সংখ্যায় অধিক হওয়ার পরেও সুযোগ সুবিধার দিক থেকে অন্যান্য ক্যাডার থেকে কিছুটা পিছিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত ক্যাডারগন।

সংক্ষেপে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করা হল:

বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:

  • এই ক্যাডারে নিজের জেলায় পদায়নের সুযোগ রয়েছে।
  • শিক্ষকতা পেশা ভালো লাগলে এই ক্যাডার আপনার ভালো লাগবেই।
  • শিক্ষকতা পেশায় জড়িত থাকতে হয় বিধায় এই ক্যাডারে মাঠপর্যায়ে শিক্ষার মানোন্নয়নের সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের অসুবিধা:

  • বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে অন্যান্য ক্যাডারের তুলনায় সুযোগ সুবিধা অনেক কম।
  • এই ক্যাডারে পদোন্নতি কিছুটা ধীরে হয়।

বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের পদক্রম ও গ্রেড:

পদায়ন ও প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের পদক্রম নির্ধারিত হয়ে থাকে। একজন শিক্ষা ক্যাডার কোন সরকারি কলেজের শিক্ষক বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়য়ের কর্মকর্তা হতে পারেন। একজন শিক্ষা ক্যাডার প্রভাষক বা লেকচারার হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন।

একজন শিক্ষা ক্যাডার যদি সরকারি কলেজের শিক্ষক হন তবে তার পদক্রম হয় এমন –

লেকচারার > অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর > অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর > প্রফেসর

এছাড়াও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারী কলেজগুলোর বিভাগীয় প্রধান এবং কলেজের প্রিন্সিপাল এই শিক্ষা ক্যাডার থেকেই হয়ে থাকে। এছাড়াও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিভিন্ন পদে ও শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের বিভিন্ন শাখায় শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাগন কর্মরত থাকেন।

বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা এবং অসুবিধা:

দেশের খাদ্যের উৎপাদন, বিপনন ও বিতরণের সাথে সরাসরি যুক্ত থাকেন বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের কর্মকর্তাগন। একদম তৃনমূল পর্যায় থেকে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এই ক্যাডারের বিচরণ থাকে।

সংক্ষেপে বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো আলোচনা করা হল –

বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের সুবিধা:

  • কোন রাজনৈতিক চাপ থাকেনা বিধায় স্বাধীন ভাবে কাজ পরিচালনা করা যায়।
  • মন্ত্রণালয় থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ থাকায় কাজের বৈচিত্র্য রয়েছে।
  • সরাসরি বাংলাদেশের কৃষিতে উন্নয়ন করার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের অসুবিধা:

  • এই ক্যাডারে চলাচলের জন্য ব্যাক্তিগত গাড়ি পাওয়ার সুযোগ নেই।
  • অন্যান্য ক্যাডারের মতো সরকার কর্তৃক প্রদত্ত কোন প্রণোদনা এই ক্যাডারে থাকে না।

বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের পদক্রম:

এই ক্যাডারে চাকরির শুরুতেই খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে মন্ত্রণালয়য়ে নিয়োগ প্রদান করা হয়। সেখান থেকে খাদ্য অধিদপ্তরে এবং পরবর্তীতে জেলা পর্যায়ে পদায়ন করা হয়।

বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা এবং অসুবিধা:

দেশের আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের সাম্যাবস্থা ঠিক রাখার দায়িত্বে নিযুক্ত থাকেন বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারের কর্মকর্তাগন। আপনারা জানেন যে বাংলাদেশের আমাদানি ব্যায় মিটানোর জন্য অনেকটাই রপ্তানি আয়ের উপর নির্ভর করতে হয়। তাই এই ক্যাডার টি সরকারের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।

বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারের সুবিধা:

  • সরকারি খরচে বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • কর্মজীবনের শুরুতেই ট্রান্সপোর্টের জন্য ব্যাক্তিগত গাড়ি প্রদান করা হবে।
  • এই ক্যাডারে স্বাধীন ভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
  • বাণিজ্য ক্যাডারে দ্রুত পদোন্নতি পাওয়া যায়।
  • এই ক্যাডারে দ্রুত পদোন্নতি হয়।

বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারের অসুবিধা:

  • এই ক্যাডারে ঘন ঘন বদলি লক্ষ্য করা যায়।
  • ভবিষ্যতে এই মন্ত্রনালয়ের সাথে প্রশাসন ক্যাডার যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিধায় উচ্চপদস্থ পদগুলো প্রশাসন ক্যাডার থেকে পদায়ন হতে পারে।
  • প্রশাসন ক্যাডারের সাথে একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্তে একীভূত হওয়ায় ভবিষ্যতে বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডার বিলুপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে।

বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারের পদক্রম:

বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের বিভিন্ন পদে বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারগন তাদের কর্মজীবন শুরু করেন। বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে থাকা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিসিসি), প্রতিযোগিতা কমিশন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও ফরেইন ট্রেড ইন্সটিটিউটে বাণিজ্য ক্যাডারদের পদায়ন হয়।

বিসিএস আনসার ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা এবং অসুবিধা:

সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তা রক্ষা, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রন, জননিরাপত্তামূলক কাজ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, দারিদ্র বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন ও বিভিন্ন আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে কাজ করে আসছে বিসিএস আনসার ক্যাডার। এই ক্যাডারের সরাসরি আইন প্রয়োগ করার সুযোগ না থাকলেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সাহায্য করে এই আনসার।

বিসিএস আনসার ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:

  • চাকরির শুরুতেই বাড়ি, গাড়ি ও বডিগার্ডের সুবিধা পাওয়া যায় যা সাধারণত পুলিশ ক্যাডাররা পেয়ে থাকেন।
  • এই ক্যাডারে নিজের এবং পরিবারের জন্য সরকারি রেশন পাওয়া যায়।

বিসিএস আনসার ক্যাডারের অসুবিধা:

  • সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল কর্মকর্তাদের আনসারের সর্বোচ্চ মহাপরিচালক পদের নিয়োগ দেওয়া হয় বিধায় আনসার ক্যাডার থেকে আনসারের সর্বোচ্চ পদে পদায়ন পাওয়া যায় না।
  • সরাসরি আইন প্রয়োগ করার ক্ষমতা না থাকায় আনসার ক্যাডারের প্রভাব পুলিশ ক্যাডারের চেয়ে কম।

বিসিএস আনসার ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:

কর্মজীবনের শুরুতেই বিসিএস আনসার ক্যাডারগন আনসার ও ভিডিপি অধিদপ্তরের অধীনে সহকারী জেলা অ্যাডজুট্যান্ট বা সহকারী পরিচালক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় বদলি ও পদোন্নতি হয়ে দেশের ৮ টি প্রধান সহরের আনসার রেঞ্জ ও হেডকোয়ার্টারে পদায়ন হয়ে থাকে।

এক্ষেত্রে আনসার ক্যাডারের পদক্রম বা পদসোপান হয় নিম্নরূপ –

সহকারী জেলা অ্যাডজুট্যান্ট / সহকারী পরিচালক > উপ পরিচালক / ডেপুটি ডিরেক্টর > পরিচালক / ডিরেক্টর > উপ মহাপরিচালক / ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল

বিসিএস তথ্য ক্যাডারের দ্বায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা এবং অসুবিধা:

সরকারের বিভিন্ন কাজের তথ্য উপাত্ত সাংবাদিকদের কাছে পৌছে দেন তথ্য ক্যাডার। এই ক্যাডারের অধীনে তথ্য সাধারণ, তথ্য বেতার বার্তা ও তথ্য বেতার অনুষ্ঠান নামে ৩ তি সাব ক্যাডার রয়েছে।

বিসিএস তথ্য ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:

  • সহজেই মিডিয়ায় পরিচিত তৈরি হয়।
  • কোন রাজনৈতিক চাপ থাকেনা বিধায় স্বাধীনভাবে কাজ পরিচালনা করার সুযোগ রয়েছে।
  • তথ্য ক্যাডারের চাকরিতে পুল সিস্টেমের মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির অফিসে তথ্য কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস তথ্য ক্যাডারের অসুবিধা:

  • এই ক্যাডারের কাজের পরিধি অনেক কম হওয়ার প্রশাসনিক ক্ষমতা ও সম্মান খুব কম।
  • নিয়মিত মিডিয়ার সামনে আসতে হয় বিধায় সমালোচিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • অতীতে তথ্য ক্যাডারের কর্মরত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি পাওয়ার জটিলতা দেখা গেছে এবং পদোন্নতি না পেয়েও অবসরে যাওয়ার ঘটনা রয়েছে।

বিসিএস তথ্য ক্যাডারের পদসোপান / পদক্রম:

বিসিএস তথ্য ক্যাডারের মধ্যে আরও ৩ ধরনের (সাধারণ ক্যাডার) রয়েছে। এই ৩ টি সাধারণ ক্যাডারের মধ্যে রয়েছে সহকারী পরিচালক (তথ্য), সহকারী পরিচালক (অনুষ্ঠান), এবং সহকারী বার্তা নিয়ন্ত্রক।

সহকারী পরিচালক (তথ্য) এর ক্ষেত্রে একজন তথ্য ক্যাডার সহকারী পরিচালক / তথ্য অফিসার / গবেষণা কর্মকর্তা / সমমানের পদে তার কর্মজীবন শুরু করেন। এবং বাকী দুই ক্যাডারের ক্ষেত্রে সহকারী পরিচালক অনুষ্ঠান ও সহকারী বার্তা নিয়ন্ত্রক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এছাড়াও বিসিএস তথ্য ক্যাডারের মধ্যে সহকারী বেতার প্রকৌশলী আরেকটি (টেকনিক্যাল ক্যাডার) রয়েছে ।

একজন তথ্য ক্যাডার বিভিন্ন বদলি ও পদোন্নতির মাধ্যমে যুগ্ন সচিব, অতিরিক্ত সচিব, সিনিয়র সহকারী সচিব, উপসচিব এবং সিনিয়র সচিব হিসেবে পদায়ন হতে পারেন।

বিসিএস ডাক ক্যাডারের দ্বায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা এবং অসুবিধা:

ডাক বিভাগের সকল কাজের দায়িত্ব পালন করে বিসিএস ডাক ক্যাডারের কর্মকর্তাগন। সরকারি চিঠি আদান প্রদান থেকে শুরু করে মানি অর্ডার, ব্যাক্তিগত চিঠি, ডাক বিভাগের সঞ্চয়ী হিসাব ও অন্যান্য দাপ্তরিক কাজগুলোর তত্ত্বাবধান করেন ডাক ক্যাডারের কর্মকর্তাগন।

বিসিএস ডাক ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:

  • বিসিএস ডাক ক্যাডারে কোন রাজনৈতিক চাপ না থাকায় স্বাধীন ভাবে কাজ সম্পাদন করা যায়।
  • ডাক ক্যাডারে কাজের চাপ তুলনামূলক কম।
  • এই ক্যাডারে পর্যাপ্ত ছুটি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • ডাক বিভাগের সর্বোচ্চ পদ মহাপরিচালক পর্যন্ত পদোন্নতি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • বিসিএস ডাক ক্যাডার থেকে প্রশাসন ক্যাডারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস ডাক ক্যাডারের অসুবিধা:

  • ডাক ক্যাডারের পদোন্নতি তুলনামূলক ধীর গতিতে হয়ে থাকে।
  • এই ক্যাডারের প্রশাসনিক ক্ষমতা ও সম্মান তুলনামূলক কম।

বিসিএস ডাক ক্যাডারের পদসপান / পদক্রম:

কর্মজীবনের শুরুতে ডাক বিভাগের সহকারী পোষ্ট মাস্টার হিসেবে একজন ডাক ক্যাডার চাকরিতে যোগদান করেন। তবে ডাক বিভাগের সর্বোচ্চ পদ মহাপরিচালক পর্যন্ত এই ক্যাডার থেকে নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

একজন ডাক ক্যাডার তার কর্মজীবনে সহকারী পোষ্টমাস্টার, পোষ্টমাস্টার, সিনিয়র পোষ্টমাস্টার, ডেপুটি পোষ্টমাস্টার, ডেপুটি জেনারেল, অতিরিক্ত জেনারেল সহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।

বিসিএস সমবায় ক্যাডারের দ্বায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা এবং অসুবিধা:

বিভিন্ন সমবায় সমিতির লাইসেন্স প্রদান করা এবং নিয়মিত অডিট করাই একজন বিসিএস সমবায় ক্যাডারের কাজ। এই ক্যাডার মাঠ পর্যায়ে সমবায় বাবস্থাপনা নিয়ে কাজ করেন।

বিসিএস সমবায় ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:

  • এই ক্যাডারে কোন রাজনৈতিক চাপ থাকেনা বিধায় স্বাধীন ভাবে কাজ করার সুযোগ পান।
  • সমবায় ক্যাডারে কাজের চাপ তুলনামূলক কম।
  • পদোন্নতি দ্রুত হয়।
  • চাকরির শেষ দিকে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, দপ্তর ও মন্ত্রনালয়ের সচিব হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস সমবায় ক্যাডারের অসুবিধা:

  • এই ক্যাডারে কোন আবাসন বা ট্রান্সপোর্টের সুবিধা পাওয়া যায় না।
  • প্রশাসনিক সম্মান এবং ক্ষমতা এই ক্যাডারে তুলনামূলক কম।

বিসিএস সমবায় ক্যাডারের পদক্রম / পদসোপান:

কর্মজীবনের শুরুতে একজন সমবায় ক্যাডার সহকারী নিবন্ধক হিসেবে তার ক্যারিয়ার শুরু করেন।

এক্ষেত্রে সমবায় ক্যাডারের পদসোপান / পদক্রম হয় নিম্নরূপ:

সহকারী নিবন্ধক > জেলা সমবায় অফিসার > উপ-নিবন্ধক / ডেপুটি রেজিস্ট্রার > বিভাগীয় সমবায় অফিসে যুগ্ন নিবন্ধক / জয়েন্ট রেজিষ্ট্রার > অতিরিক্ত নিবন্ধক / এডিশনার রেজিষ্ট্রার > সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক/রেজিষ্ট্রার

এছাড়াও একজন সমবায় ক্যাডার তার কর্মজীবনে সরকারি আদেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, দপ্তর, মন্ত্রনালয়ের কাজ করার এবং সচিব হওয়ারও সুযোগ পান।

বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা ও অসুবিধা:

সরকারের পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সকল কার্যক্রম পরিচালনা এবং তদারকি করাই পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের কাজ। এই ক্যাডারের পদায়ন পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সহ বিভাগীয়, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে হয়ে থাকে। একজন পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের সাধারণ জনগণের সাথে মাঠ পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:

  • এই ক্যাডারে কাজের চাপ তুলনামূলক কম।
  • রাজনৈতিক চাপ থাকে না বিধায় ইচ্ছা স্বাধীন কার্য পরিচালনা করার সুযোগ রয়েছে।
  • মাঠ পর্যায়ে থেকে সরকারি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সুযোগ রয়েছে।
  • একটি নির্দিষ্ট সময় পরে এই ক্যাডার থেকে প্রশাসন ক্যাডারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের অসুবিধা:

  • এই ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রশাসন ক্যাডারের অধীনে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর অধীনে কাজ করতে হয়।
  • প্রশাসনিক এবং সামাজিক মূল্যায়ন অন্যান্য ক্যাডারের তুলনায় অনেক কম।

বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের পদক্রম / পদসোপান:

একজন বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন বার বদলি ও পদোন্নতির মাধ্যমে সহকারী পরিচালক, উপ পরিচালক, অতিরিক্ত পরিচালক, পরিচালক ও যুগ্ন সচিব হিসেবে পদায়ন হতে পারেন।

বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ সুবিধা ও অসুবিধা:

রেলওয়ে পরিবহন, উন্নয়ন ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করাই বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডারের কাজ। এই ক্যাডার মূলত রেলওয়ের যাত্রী ও পণ্য পরিবহন, সেবার উন্নয়ন এবং প্রশাসনিক কাজটি নিশ্চিত করেন।

বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:

  • রেলওয়ে ক্যাডারে পর্যাপ্ত ছুটি পাওয়া যায়।
  • রাজনৈতিক চাপ না থাকায় স্বাধীন ভাবে কর্ম পরিচালনা করা যায়।
  • একটি নির্দিষ্ট সময় রেলওয়ে ক্যাডারে সার্ভিস দেওয়ার পর প্রশাসন ক্যাডারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • কাজের চাপ তুলনামূলক কম।

বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডারের অসুবিধা:

  • রেলওয়ে ক্যাডারে পদোন্নতি অনেক ধীর গতিতে হয়।
  • বিভিন্ন সরকারি প্রণোদনা প্রাপ্তির সুযোগ এই ক্যাডারে কম থাকে।
  • পদোন্নতি পেয়ে সর্বোচ্চ উচ্চপদস্থ স্থান মহাপরিচালক পদে পদায়নের সম্ভাবনা কম। কারন মহাপরিচালক পদে টেকনিক্যাল ক্যাডার থেকে পদায়ন করা হয়ে থাকে।
  • প্রশাসনিক সম্মান এবং ক্ষমতা এই ক্যাডারে তুলনামূলক কম।

রেলওয়ে ক্যাডারের পদক্রম / পদসোপান:

একজন রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক ক্যাডার (সাধারণ ক্যাডার) হিসেবে সহকারী ট্রাফিক সুপারিনটেনদেনন্ট হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। এছাড়াও রেলওয়ে প্রৌকশল নামক (টেকনিক্যাল ক্যাডার) হিসেবে একজন রেলওয়ে ক্যাডার সহকারী যন্ত্র প্রকৌশলী এবং সহকারী যন্ত্র নিয়ন্ত্রক হিসেবে তার কর্মজীবনের সূচনা করেন।

একজন রেলওয়ে ক্যাডার তার কর্মজীবনে বিভিন্ন সময়ে বদলি ও পদোন্নতির মাধ্যমে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ন সচিব, উপসচিব, সহকারী সচিব এবং সচিব পদে পদায়ন হতে পারেন। তবে রেলওয়ের মহাপরিচালক পদ টিতে সাধারণত টেকনিক্যাল ক্যাডার থেকে পদায়ন হতে দেখা যায়।

সর্বোপরি বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর পূর্বে একজন প্রার্থীকে অনেকগুলো দিক বিবেচনা করতে হয়। সামগ্রিক সকল দিক বিবেচনা করে কিভাবে আপনি আপনার বিসিএস ক্যডার চয়েস লিস্ট সাজাতে পারেন তা সম্পর্কে এই ব্লগে আপনাদের ধারনা দেওয়া হল। সকল দিক বিবেচনা করে নিজের ব্যাক্তিগত পছন্দ কে প্রাধান্য দিয়ে নিজের বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট টি সাজান।

ঘরে বসে বিসিএস, ব্যাংক, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ, NTRCA, ৯ম-২০তম গ্রেড সহ সকল চাকরির লাইভ এক্সামের মাধ্যমে প্রস্তুতি নিতে live MCQ অ্যাাপ টি ইন্সটল করুন

বিসিএস ক্যাডার চয়েস সংক্রান্ত সচরাচর জিজ্ঞাসা কিছু প্রশ্নের উত্তর:

প্রশ্নঃ বিসিএস এর পূর্ণরূপ কি

উত্তরঃ বিসিএস এর পূর্ণরূপ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস।

প্রশ্নঃ বিসিএস ক্যাডার কয়টি

উত্তরঃ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস বা বিসিএস ক্যাডার সর্বমোট ২৬ টি। পূর্বে বিসিএস ক্যাডারের সংখ্যা আরও বেশি থাকলেও কিছু ক্যাডার বিলুপ্ত হয়ে বর্তমানে এই সংখ্যা ২৬ টি হয়েছে।

প্রশ্নঃ সাধারণ ক্যাডার কি?

উত্তরঃ বিসিএস ক্যাডার সার্ভিসের যে পদগুলোর মধ্যে সকল বিভাগ থেকে অধ্যয়ন করা শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারেন, অর্থাৎ যে পদগুলোর জন্য কোন বিশেষ বিষয়ে পড়াশোনা দরকার পরে না সেই ক্যাডার গুলোকে সাধারণ ক্যাডার বলা হয়।

প্রশ্নঃ বিসিএস ক্যাডারের বেতন কত?

উত্তরঃ প্রত্যেক বিসিএস ক্যাডারই সরকারি বেতন স্কেল ৯ম গ্রেডে (২২০০০ – ৫৩০৬০ টাকা) থেকে তার কর্মজীবন শুরু করেন। পরে বিভিন্ন সময় পদোন্নতি এবং বদলির মাধ্যমে এই বেতন স্কেলের আরও উন্নতি হয়। বেতন ছাড়াও এই সার্ভিসে আরও নানান সুযোগ সুবিধা থাকে।

প্রশ্নঃ কোন ক্যাডার সবচেয়ে ভালো?

উত্তরঃ বিসিএস ক্যাডার সার্ভিসের কোন ক্যাডার সবচেয়ে ভালো তা যাচাই করা একটু কঠিন। কারন একেক জনের কাছে ভালোর সংজ্ঞা একেক রকম। তবে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা, ক্ষমতা ইত্যাদি দিক বিবেচনা করে পররাষ্ট্র, প্রশাসন, পুলিশ, কাস্টমস, ট্যাক্স, অডিট এই ক্যাডারগুলোকে এগিয়ে রাখা হয়।

প্রশ্নঃ বোথ ক্যাডার কি?

উত্তরঃ বোথ ক্যাডারের অর্থ হচ্ছে উভয় ক্যাডার। যদি কোন প্রার্থী একই সাথে জেনারেল এবং টেকনিক্যাল / প্রফেশনাল উভয় পদের ক্যাডার গুলো চয়েস করে বিসিএস এর ফরম পূরণ করেন তাহলে সেটিকে বোথ ক্যাডার বা উভয় ক্যাডার চয়েস বলা হয়।

প্রশ্নঃ কোন কোন সাবজেক্টে প্রশাসন ক্যাডার আছে?

উত্তরঃ যেহেতু বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার একটি জেনারেল ক্যাডার। তাই বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনের যোগ্য যে কেউই প্রশাসন ক্যাডারে আবেদন করতে পারবেন। প্রশাসন ক্যাডারের জন্য কোন বিশেষ বিষয়ে পড়াশোনা করার প্রয়োজন নেই।

প্রশ্নঃ প্রফেশনাল ক্যাডার কি?

উত্তরঃ মূলত পেশাদার ক্যাডারদেরই প্রফেশনাল ক্যাডার বলা হয়। আপনি যে বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রী অর্জন করেছেন বিসিএস ক্যাডার সার্ভিসে যদি আপনি নিজের বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত কোন ক্যাডার পদের জন্য আবেদন করেন তাহলে সেটিকে প্রফেশনাল ক্যাডার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 

প্রফেশনাল ক্যাডারের সাথে টেকনিক্যাল ক্যাডারও সম্পর্কিত রয়েছে। স্বাস্থ্য ক্যাডার, শিক্ষা ক্যাডার, প্রকৌশলী এসব ক্যাডারই প্রফেশনাল ক্যাডার বা টেকনিক্যাল ক্যাডারের অন্তর্ভুক্ত। 

  • ২৭তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF | 27th BCS Question Solution PDF

২৭তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF | 27th BCS Question Solution PDF

0 Comments

প্রিয় চাকরির প্রার্থীগণ ২৭তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF সংক্রান্ত ব্লগে আপনাদের স্বাগতম। বিসিএস পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিগত সালের প্রশ্নগুলো সমাধান করা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ। বিসিএস প্রস্তুতির ক্ষেত্রে আমরা প্রথমেই পরীক্ষার্থীদের বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধানের পরামর্শ দিয়ে[...]

২৮তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF | 28th BCS Question Solution PDF

0 Comments

প্রিয় চাকরি প্রত্যাশীগণ ২৮তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF সংক্রান্ত ব্লগে আপনাদের স্বাগতম। বিসিএসের পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতির শুরুতেই বিগত সালের প্রশ্নগুলো অনুশীলন করা গুরুত্বপূর্ণ। কেননা বিগত সালের প্রশ্নগুলো চর্চা করলে বিসিএসের মূল প্রশ্নের ধরণ সম্পর্কে ধারণা[...]

২৯তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF | 29th BCS Question Solution PDF

0 Comments

প্রিয় চাকরি প্রত্যাশীগণ ২৯তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF সংক্রান্ত ব্লগে আপনাদের স্বাগতম। বিসিএস প্রত্যাশীদের আমরা তাদের প্রস্তুতির শুরুতেই বিগত সালের প্রশ্নগুলো সমাধানের পরামর্শ দিয়ে থাকি। কেননা বিগত সালের প্রশ্নগুলো অনুশীলন করলে বিসিএস মূল প্রশ্নের[...]

৩০তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF | 30th BCS Question Solution PDF

0 Comments

প্রিয় চাকরি প্রত্যাশীগণ ৩০তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF সংক্রান্ত ব্লগে আপনাদের স্বাগতম। আপনারা জানেন যে, বিসিএস প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বিগত সালের প্রশ্নগুলো অনুশীলন করার কোন বিকল্প নেই। বিগত সালের প্রশ্নগুলো চর্চায় রাখলে বিসিএসের মূল প্রশ্ন[...]

৩১তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF | 31th BCS Question Solution PDF

0 Comments

প্রিয় চাকরি প্রত্যাশীগণ ৩১তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF সংক্রান্ত ব্লগে আপনাদের স্বাগতম। বিসিএস পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিগত সালের আসা প্রশ্নগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিগত সালের প্রশ্নগুলো অনুশীলন করলে বিসিএসের মূল প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণা এবং নিজের প্রস্তুতিও[...]

৩২তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF | 32th BCS Question Solution PDF

0 Comments

প্রিয় চাকরি প্রার্থীগণ ৩২তম বিসিএস প্রশ্ন সমাধান PDF সংক্রান্ত ব্লগে আপনাদের স্বাগতম। বিসিএস এর প্রস্তুতি যারা নিচ্ছেন তাদের আমরা শুরুতেই বিসিএসের বিগত সালের প্রশ্নগুলো অনুশীলন করার পরামর্শ দিয়ে থাকি। কেননা বিগত সালের প্রশ্নগুলো চর্চায় রাখলে[...]